মশাগ্রামের স্কুলে সরস্বতী পুজোয় বাংলায় উচ্চারিত হল মন্ত্র

নিজস্ব গ্রাফিক্স চিত্র

সংস্কৃত মন্ত্রের পরিবর্তে বাংলায় মন্ত্র উচ্চারণ করে সরস্বতী পুজো করা হল পূর্ব বর্ধমানের মশাগ্রামের সারদা মিশন স্কুলে। বাংলায় মন্ত্র পড়ে অঞ্জলি দিল পড়ুয়ারা। এই প্রথম মন্ত্রের অর্থ বুঝে পুজোয় অংশগ্রহণ করতে পেরে খুশি স্কুলের পড়ুয়া থেকে শুরু করে শিক্ষকরা, অভিভাবকরা। বাংলা মন্ত্রে পুজো চাক্ষুস করতে পূর্ব বর্ধমানের স্কুলে গিয়েছিলেন ভাষাবিদ পবিত্র সরকার, কবি অংশুমান কর সহ আরও অনেকে।
জানা গিয়েছে, কবি মারুত কাশ্যপ কবিতার ছন্দে বিদ্যাদেবীর আরাধনার মন্ত্র বাংলায় অনুবাদ করেছেন। বাংলা মন্ত্রে সরস্বতী পুজো দেখার জন্য সকলকে আমন্ত্রণ জানান তিনি। সোমবারই ‘সম্পূর্ণ বাংলায় শ্রী শ্রী সরস্বতী পূজা পদ্ধতি’ নামের বইটির উদ্বোধন করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কবি জানান, অনেক দ্বিধা নিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু যত দিন এগিয়েছে এই কাজ করতে পেরে তৃপ্তি অনুভব করেছেন তিনি।
মশাগ্রামের এই স্কুলের সরস্বতী পুজোর অভিনবত্বের প্রশসাং করেছেন ভাষাবিদ পবিত্র সরকার। তাঁর কথায়, ‘যা আমরা বুঝি তা আমাদের অনুভব করতে সুবিধা হয়। আমি অতশত না মানলেও এটা একটা বড় ঘটনা। এই কাজে হাত দেওয়ার জন্য মারুতকে অভিনন্দন জানাই। সারদা মিশন কর্তৃপক্ষকেও ধন্যবাদ এই রকম একটা অনুভব তৈরির জন্য। অপরদিকে সারদা মিশনের অধ্যক্ষ চন্দন সাঁধুখা জানান, নিজের ভাষায় সরস্বতী মাকে ডাকার আনন্দই আলাদা।
উল্লেখ্য, দেবভাষা হলেও বর্তমান সময়ে সংস্কৃত ভাষার ব্যবহার সাধারণত নেই বললেই চলে। হিন্দু সমাজে সমস্ত দেবদেবীর পুজোর মন্ত্রই সংস্কৃত ভাষাতেই লেখা। তাই পুজোর সময় বেশিরভাগ মানুষই মন্ত্রের উচ্চারণ বুঝতে পারেন না। পাশাপাশি অঞ্জলি দেওয়ার সময়ও মন্ত্রের মর্মার্থ কেউ বোঝেন না। এই কারণে এবার পড়ুয়া সহ সকলের সুবিধার্থে বাংলায় মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে সরস্বতী পুজো করা হল। সারদা মিশন স্কুলের এক পড়ুয়া এদিন বলে, ‘এতদিন মানে না বুঝেই অঞ্জলি দিতাম। আজ প্রথমবার মানে বুঝি অঞ্জলি দিলাম।’