২৩ তারিখে মমতা সরকারের মৃত্যুঘন্টা বাজবে : অমিত শাহ

এক সময় বামেদের সরকার ফেলতে ব্রিগেডে যে মৃত্যুঘণ্টা বাজিয়েছিলেন তৎকালীন মমতা বন্দ্যোপাধায়, এবার সেই মমতার সরকারকে ফেলতে ‘মৃত্যুঘণ্টা’র প্রয়ােগ করলেন রাজ্যে বিরােধী শক্তি হিসেবে উঠে আসা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ।

Written by SNS Bidhannagar | May 14, 2019 2:24 pm

অমিত শাহ (Photo: IANS)

এক সময় বামেদের সরকার ফেলতে ব্রিগেডে যে মৃত্যুঘণ্টা বাজিয়েছিলেন তৎকালীন মমতা বন্দ্যোপাধায়, এবার সেই মমতার সরকারকে ফেলতে ‘মৃত্যুঘণ্টা’র প্রয়ােগ করলেন রাজ্যে বিরােধী শক্তি হিসেবে উঠে আসা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ।

সােমবার রাজারহাটের বটতলায় দলীয় প্রার্থী মৃণালকান্তি দেবনাথের সমর্থনে প্রচারে এসে জনসভা থেকে অমিত শাহ ঘােষরা করেন ২৩ তারিখ ভােটের ফল বেরােনাের পর মমতাদি আপনার সরকারের মৃত্যুঘণ্টা বাজবে।

প্রসঙ্গত, এদিন রাজারহাটের সভা থেকে অনুপ্রবেশ সহ সিন্ডিকেট এবং পাকিস্তান ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একহাত নেন অমিত শাহ। শুধু তাই নয়, ক্যানিংয়ের পর রাজারহাট থেকেও তার বারুইপুরে সভা বাতিল এবং ভাইপাে ইস্যুতে চড়া সুর তােলেন বিজেপি’র সর্বভারতীয় সভাপতি।

এদিন প্রায় ৩০ মিনিটের বক্তৃতায় বেশ কয়েকবার ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি তােলেন অমিত শাহ। এমনকি জয় শ্রীরাম ধ্বনি শুনে চন্দ্রকোনায় মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি থেকে নেমে পড়া প্রসঙ্গও টেনে আনেন অমিত শাহ। প্রসঙ্গত, এদিন বারাসতের প্রার্থী ছাড়াও দমদমের প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্য উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতা মুকুল রায়, রাজ্য নেতা স্বপন মজুমদার, জেলার নেতা প্রদীপ ব্যানার্জি সহ রাজ্য ও জেলার একাধিক বিজেপি নেতা।

এদিন বক্তব্যের শুরুতে অমিত শাহ মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি আমাকে আটকাতে পারেন কিন্তু বাংলার মানুষ ঠিক করে নিয়েছে এবার তারা বিজেপির সঙ্গেই থাকবে। তাঁর কথায়, গােটা দেশে একটাই নাড়া- মােদি মােদি। আর এটা কাউকে প্রশংসা করার জন্য হচ্ছে না। এটা ১২৫ কোটি ভারতবাসী এবার নরেন্দ্র মােদিকে সরকারে দেখতে চায় বলে হচ্ছে।

মােদি সরকার মানুষের জন্য কাজ করে আর বিরােধীরা সবাই পরিবারের জন্য। কেউ তার ছেলে বা মেয়ের জন্য কাজ করে তাে কেউ ভাইপাের জন্য। মােদি সরকার দেশের সাত কোটি মানুষকে গ্যাস দিয়েছে, দু’কোটি মানুষকে বাড়ি দিয়েছে। এরপরে সভায় উপস্থিত নগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, এনডিএ সরকার বাংলার জন্য ১ লক্ষ ৩২ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে পাঁচ বছরে। আর যদি মােদি সরকার ৪ লক্ষ ২৪ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা দিয়েছে।

এরপরেই অনুপ্রবেশ ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীকে বিধতে শুরু করেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, ২০০৩ সালে এই অনুপ্রবেশকারী নিয়ে সংসদে সােচ্চার হতেন মুখ্যমন্ত্রী। আর এখন এদেরই তােল্লাই দিচ্ছেন মমতাদি। কেন না এখন এই অনুপ্রবেশকারীরা মুখ্যমন্ত্রীর ভােটব্যাঙ্ক। মােদি সরকার অবৈধ প্রবেশকারীকে দেশ ছাড়া করবে। প্রথমে বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু, শিখ সকলকে নাগরিকত্ব আইনের মাধ্যমে নাগরিক করে তারপর এনআরসি’র মাধ্যমে অবৈধ প্রবেশকারীদের দেশ থেকে বের করে দেওয়া হবে।

এদিন ইসলামপুর কাণ্ড নিয়ে মুখ খুলে অমিত শাহ জানান, ২৩ তারিখের পর রাজেশ ও তাপসের হত্যাকারীকে জেলে ঢোকানো হবে। এদিন পুলওয়ামা ইস্যুতে পাকিস্তানকে জবাব দেওয়া নিয়ে বিজেপি সভাপতি দাবি করেন, ওদিক থেকে গুলি এলে এদিক থেকে গােলা যাবে। ইটের জবাব পাটকেল দিয়ে দেওয়া হবে। আর তা মােদি সরকারই করতে পারে। পুলওয়ামা কাণ্ড যার জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ। কিন্তু মােদিজির এই পদক্ষেপে দুজনের খুব কষ্ট হয়েছিল। এক তাে পাকিস্তান ও অন্যজন দিদি।

তাঁর কথায়, স্বাধীনতার সময় যে বাংলার জিডিপি ছিল ২০, তা আজ কমতে কমতে ৩-এ এসে দাঁড়িয়েছে। এরজন্য মমতা সরকার দায়ী। বাংলায় কোনও কারখানা নেই। বাংলা জুড়ে এখন বােমাগুলির কারখানায় ছেয়ে গেছে অনুপ্রবেশকারীদের জন্য। যে বাংলায় আগে রবীন্দ্রসঙ্গীত হত, চৈতন্য মহাপ্রভুর কীর্তন হত স্বামী বিবেকানন্দের শ্লোক শােনা যেত, এখন সেখানে বােমার আওয়াজ শােনা যায়। সােনার বাংলাকে কাঙাল বাংলা করেছে কংগ্রেস, কমিউনিস্ট ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নরেন্দ্র মােদিকে আরও একবার প্রধানমন্ত্রী করলে এই কাঙাল বাংলাকে সােনার বাংলায় পরিণত করার জন্য কাজ করা হবে।