মোদির কাছে ২৫ হাজার কোটি টাকার অনুদান চাইলেন মমতা

লকডাউন পরিস্থিতিতে রাজ্যের আর্থিক অবস্থার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ২৫ হাজার কোটি আর্থিক অনুদান চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Written by SNS Kolkata | April 2, 2020 11:11 am

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (File Photo: IANS)

লকডাউন পরিস্থিতিতে রাজ্যের আর্থিক অবস্থার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ২৫ হাজার কোটি আর্থিক অনুদান চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ বৃহস্পতিবার বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিওকনফারেন্সিং বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে বক্তব্য রাখতে বলা হয়েছে দেশের দশটি রাজ্যকে।

আজকের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের বক্তব্য রাখার কোনও সুযোগ নেই। আগের বৈঠকে তিন মিনিট বক্তব্য রাখার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল রাজ্যকে। তাই এই বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবর্তে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা। তাই প্রধানমন্ত্রীর ভিডিওকনফারেন্স বৈঠকের আগের দিন অর্থাৎ বুধবারই মোদির কাছে রাজ্যের জন্য আর্থিক সাহায্য চেয়ে চিঠি দিলেন মমতা।

চিঠির শুরুতে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে লিখেছেন, সব ধরনের ব্যবসা বন্ধ থাকায় রাজ্যের কোনও আয় হচ্ছে না। রাজ্যেরই আর্থিক অবস্থা খারাপ হচ্ছে। করোনা অতিমারি হওয়ার কারণে রাজ্যে প্রায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তাই যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মেনে রাজ্যকে ২৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হোক।

মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন রাজস্ব আদায় বন্ধ হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও আমরা এমাসে সরকারি কর্মচারীদের বেতন, মজুরি, অবসরপ্রাপ্তদের পেনশন দিয়েছি। যদিও দেশের বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য রাজ্য তাদের কর্মচারীদের পুরো বেতন বা পেনশন দিতে পারেনি। বিগত সরকারের ফেলে যাওয়া ঋণের বোঝাও শোধ করার চেষ্টা করছি। কিন্তু ভবিষ্যতে কী হবে জানি না। এর পাশাপাশি আমরা কন্যাসন্তান, পড়ুয়া, কৃষক, অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক, প্রান্তিক শ্রেণি, সংখ্যালঘু জাতি-উপজাতিদের প্রতি দায়বদ্ধ। এই কঠিন সময়েও আমার রাজ্যের ন’কোটি মানুষকে বিনামুল্যে রেশন দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বুধবার নবান্নে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে বৈঠকের পরও মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আমরা তো তবু মাস পয়লা কর্মচারীদের প্রাপ্য মিটিয়ে দিতে পেরেছি। অনেক রাজ্যে বেতনই হয়নি। কোনও কোনও রাজ্যে পঞ্চাশ শতাংশ, কোথাও ষাট শতাংশ বাকি পড়েছে। সে জায়গায় আমাদের মতো গরিব রাজ্য অনেক কষ্ট করে প্রাপ্য মিটিয়ে দিতে পারল।

মুখ্যমন্ত্রী তাঁর চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে মনে করিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা। লিখেছেন কোভিড ১৯’এর অতিমারি এবং লকডাউন চালু হওয়ার আগে রাজ্যের পাওনা থেকে ১১ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এছাড়া বিভিন্ন খাতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রাজ্যের পাওনা রয়েছে ৩৬ হাজার কোটি টাকা।

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, বর্তমান পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকার যদি ঋণ মুকুবের প্রস্তাব মেনেও নেয়, তা হলেও বর্তমান পরিস্থিতির মোকাবিলা যথাযথভাবে করা যাবে না।

রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, কোভিড ১৯ অতিমারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এই অচলাবস্থা কাটাতে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মেনে পশ্চিমবঙ্গকে ২৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হোক। সেই সঙ্গে রাজ্যের পাওনাগুলিও যাতে কেন্দ্র মিটিয়ে দেয়, সেজন্য প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে আর্জি জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এর আগেও এফআরভিএম নীতির বাইরে গিয়ে রাজ্যের জিএসডিপি’র তিন শতাংশের জায়গায় পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ চেয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছিল রাজ্যের তরফে। করোনা অতিমারির পরিস্থিতিতে রাজ্যের দাবি ফের তুলে ধরলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।