‘রিস্ক কান্ট্রি’ ইংল্যান্ডের উড়ান বন্ধের আর্জি জানালেন মমতা

তিনদিনের সফর শেষ করে বৃহস্পতিবার সাগর থেকে কলকাতার ফেরার পথেই হেলিপ্যাডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ইংল্যান্ড থেকে আসা বিমানেই ওমিক্রন আক্রান্তের হদিশ মিলছে বেশি।

এই বিষয়ে অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক কী করে আমরা দেখছি। আমাদের পর্যালোচনা চলছে। এদিন সাগর থেকে ফিরেই মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

সেই বৈঠকের পরেই স্বরাষ্ট্রসচিব বি পি গোপালিকা অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের কাছে চিঠি দিয়ে আবেদন করেন, আগামী ৩ জানুয়ারি থেকে ইংল্যান্ড ও কলকাতার মধ্যে যাত্রীউড়ান বন্ধ রাখা হোক পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত।


ইংল্যান্ডকে ‘রিস্ক কান্ট্রি’র তকমা দিয়ে উড়ানের নিষেধাজ্ঞা বহাল করতে বলা হয়েছে। মধ্যে একই সঙ্গে ৩ জানুয়ারি থেকে অন্যান্য আন্তর্জাতিক উড়ানেও যাঁরা কলকাতা বিমানবন্দরে নামছেন তাদের টেস্ট বাধ্যতামূলক করার দাবি জানানো হয়েছে নবান্ন থেকে।

এই টেস্ট যাত্রীদের নিজেদের খরচেই করাতে হবে। আন্তর্জাতিক উড়ানে কলকাতা বিমানবন্দরে নাম যাত্রীদের সংক্রমণের সন্দেহজনক ১০ শতাংশের আরটিপিসিআর টেস্ট করানোর সুপারিশ করা হয়েছে।

বাকি ৯০ শতাংশের র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করাতে হবে। এই র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে যাঁদের পজেটিভ আসবে, তাদের আরটিপিসিআর টেস্ট করাতে হবে।

অযথা যাতে সময় নষ্ট না হয়, বিমান কলকাতা বন্দরে অবতরণের আগেই প্রি-বুকিং করে রাখা যাবে। এছাড়া কলকাতা বিমানবন্দরের লাউঞ্জে যাত্রীদের ফাঁকা ফাঁকা করে বসার ব্যবস্থা রাখার জন্যও আবেদন করা হয়েছে।

এদিন গঙ্গাসাগরের হেলিপ্যাডেই মুখ্যমন্ত্রী অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেছিলেন উড়ানে আসা যাত্রীদের টেস্ট করাতে চাইলে অনেকেই বিরক্ত বোধ করছেন।

র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের রিপোর্ট তাড়াতাড়ি পাওয়া গেলেও আরটিপিসিআর টেস্টের রিপোর্ট আসতে একটু সময় লাগছে। ওমিক্রন সংক্রমণের গতি রোধ করতে এটুকু সময় তো দিতেই হবে।

বুধবার সাগরে প্রশাসনিক বৈঠকে ওমিক্রনের সংক্রণের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই আন্দাজ করছিলেন রাজ্যজুড়ে বোধহয় ফের কড়াকড়ি চালু হতে পারে।

কিন্তু বৃহস্পতিবার সাগর থেকে ফেরার পথে হেলিপ্যাডে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য জুড়ে কোভিডের বিধিনিষেধ চালু করার জন্য কোনও পরিকল্পনা নেই রাজ্য সরকারের।

এমনিতেই কোভিডের জন্য দু’বছরে রাজ্যে ব্যবসা বাণিজ্যের অনেক ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। লাভের অঙ্ক শূন্যতে ঠেকেছে। আমরা আর এই পরিস্থিতি চাই না। যদি বিধিনিষেধ আরোপ করতেই হয় তাহলে ছোট ছোট পকেটে (কনটেনমেন্ট জোনে) করা যেতে পারে।

করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের বাড়বাড়ন্তে গঙ্গাসাগর মেলার ভবিষ্যৎ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি বলেন, কুম্ভ নিয়ে তো কথা ওঠে না। গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে এত কৌতূহল কেন?

উত্তরপ্রদেশ, বিহার থেকে বহু মানুষ আসে মেলায়। মেলা আমরা বন্ধ করতে পারি না পয়লা জানুয়ারি উৎসবের দিনও কোভিড বিধিনিষেধ আরোপিত হবে না, তারও আভাস মেলে মুখ্যমন্ত্রীর কথায়। তবে সবাইকে মাস্ক পরা এবং স্যানিটাইজেশনের ওপর গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে।