• facebook
  • twitter
Saturday, 13 December, 2025

মালদহে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি, শোকপ্রকাশ মমতার

দোকানে ঢুকে তৃণমূল নেতাকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি। মৃত্যু হল তৃণমূলের মালদহ জেলা সহ-সভাপতি তথা ইংরেজবাজার পুরসভার কাউন্সিলর দুলালচন্দ্র সরকার ওরফে বাবলার

দোকানে ঢুকে তৃণমূল নেতাকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি। মৃত্যু হল তৃণমূলের মালদহ জেলা সহ-সভাপতি তথা ইংরেজবাজার পুরসভার কাউন্সিলর দুলালচন্দ্র সরকার ওরফে বাবলার। এই ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দ্রুত দোষীদের শাস্তির পাশাপাশি দলের শীর্ষ নেতাদের মালদহ যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার সকালে ইংরেজবাজার শহরের ঝলঝলিয়ার কাছে নিজের প্লাইইড কারখানার কাছে দাঁড়িয়েছিলেন দুলাল। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, সেই সময় বাইকে চেপে আসা তিন জন দুষ্কৃতী তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। একটি গুলি লাগে তাঁর মাথার কাছে। ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়েন তৃণমূল নেতা। সঙ্কটজনক অবস্থায় তাঁকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়। পরে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।

Advertisement

ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই এক্স হ্যান্ডেলে শোকপ্রকাশ করেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, আমার ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা বাবলা সরকার আজ খুন হয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের শুরু থেকেই তিনি (এবং তাঁর স্ত্রী চৈতালি সরকার) দলের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন এবং বাবলা কাউন্সিলরও নির্বাচিত হয়েছিলেন। ঘটনাটি জানার পর আমি মর্মাহত ও মর্মাহত। অবিলম্বে দোষীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে হবে। আমি এতটাই মর্মাহত এবং দুঃখিত যে আমি কীভাবে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা জানাব, তা আমি জানি না। ঈশ্বর চৈতালীকে বেঁচে থাকার এবং যুদ্ধে লড়াই করার শক্তি দিন।

Advertisement

রাজ্যের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং সাবিনা ইয়াসমিনকে মালদহে যাওয়ার নির্দেশ দেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশ জানিয়েছে, এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুষ্কৃতীরা সবাই মুখে কাপড় বেঁধে এসেছিল। রাজনৈতিক কারণে এই হামলা নাকি এই খুনের নেপথ্যে রয়েছে ব্যবসায়িক গন্ডগোল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছন জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা। কী কারণে কাউন্সিলরের উপর হামলা হল, তা খতিয়ে দেখছেন তাঁরা।

সিসি ক্যামেরার একটি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, প্লাইউডের কারখানার বাইরে থাকা কয়েক জন দুষ্কৃতী আচমকা তাড়া করছে দুলালচন্দ্র সরকারকে। দুলাল দৌড়ে কারখানায় ঢুকতেই পর পর গুলি চালিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে তারা।

বৃহস্পতিবার নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকের শুরুতেই দলীয় কর্মীকে খুনের প্রসঙ্গ তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, আমার পরিচিত সহযোদ্ধা, দীর্ঘ দিন আমার সঙ্গে কাজ করছে, বাবলা সরকার আজ খুন হয়েছেন। পুলিশকেও একহাত নেন মমতা। তাঁর কথায়, অবশ্যই পুলিশের গাফিলতিতে খুন হয়েছে। ওর উপর আগেও আক্রমণ করা হয়েছিল। আগে নিরাপত্তা পেত। পরে সেটা তুলে নেওয়া হয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে ওঁকে চিনতাম। আগেও তাঁকে অনেকবার অ্যাটাক করা হয়েছিল। দুর্ভাগ্য আমাদের। বর্ডার আর কালিয়াচক নিয়ে ব্যস্ত থাকলে জেলার উন্নতি হবে না। ওখানে নিরাপত্তা দিন।

প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা কাউন্সিলর খুনের ঘটনায় জেলার পুলিশ সুপারের (এসপি) ভূমিকার সমালোচনা করে বলেন, এসপির একটা চোখ থাকবে কাজে, অন্য চোখ থাকবে অন্য কাজে, এমন এসপি আমাদের চাই না। গোটা ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরেও। রাজনৈতিক রঙ না দেখে ব্যবস্থা নিক পুলিশ, নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement