অনশন ভাঙার আগেই অসুস্থ মমতাবালা ঠাকুর, হাসপাতালে দেখতে গেলেন সুজন

মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুরের অনশন প্রত্যাহারের আগেই ঘটে গেল অপ্রত্যাশিত ঘটনা। টানা ১৩ দিন ধরে চলা অনশনে রবিবার রাতেই ইতি টানার কথা ঘোষণা করেছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঠানো চিঠিকে সম্মান জানিয়ে অনশন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঠিক হয়েছিল, সোমবার দুপুর ১২টায় মঞ্চেই শেষ হবে আমরণ অনশন।
কিন্তু তার আগেই আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন মমতাবালা ঠাকুর। সকালেই দুর্বলতায় দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিলেন না তিনি। মঞ্চেই তড়িঘড়ি স্যালাইন দেওয়ার ব্যবস্থা করেন চিকিৎসকেরা। পরে অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাঁকে বনগাঁ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন রাজ্যসভার সাংসদ। হাসপাতালের শয্যা থেকে মমতাবালা জানান, ‘এতদিন কিছুই না খেয়ে থাকার জন্যই সমস্যা হচ্ছে। খুব দুর্বল লাগছে।’
এদিন অনশনমঞ্চে উপস্থিত হন সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তীও। মতুয়াদের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এভাবে অনশন করলে নিজেদের শরীরের ক্ষতি হবে। দাবি মানানোর লড়াই চলবে, কিন্তু তার জন্য নিজেদের অসুস্থ করে ফেলা ঠিক নয়।’ পরে হাসপাতালে মমতাবালাকে দেখতেও যান তিনি। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে দৈনিক স্টেটসম্যান কে তিনি জানান, ‘শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল বলেই আমার মনে হল। তিনি তখন ঘুমোচ্ছিলেন, তাই আর বিরক্ত করিনি।’
এসআইআর প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে মতুয়া সম্প্রদায়ের ক্ষোভ যে গভীর, তা অনশন মঞ্চেই স্পষ্ট হয়েছে। তাঁদের আশঙ্কা, এই প্রক্রিয়ার ফলে বহু মতুয়ার নাম বাদ পড়ে যেতে পারে। সেই কারণেই মমতাবালাপন্থী গোষ্ঠী বড়মার ঘরের সামনে টানা অনশনে বসেছিলেন। অনশনকারীদের মধ্যে ১৫ জন আগেই বিভিন্ন কারণে সরে দাঁড়ালেও মমতাবালা-সহ ১০ জন শেষ পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যান। রবিবার রাতে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা নিয়ে ঠাকুরবাড়িতে পৌঁছনোর পরই অনশন প্রত্যাহারের ঘোষণা করেন সংঘাধিপতি।
মতুয়াদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাজনীতির চাপানউতোর আরও তীব্র হচ্ছে। তৃণমূল নেতৃত্বর বার্তা, সিপিআইএমের সরাসরি উপস্থিতি, আর মতুয়াদের দৃঢ় অবস্থান—সব মিলিয়ে এসআইআর বিতর্ক নতুন উত্তাপ ছড়িয়েছে। মমতাবালা ঠাকুরের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও আন্দোলনের ভবিষ্যৎ পথ কোন দিকে মোড় নেয়, সেদিকেই এখন নজর রাজনৈতিক মহলের।