শুরু হয়ে গেল মুখ্যমন্ত্রীর পুজো উদ্বোধন

তুলি হাতে দুর্গা প্রতিমার চক্ষুদান করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। (Photo: IANS)

প্রতিবছর কোন দুর্গাপুজোর উদ্বোধন প্রথমে করবেন, তা নিয়ে একটা হেভিওয়েট নেতা মন্ত্রীদের মধ্যে একটা প্রচ্ছন্ন প্রতিযােগিতা চলে। এবার সেই দৌড়ে বাজিমাত পুর ও নগরােন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের চেতলা অগ্রণী ক্লাবের পুজো। সােমবার চেতলা অগ্রণী ক্লাবের পুজো দিয়েই উদ্বোধনের অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

এদিন সেখানে গিয়ে মুখে মাস্ক দিয়ে তুলি হাতে দুর্গা প্রতিমার চক্ষুদান করলেন মমতা। তবে বাকি পুজোগুলি যে ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করা হবে, সেকথা এদিন আগেই নবান্নে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। 

মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে কালকাতার একাধিক পুজোর উদ্বোধন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এবার আর সেই দৃশ্য দেখা যাবে না। নিউ নর্মালে পুজোর উদ্বোধন হবে ভার্চুয়াল। নবান্ন থেকেই সেই উদ্বোধন সারা হবে। এজন্য ১৬, ১৭, ১৮ অক্টোবর– এই তিনদিন ধার্য করা হয়েছে।


১৬ তারিখ উত্তর কলকাতা, ১৭ তারিখ দক্ষিণ কলকাতা এবং ১৮ তারিখ বেহালার পুজোগুলির ভার্চুয়াল উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। 

সােমবার সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা বলেন, পুজো মণ্ডপে মহিলারা প্রদীপ জ্বালাবেন, আর আমি নবান্নে প্রদীপ জ্বালাব। ভার্চুয়ালি আমিও এখানে বসে দেখতে পাব। আর ওরা মণ্ডপে উদ্বোধন দেখবে। স্থানীয়ভাবে পুজো উদ্বোধনের ওপরেই জোর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, কোনও ভিআইপি ডাকার দরকার নেই। 

এদিন দলীয় মুখপত্র ‘জাগাে বাংলা’র শারদ সংখ্যাও প্রকাশ করলেন মমতা। সেখানে ক্ষোভ উগরে দিলেন বিজেপির বিরদ্ধে। বললেন, একদিকে কলেরা, ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া আর অন্যদিকে বিজেপি। এতবড় অতিমারী আমি আর দেখিনি। 

দলীয় মুখপত্রের কার্যালয়ে এসে এদিন বাক্যবাণে বিজেপিকে বিধলেন মমতা। তাঁর মতে, বিজেপি চাইছে যেন কোনও উপায়ে বাংলায় ক্ষমতা দখল করতে। কিন্তু তা এত সহজে যে হবে না, তা নিয়ে বিজেপিকে রীতিমতাে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন মমতা। স্মরণ করিয়ে দিলেন, বাংলায় রাজনীতি করতে হলে বাংলার সংস্কৃতি বুঝতে হবে, ভদ্রতা, সৌজন্য শিখতে হবে। 

একই সঙ্গে পুজোর সময় সবাইকে সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দিলেন। রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে, সেকথা ধরা পড়ে মুখ্যমন্ত্রীর কথায়। তিনি বললেন, এখন প্লেন চলছে, স্পেশাল ট্রেন চলছে, ভিনরাজ্য থেকে লরি আসছে। সব মিলিয়ে করােনার প্রকোপ বাড়ছে। কেউ বিশ্বাস করুন বা না করুন, গােষ্ঠী সংক্রমণ হচ্ছে। একটা পরিবারে একজনের হলে আরও চারজনের হয়ে যাচ্ছে। জ্বর থাকলে অনেকে চেপে যাচ্ছেন। তাতে সমস্যা হচ্ছে। এই গাফিলতির জন্যই তমােনাশ ঘােষ, গুরুপদ মেটা কোভিডে প্রাণ হারিয়েছেন বলে মনে করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি মনে করেন, সঠিক সময়ে চিকিৎসা করলে কোভিড ভালাে হয়ে যাবে। 

এদিন জাগাে বাংলা’র শারদ সংখ্যার প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসে তিনি প্রার্থনা করেন, মা দুর্গা যেন সবাইকে ভালাে রাখেন, করােনাকে দুর করেন।