আমার কাছে  একটা পেন ড্রাইভ আছে,সামনে আনলে বিজেপি বিপদে পড়বে: মমতা

এবার কেন্দ্রে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে তৃণমূল নির্ণায়ক শক্তি হয়ে উঠবে বলেও মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন।

Written by SNS Bankura | May 10, 2019 8:57 am

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Photo: IANS)

আমার কাছে  একটা পেন ড্রাইভ আছে। সেটি সামনে আনলে বিজেপি বিপদে পড়বে। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ায় প্রচারে  এসে প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপিকে এভাবেই আক্রমণ শানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিন জেলাশহর ও শহর সংলগ্ন দুই প্রান্তে দেশের  দুই প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নরেন্দ্র মােদি ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক  উত্তাপ ছিল চরমে।এদিন সকালে প্রথম সভাটি হয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির।বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকারের সমর্থনে বাঁকুড়া ২নং ব্লকের কমলাডাঙা ময়দানে জনসভা করেন তিনি। ওই সভায় মানুষের ভিড় হয় চোখে পড়ার মতাে। এদিন সভার শুরু থেকে সেই শেষ পর্যন্ত তিনি রাজ্যের তৃণমূল সরকার ও দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একের পর এক তােপ দাগেন। তিনি স্পষ্ট বাংলায় জানান , এখানে কয়লা খাদান থেকে তৃণমূল টাকা লুঠ করছে।অথচ গরিব শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরি পাচ্ছেন না।মমতার জমানায় পশ্চিমবঙ্গে সিন্ডিকেটের সরকার চলছে বলেও তিনি দাবি করেন।সম্প্রতি এক জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রীকে চড় মারার হুমকি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিন সেই প্রসঙ্গ টেনে মমতাকে তীব্র কটাক্ষ করে তিনি বলেন , “আমাকে চড় মারলে অসুবিধা নেই। আমার গালি খাওয়ার অভ্যাসও আছে। আমাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মানতে নারাজ অথচ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে তিনি মানতে পারেন। এটা দেশের সংবিধানকে কি অমান্য করা নয়?”

এদিন গত সপ্তাহে ঘটে যাওয়া ফণীর তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত এই রাজ্যের পাশে দাঁড়াতে চাইলেও কেন্দ্রীয় সরকারের সেই সদিচ্ছাকে আমলই দেননি মমতা, বলে অভিযােগ করেন।তিনি স্পষ্ট জানান, রাজ্যের বেহাল অবস্থার খোঁজখবর নেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে তিনি একাধিকবার ফোন করেন।অথচ সেই ফোন তিনি ধরেননি।এমনকী ঝাড়গ্রাম ও হলদিয়ায় নির্বাচনী প্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রী পশ্চিম মেদিনীপুরের কলাইকুণ্ডায় ফণীর রিভিউ মিটিং করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী সেই মিটিং করতে রাজি হননি বলেও এদিন তিনি অভিযােগ করেন।বিজেপি ফের ক্ষমতায় এলে রাজ্যের প্রত্যেক গরিব ঘর পাবে , বেকারদের কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করা হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন। মােদি বলেন ,কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানাে বিভিন্ন প্রকল্পের টাকায় এ রাজ্যে উন্নয়ন হচ্ছে না।সেই টাকা সরাসরি তৃণমূল নেতাদের পকেটে ঢুকছে।

প্রধানমন্ত্রীর সভা শেষ হয়ে যাওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রীও একটি পাল্টা জনসভা করেন বাঁকুড়া শহরের তামলিবাঁধ ময়দানে। সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যেকটি অভিযােগ খণ্ডন করেন। সেইসঙ্গে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকেও একহাত নেন।মমতা বলেন , কয়লা কেন্দ্রীয় সরকারের এক্তিয়ারভুক্ত বিষয়। খনিগুলির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনী। তাহলে কয়লা পাচারে তৃণমূল কংগ্রেস কীভাবে যুক্ত থাকতে পারে ? সেইসঙ্গে তিনি পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন , ” আমার কাছে একটা পেন ড্রাইভ আছে।সেটা যদি প্রকাশ্যে আনি তাহলে বিজেপির মুখােশ খুলে যাবে।কয়লা পাচার ও গরু পাচারের কাজে বিজেপি কতটা জড়িত তা ফাঁস হয়ে যাবে।বিজেপি যতই স্বপ্ন দেখুক না কেন এ রাজ্যে গােল্লা পাবে।

এবারের নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস এ রাজ্য থেকে ৪২ – এ ৪২টি আসনই পাবে বলে তিনি দাবি করেন।শুধু তাই নয়, এবার কেন্দ্রে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে তৃণমূল নির্ণায়ক শক্তি হয়ে উঠবে বলেও মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন।