জীবিত থেকেও ভোটার তালিকায় ‘মৃত’ হয়ে যাওয়ার ঘটনায় রাজ্যজুড়ে তীব্র শোরগোল শুরু হয়েছে। নিউ ব্যারাকপুর পুরসভা থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা— একের পর এক এলাকায় খসড়া ভোটার তালিকায় গুরুতর ত্রুটি ধরা পড়েছে। কোথাও জীবিত ভোটারকে মৃত দেখানো হয়েছে, কোথাও আবার স্থায়ীভাবে অন্যত্র স্থানান্তরিত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে।
নিউ ব্যারাকপুর পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ৩৫ নম্বর পার্টের আগাপুর এলাকার বাসিন্দা তাপসী বালা দিব্যি জীবিত। অথচ খসড়া ভোটার তালিকায় তাঁর নাম মৃত হিসেবে দেখানো হয়েছে। তাপসীর কথায়, ‘দিব্যি বেঁচে আছি, খাওয়া দাওয়া করছি।’ তাঁর ছেলের দাবি, এই ভুল সংশোধনের জন্য নতুন করে মায়ের নামে ফর্ম পূরণ করতে হয়েছে।
একই এলাকারই বাসিন্দা, অবসরপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী গৌতম মজুমদারের অভিযোগ, খসড়া তালিকায় তাঁকে স্থায়ী ভাবে অন্যত্র স্থানান্তরিত দেখানো হয়েছে। তৃণমূলের দাবি, নিউ ব্যারাকপুর পুরসভার ৭, ৮ ও ২০ নম্বর ওয়ার্ডে বহু ন্যায্য ভোটারকে ভুল করে মৃত, নিখোঁজ কিংবা স্থানান্তরিত দেখানো হয়েছে। এর ফলে সাধারণ মানুষকে অকারণে দপ্তরে দপ্তরে ঘুরে হয়রানি হতে হচ্ছে।
একই ছবি বরাহনগর পুরসভাতেও। এখানকার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ৬৫ নম্বর পার্টের বাসিন্দা আদিত্য বিশ্বাস নিয়ম মেনে এনিউমারেশন ফর্ম জমা দিয়েছিলেন। তাঁর কাছে বিএলও-র সই করা কপিও রয়েছে। তবুও খসড়া তালিকায় তাঁকে স্থায়ীভাবে স্থানান্তরিত দেখানো হয়েছে। আদিত্য বলেন, এই সমস্যার দায় তাঁর নয়। অথচ সংশোধনের জন্য তাঁকেই ছোটাছুটি করতে হচ্ছে।
তৃণমূলের অভিযোগ, দ্রুত সংশোধন প্রক্রিয়া শেষ করতে গিয়ে নির্বাচন কমিশনের তরফে তাড়াহুড়ো শুরু হয়েছে। তার ফলেই এমন বহু ভুল থেকে গিয়েছে। কমিশনের তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, ডেটা এন্ট্রির সময় কোনও ভুল হয়ে থাকলে তা দ্রুত সংশোধন করা হবে।
খসড়া ভোটার তালিকা ঘিরে একই রকম উত্তেজনা ছড়িয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানাতেও। নামখানা ব্লকের নারায়ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৬০ নম্বর বুথে ৫২ বছর বয়সি ভোটার হরেকৃষ্ণ গিরিকে মৃত হিসেবে দেখানো হয়েছে। নিয়ম মেনে ফর্ম জমা দেওয়ার পরেও তাঁর নাম মৃতের তালিকায় চলে গিয়েছে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসে ব্লক প্রশাসন। এ ব্যাপারে সংশোধনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।