রামলালার জন্য তিনশো কোটি বছরের পুরনো পাথর খুঁজতে সময় লেগেছে ত্রিশ বছর

স্টেটসম্যান ওয়েব ডেস্ক: অযোধ্যার রামমন্দিরের গর্ভগৃহে যে রামলালার মূর্তি বসানো হয়েছে, তা তৈরি করেছেন মাইসুরুর ভাস্কর অরুণ যোগীরাজ। এই মূর্তি তৈরি হয়েছে বিশেষ একটি পাথরে। পাথরটির বয়স প্রায় তিনশো কোটি বছর। পৃথিবী সৃষ্টির প্রাথমিক পর্যায়ে তিনশো বছরের সেই পুরনো পাথর দিয়ে তৈরি হয়েছে রামের শৈশবের মূর্তি। কিন্তু এই পাথর যে সত্যিই তিনশো কোটি বছরের পুরনো, তার প্রমাণ পাওয়া গেল কিভাবে? জানা গিয়েছে, এই ঘটনা সত্য বলে দাবি করেছেন মাইসুরু বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ সায়েন্স বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সি শ্রীকান্তআপ্পা। এজন্য তিন দশকের বেশি সময় ধরে অনুসন্ধান চালানো হয়। অবশেষে সন্ধান মেলে কর্ণাটকের এইচডি কোটাতালুকের গুজ্জেগাওদানপুরায় এই বিশেষ কৃষ্ণশিলার।

বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছেন, এটিই দক্ষিণ ভারতের প্রাচীনতম পাথর। গঠনগত কারণে এই পাথর মূর্তি তৈরির জন্য আদর্শ পাথর বলে গণ্য করা হয়। কারণ, এই পাথর যথেষ্ট মসৃণ। সেজন্য একে সোপস্টোনও বলা হয়। কোটি কোটি বছর ধরে সোপস্টোনের উপর কোয়ার্টাজাইট, কার্বোনেট, লৌহ পাথর, পেলেটিক পাথর জমে এই ধরণের পাথর তৈরি হয়। পাথরের বয়স অনুসন্ধানের কাজে পশ্চিমবঙ্গের বিশেষজ্ঞদের যোগ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। শ্রীকান্তআপ্পা জানিয়েছেন, যৌথভাবে রেডিওমেট্রিক বয়স যাচাই করেছেন আইআইটি খড়্গপুর ও জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। তাঁদের যাচাইয়ের ফলেই রামলালার মূর্তির জন্য পাথার পাওয়া সম্ভব হয়েছে।

এই পাথরে রয়েছে অ্যালুমিনিয়াম। শুধু তাই নয়, এই পাথর সিলিকা সমৃদ্ধ। গুজ্জেগাওদানপুরা এলাকার অধিকাংশ পাথরই এইরকম বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক সি শ্রীকান্তআপ্পা। গয়না তৈরির জন্য এই ধরনের পাথর এখন মাইসুরু থেকে ইউরোপে রপ্তানি করা হয়। বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় এই পাথরের নাম পেনিনসুলার জেনিস। পাথরটির বয়স জানার জন্য ইউরেনিয়াম-সিসা আইসোটোপ পরীক্ষা করা হয়েছে। এই পরীক্ষাগুলি করার পর জানা গিয়েছে, পাথরটি তিনশো বছরেরও বেশি পুরনো। এই পাথরটি একধরনের পাললিক শিলা।