শুধু কেঁচো খুঁড়তে কেউটেই নয়, আমি মুখ খুললে বটগাছও নড়ে যাবে: রাজীব

রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (File Photo: Twitter | @RajibBanerjeeWB)

বুধবারই রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বন সহায়ক পদে নিয়ােগে দুর্নীতির অভিযােগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়ে ছিলেন, ওই অভিযােগের প্রেক্ষিতে তদন্ত হচ্ছে। তার পাল্টা দিতে সময় বেশি নেননি রাজীব।

কয়েক ঘন্টার মধ্যে হুগলির গুড়াপের সভা থেকে পাল্টা তৃণমূলের দিকেই তির ছুড়ে রাজীবের হুঙ্কার, ‘কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে পড়বে! কোন কোন নেতা ওই পদে নিয়ােগের জন্য সুপারিশ করে চিঠি দিয়েছিলেন, তার সব নথি আমার কাছে রয়েছে।’ 

দুর্নীতির অভিযােগ থাকলে কেন মমতা তাঁকে আগেই দল থেকে তাড়াননি, সেই প্রশ্ন তুলে প্রাক্তন মন্ত্রীর বক্তব্য, ‘নিয়ােগে স্বচছতা চেয়েছিলাম বলেই বাের্ডের হাতে দিয়েছিলাম।’ 


প্রসঙ্গত, আলিপুরদুয়ারের সভা থেকে মমতা বলেছিলেন, আমাদের সঙ্গে ছেলেটা ছিল। সে এখন আমাদের সঙ্গে আর নেই। আমার কাছে অভিযােগ এসেছে বন সহায়ক পদ নিয়ে কারচুপি হয়েছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি। 

তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আলিপুরদুয়ার থেকে বেশ কয়েক কিলােমিটার দূরে হুগলির গুড়াপ থেকে পাল্টা জবাবে রাজীব বলেন, কোথা থেকে সুপারিশ হয়েছে, দেখাতে পারি। সব চুক্তিভিত্তিক নিয়ােগে হােক তদন্ত। আমি মুখ খুললে বটগাছ নড়ে যাবে। 

মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে রীতিমতাে হুশিয়ারির সুরে তিনি বলেন, সব রেকর্ড করে রেখেছি। প্যানডােরা বক্স খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এখন এটুকুই থাক। প্রয়ােজনে আবার বলব। 

প্রসঙ্গত, এ সময় দিনক্ষণ ধরে কোথা থেকে সুপারিশ এসেছিল তাও প্রকাশ্য মঞ্চে বলেন রাজীব। তিনি বলেন, ‘বন সহায়ক পদে স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়ােগ করতেই বাের্ডের হাতে তুলে দিয়েছিলাম। কিন্তু তার পর বীরভূমের এক নেতা আমায় ফোন করে তার প্রার্থীকে নিয়ােগের সুপারিশ করেন। প্রয়ােজনে বন সহায়ক নিয়ােগের ওই প্যানেল বাতিল করে দিন। আমার তাতে কিছু আসে যায় না।’ 

৮ অক্টোবর ৯ টা ৫৮ মিনিটে তাঁর সঙ্গে ওই নেতার ফোন কথােপকথনের রেকর্ডও তাঁর কাছে রয়েছে বলে দাবি করেন রাজীব। তিনি বলেন, ‘মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে দিতে চাই, কোন উচ্চ নেতৃত্ব সুপারিশ করেছেন, কালীঘাট থেকে কী সুপারিশ এসেছে, সব নথি তুলে রেখেছি। আপনি আলিপুরদুয়ারে আছে, সেখানকার জেলা সভাপতির কাছ থেকে জেনে নিন, উনিও সুপারিশ করেছিলেন। 

উল্লেখ্য, তৃণমূল ছেড়ে তাঁর বিজেপিতে যােগ দেওয়াকে গুরুত্ব না দিতে তৃণমূল নেতৃত্ব একাধিক বার বলেছেন, ‘তৃণমূল বটগাছ। তার দু’একটা পাতা ঝরে পড়লে কিছু হয় না। সমুদ্র থেকে এক ঘটি জল তুলে নিলে সমুদ্র বদলায় না।’

সেই সূত্র ধরেই রাজীব এ দিন বলেন, ‘আমি জানি সরকারকে একটা নিয়মনীতি মেনে চলতে হয়। মন্ত্রগুপ্তির শপথ নিয়েছিলাম। তাই এত দিন কিছু বলিনি। কিন্তু আপনি প্যান্ডােরার বাক্স খুলে দিয়েছেন। আমি মুখ খুললে শুধু বটগাছের পাতা নয় গােটা বটগাছটাই নড়ে যেতে পারে।উথাল-পাথাল হয়ে যেতে পারে সমুদ্র।’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী, আপনি যত প্রশ্ন করবেন, তার উত্তর দিয়ে দেব।’