ডিগবাজি খেলেন হুমায়ুন, পদত্যাগ করবেন না বলে জানালেন বিধায়ক

একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে গেলেন তৃণমূলের সাসপেন্ডেড বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। নতুন দল এবং বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করার ঘোষণা করেছিলেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। এবার ‘পাল্টি’ খেলেন তিনি। রবিবার হুমায়ুন জানিয়েছেন তিনি পদত্যাগ করবেন না। ভরতপুরের মানুষের কথা ভেবেই তিনি পদত্যাগ করছেন না বলে জানিয়েছেন। যদিও তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে জল্পনা।

বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কথা বলার পর থেকেই দলের সঙ্গে ঝামেলা বাধে হুমায়ুনের। তার জেরে সাসপেন্ড হন তিনি। দল ছাড়ার কথাও জানান তিনি। নতুন দল গড়ার হুঁশিয়ারি দেন ভরতপুরের বিধায়ক। আগামী ২২ তারিখ নতুন দল গড়া হবে বলে জানিয়েছেন।

সেই সঙ্গে ১২ ডিসেম্বর বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেবেন বলেও জানান তিনি। শনিবার বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তরের অনুষ্ঠান হয়েছে। আর ঠিক তার পরের দিনই হুমায়ুন জানালেন তিনি পদত্যাগ করবেন না। এর আগে হুমায়ুন বলেছিলেন, ‘১৭ তারিখ যাব। স্পিকারের সঙ্গে যোগাযোগ করব। নীচে যাব রাজ্যপালের ঘরে। চার লাইনের পদত্যাগ পত্র দিয়ে চলে আসব। হুমায়ুন কবীরকে এই সব ডাঁট দিয়ে লাভ নেই।”


রবিবার, অর্থাৎ ৭ ডিসেম্বর তিনি জানিয়েছেন, ‘আমি পদত্যাগ করার কথা ঘোষণা করেছিলাম। এখানে যাঁরা ইউসুফকে ভোট দিয়ে সাংসদ করেছেন, তাঁকে খুঁজে পায় না। বহু নথিতে সই করতে হয়। সবাই বলছে আপনি পদত্যাগ করবেন না। আপনাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছি, প্রতীক কী নেবেন আপনার ব্যাপার। আবার আপনাকে ভোট দিয়ে বিধায়ক করব। ভরতপুরের মানুষের জন্য আমি পদত্যাগ করব না।‘

হুমায়ুনের বিধায়ক পদ ছাড়া বা না-ছাড়ার বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে না তৃণমূল। শাসকদলের মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, ‘অনেক বড় বড় লম্ফঝম্প করলেন। শেষে বুঝতে পারলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি পিছন থেকে সরে গেলে আর বিধায়ক হতে পারবেন না। সে জন্য পদ ছাড়তে চাইছেন না।’

তন্ময় ঘোষ এ প্রসঙ্গে  বলেছেন, ‘বাংলার মানুষ দেখছেন। তাঁরাই সব সিদ্ধান্ত নেবেন। যিনি মঞ্চে উঠে নৈতিকতার পাঠ পড়াচ্ছেন তিনি নিজেও নৈতিকতা বজায় রাখবেন।‘  বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ তৃণমূলকে নিশানা করে বলেছেন, মমতাদি বারণ করেছে, এখন ইস্তফা করার দরকার নেই। গতকালের অনুষ্ঠান নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন। হুমায়ুনের সাসপেন্ড ইস্যুকে চোখে ধুলো দেওয়া বলে মনে করছেন বিজেপি নেতা।

রবিবার ব্রিগেডে গীতাপাঠের অনুষ্ঠানকে চ্যালেঞ্জ করে মুর্শিদাবাদে এক লক্ষ হাফেজের কোরানপাঠ করার ঘোষণাও করেছেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, ‘গীতা আমাদের হৃদয়ে আছে, আমাদের আদর্শ। আমরা গীতাপাঠের বিরোধী নই।  যাঁরা গীতাকে রাজনৈতিক উদ্দেশে ব্যবহার করছে, আমরা তাঁদের বিরোধিতা করছি। উল্টো দিকে, হুমায়ুন কবীরও বাবরি মসজিদের নামে বিষাক্ত সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ করেছেন, দলকে কলুষিত করার চেষ্টা করেছেন। আমরা এরও তীব্র নিন্দা করছি।‘