• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

হাইকোর্টে প্রশ্নের মুখে রাজ্য, ওবিসি সমীক্ষা সম্পর্কে বিজ্ঞাপন দেওয়ার নির্দেশ

আদালতের নির্দেশ যে কার্যকর হয়েছে, তা আগামী ১৫ জুন হলফনামা জমা দিয়ে রাজ্য ও অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ কমিশনকে জানাতে বলা হয়েছে।

ফাইল চিত্র

রাজ্য সরকারের ওবিসি সমীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্ট। অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি)-র তালিকা পুনর্বিবেচনা করতে সরকার যে সমীক্ষা শুরু করেছে, তার কোনও প্রচার নেই কেন? এই প্রশ্ন তুলে সরকারকে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত বিজ্ঞাপন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

এ বিষয়ে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, কোনও সম্প্রদায় ওবিসি হিসাবে যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তারা এই সমীক্ষার কথা জানতে না পারলে, তারা নিজেদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। আর সেই প্রেক্ষিতে সমীক্ষার বিষয়টি সকলকে জানানোর জন্য প্রচারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে আদালতের উপলব্ধি। এজন্য গ্রাম পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত বিজ্ঞাপনের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। হাই কোর্টের নির্দেশ, রাজ্যের সর্বস্তরে বিজ্ঞাপন দিয়ে তার পরেই সমীক্ষা করা যাবে।

Advertisement

এমনকি রাজ্যস্তরীয় এবং আঞ্চলিক সংবাদপত্রেও বিজ্ঞাপন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই বিজ্ঞাপন দেখে নতুন যাঁরা ওবিসি শংসাপত্রের জন্য আবেদন করবেন, তাঁদের সহযোগিতা করতে বিডিও ও অধীনস্থ আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ডিভিশন এ-ও জানিয়েছে, রাজ্যের করা সমীক্ষায় এখনই হস্তক্ষেপ করা হবে না। তবে হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে সমীক্ষা চালিয়ে যেতে পারবে। সেই সঙ্গে আদালতের নির্দেশ যে কার্যকর হয়েছে, তা আগামী ১৫ জুন হলফনামা জমা দিয়ে রাজ্য ও অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ কমিশনকে জানাতে বলা হয়েছে।

Advertisement

সম্প্রতি রাজ্য সরকারের (ওবিসি)-র তালিকা পুনর্বিবেচনার সমীক্ষা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করে মামলা চলছে কলকাতা হাইকোর্টে। অভিযোগ, কোনও রকম বিজ্ঞাপন বা প্রচার ছাড়া সমীক্ষা করা হচ্ছে। আদালত আরও প্রশ্ন তুলেছে, কোর্টের নির্দেশে বাতিল হওয়া ১১৩টি সম্প্রদায়কে নিয়ে সমীক্ষা করা হলেও যাঁরা নিজেদের ওবিসি বলে দাবি করেন, সেইসব সম্প্রদায়কে কেন সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না?

প্রসঙ্গত ২০২৪ সালের ২২ মে রাজ্যের প্রায় ১২ লক্ষ ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দেয়। গত বছরের ওই রায়ে হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল, ২০১০ সালের পর থেকে তৈরি সমস্ত ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করতে হবে। এই সময়ের সার্টিফিকেট ভবিষ্যতে কোথাও ব্যবহার করা যাবে না। এরপরই রাজ্য সরকার হাইকোর্টের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায়। তবে সুপ্রিম কোর্ট উচ্চ আদালতের সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়নি। মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিআর গবই ও অগাস্টিন জর্জ মসিহের বেঞ্চে বিচারাধীন।

এদিকে সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন এই মামলার রায় আসার আগেই রাজ্য সরকার জানায়, ওবিসি তালিকা নতুন করে যাচাই করতে ফের সমীক্ষা শুরু করছে রাজ্য। এজন্য তিন মাস সময় চাইলে তাতে সম্মতিও দিয়েছে শীর্ষ আদালত। অন্যদিকে, কলকাতা হাই কোর্টেও নতুন করে সমীক্ষা শুরুর সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের হয়। মামলাকারীর বক্তব্য, ২০১০ সালের পরে তৈরি রাজ্যের সব ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করেছে উচ্চ আদালত। সেই নির্দেশে সুপ্রিম কোর্টও কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি। সুতরাং রাজ্য ওবিসি চিহ্নিত করতে নতুন করে সমীক্ষা শুরু করতে পারে না।

Advertisement