হুমায়ুনের বাবরি মসজিদ নির্মাণে হস্তক্ষেপ করল না হাইকোর্ট, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে রাজ্য

৬ ডিসেম্বর মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় বাবরি মসজিদ-এর শিল্যানাসের ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূলের সাসপেন্ডেড নেতা ও ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। এবার হুমায়ুনের‘বাবরি মসজিদ’নির্মাণে আপত্তি নেই বলে জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পালের ডিভিশন বেঞ্চ এ কথা জানায়। শনিবার শিলান্যাসের সময় অশান্তি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের উপরেই ছেড়েছে আদালত। ইতিমধ্যেই বেলডাঙায় বাহিনী মোতায়েন করেছে রাজ্য সরকার।

হুমায়ুনের মসজিদ নির্মাণের প্রস্তাব সংবিধানবিরোধী অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। আইনজীবী সব্যসাচী চক্রবর্তী এই মামলা দায়ের করেছিলেন। এ দিন মামলাকারীর তরফে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘এই ঘটনায় রাজ্যের সম্প্রীতি নষ্ট হতে পারে। রাজ্য মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুক।’  অন্যদিকে, রাজ্যের তরফে আদালতে জানানো হয়, ‘রাজ্য আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় বাহিনী মোতায়েন করেছে।’  অন্যদিকে, ১৯ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী হাইকোর্টের আগের এক নির্দেশে মুর্শিদাবাদ জেলায় ইতিমধ্যেই মোতায়েন রয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।

অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিনই ৬ ডিসেম্বর বেলডাঙায় ওই নামের মসজিদের শিলান্যাস করবেন বলে জানিয়েছিলেন হুমায়ুন কবীর। এই ঘোষণার পর থেকে তৃণমূল তাঁর সঙ্গে দূরত্ব বাড়ায়। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বহরমপুরের সভার আগেই  হুমায়ুনকে সাসপেন্ড করা হয়। সাংবাদিক বৈঠক করে দলের সিদ্ধান্তের কথা জানান ফিরহাদ হাকিম।


হুমায়ুনের সঙ্গে কোনওরকম সম্পর্ক রাখা হবে না বলে জানিয়ে দেয় দল। এমনকী এই ইস্যুতে নাম না করে মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বহরমপুরের সভা থেকে তিনি বলেন, ‘একটা ধান পচে গেলে সরিয়ে দিতে হয়। নাহলে বাকিগুলো পচে যায়। কিছু পোকামাকড় থাকবেই। তাদের সরিয়ে দিলে দেশ, রাজ্য চলবে, সব চলবে।‘  তিনি আরও বলেন, ‘কেউ কেউ টাকা খেয়ে ইলেকশনের আগে বিজেপির তাঁবেদারি করে। ওরা দেশের শত্রু। ওরা নির্বাচনের ২ মাস আগে থেকে এই সব রাজনীতি করে।‘

দলের এই ঘোষণার পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন ভরতপুরের বিধায়ক। মুখ্যমন্ত্রী সভাস্থল থেকে বেরিয়ে জানান, শিলান্যাস তিনি করবেনই। মসজিদের জমিও চিহ্নিত। সেই সঙ্গে ২২ ডিসেম্বর নতুন দল তৈরির ঘোষণা করবেন বলেও জানিয়ে দেন ক্ষুব্ধ হুমায়ুন। কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের পর হুমায়ুন কবীরের শনিবারের কর্মসূচিতে আপাতত আর কোনও বাধা রইল না।