এখনই ভাতা পাবেন না গ্রুপ ‘সি’ ও ‘ডি’ চাকরিহারা প্রার্থীরা

ফাইল চিত্র

২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগের গোটা প্যানেল বাতিল করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারায় প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী। এর মধ্যে ছিল গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি -এর চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের জন্য ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। রাজ্যের এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে ঘিরে মামলা দায়ের করা হয়েছিল হাইকোর্টে। ভাতা মামলায় অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। শুক্রবার সেই স্থগিতাদেশের মেয়াদবৃদ্ধি করল কলকাতা হাইকোর্ট। ভাতা মামলার শুনানি উঠেছিল বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। এদিন হাইকোর্ট থেকে তাঁর নির্দেশ আগামী বছরের ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত কোনও ভাতা দেওয়া যাবে না।

চাকরি হারানোর পরে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত যোগ্য শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হবে বলে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। সেইসময় গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি-এর চাকরিপ্রার্থীদের ভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয় রাজ্য সরকারের তরফে। গ্রুপ সি এর চাকরিপ্রার্থীদের মাসিক ২৫ হাজার টাকা এবং গ্রুপ ডি -এর চাকরিপ্রার্থীদের ২০ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়ার কথা বলে রাজ্য। রাজ্যের তরফে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়।

মামলাকারীর আইনজীবীর দাবি ছিল, গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি এর কর্মীদের ভাতা দেওয়া হল সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিপন্থী। মামলার পরিপেক্ষিতে হাইকোর্টের তরফে বলা হয়, কোনও ভাবেই ভাতা দেওয়া যাবে না। রাজ্যের এই ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করে হাইকোর্ট। গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি দের ভাতা দেওয়ার মামলায় হাইকোর্টের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়, কীসের ভিত্তিতে রাজ্য সরকার তাঁদের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভাতার অঙ্কটাও কীসের ভিত্তিতে নিয়েছে রাজ্য সরকার তা জানতে চেয়েছিল হাইকোর্ট। হাইকোর্টের প্রশ্ন ছিল যাঁদের দাবি সুপ্রিম কোর্টও মেনে নেননি তাঁরা কী করে ঘরে বসে রাজ্যের কাছ থেকে টাকা পাবেন। এই বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। আগের শুনানিতে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। এবার সেই স্থগিতাদেশের মেয়াদবৃদ্ধি করে ২০২৬ সালের ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত করা হয়েছে।


২৬ হাজার চাকরি বাতিল করলে চাকরি যায় গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি এর চাকরিপ্রার্থীদের। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরিহারা যোগ্য প্রার্থীদের নতুন করে পরীক্ষায় বসতে হবে বলে জানানো হয়। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ৭ ও ১৪ সেপ্টেম্বর নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশের পরীক্ষা সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করা হয় এসএসসির তরফে। দশ বছর পর পরীক্ষা হওয়ায় যোগ্য চাকরিহারাদের পাশাপাশি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন নতুন চাকরিপ্রার্থীরা।

শুক্রবার নতুন চাকরিপ্রার্থীদের তরফে রাজপথে নেমে শূন্যপদ বাড়ানোর দাবিতে মিছিল করা হয়। তাঁদের দাবি ইন-সার্ভিস প্রার্থীদের মধ্যে ৩১ হাজার প্রার্থীকে ইতিমধ্যেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁদের যে ১০ নম্বর দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে, তা দিলে কোনও নতুন চাকরিপ্রার্থী পূর্ণ নম্বর পেলেও তাঁদের ডাকা হবে না। চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, এই ১০ নম্বর দেওয়ার কথা কোনও সরকারি গেজেটে উল্লেখ করা নেই। সেহেতু এই নম্বর যাতে না দেওয়া হয় তার দাবি জানান ফ্রেশার চাকরিপ্রার্থীরা।