দুয়ারে সরকার, পাড়ায় পাড়ায় সমাধান, আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রশংসা মমতার

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Photo: SNS)

একুশের নির্বাচনের আগে দুয়ারে সরকার এবং পাড়ায় পাড়ায় সমাধান’ নামে জনসংযােগের দুই কর্মসুচির সাফল্যের চিত্র বুধবার আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন নবান্ন থেকে এই দুই প্রকল্পের নামে দুটি বইও প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। যা বিভিন্ন দেশের শীর্ষ প্রশাসকদের কাছে পাঠানাে হবে বলে জানিয়েছেন মমতা।

‘চোখের আলাে প্রকল্পে বিনামুল্যে চশমা বিতরণের কাজও শুরু হয় বুধবার থেকে। আন্তর্জাতিক সংস্থা বিশ্বব্যাঙ্ক এবং ইউনিসেফের প্রতিনিধিরাও করােনা পরিস্থিতি উপেক্ষা করে যেভাবে রাজ্য সরকার প্রকল্পগুলির সুবিধে দেওয়া হয়েছে, তার প্রশংসা করেন।

বুধবার নবান্ন সভাঘরে প্রথমে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধে উপভােক্তাদের হাতে তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। যার মধ্যে প্রধানত ছিল দুয়ারে সরকার, পাড়ায় পাড়ায় সমাধান, স্বাস্থ্যসাথী এবং চোখের আলাে। সরকারের দেওয়া এই প্রকল্পের সুবিধে পেয়েছে চার কোটিরও বেশি রাজ্যবাসী।


বিশ্বব্যাঙ্কের তরফে জুনেইদ কামাল আহমেদ ভার্চুয়ালি যােগ দেন মুখ্যমন্ত্রীর ভার্চুয়াল বৈঠকে। তার মতে তৃণমূল স্তরে গিয়ে কাজ করার জন্য এইসব প্রকল্পের সুবিধে পেয়েছেন ৯৫ শতাংশ মানুষ। ইউনিসেফের প্রতিনিধি ইয়েসমিন হক বলেন, কন্যাশ্রী, রূপশ্রীর মতাে সামাজিক প্রকল্পের সুবিধে পেয়েছেন বহু মানুষ।

তবে এই সব প্রকল্প ত্রুটিমুক্ত ভাবে মানুষের কাছে পৌছচ্ছে কিনা তা নজরদারি কারও প্রয়ােজন আছে। এর আগেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কন্যাশ্রী প্রকল্প আন্তর্জাতিক সম্মান পেয়েছিল। বর্তমানে পাঁচ দফায় ‘দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে ২ কোটি ৫৫ লক্ষ মানুষ নাম নথিভুক্ত করেছে।

পয়লা ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচিতে রাজ্য সরকারের বারােটি প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করার সুযােগ পেয়েছে রাজ্যবাসী। কোন প্রকল্পে কত মানুষ সুবিধে পেয়েছে তারও পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছিল বুধবার।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, ৭৭ শতাংশ আবেদনকারীই সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের সুবিধে পেয়েছে। বাকিদেরও খুব শিগগিরই দেওয়া হবে। যে সমস্ত মানুষ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুযােগ সুবিধে এখনও পাননি, তাদের জন্যই দুয়ারে প্রশাসনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাড়া ফেলেছে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প। এই প্রকল্পে মানুষ বিনা পয়সায় স্বাস্থ্যবীমার কার্ড করাতে পারছে।

যা দিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনা পয়সায় চিকিৎসা করাতে পারছে মানুষ। কেন্দ্রের স্বাস্থ্যবীমা প্রকল্প আয়ুষ্মান ভারতে রাজ্য সরকারকে ৪০ শতাংশ প্রিমিয়াম দিতে হয়। বাকি ৬০ শতাংশ দেয় কেন্দ্রীয় সরকার।

কিন্তু স্বাস্থ্যসাথীতে পুরাে খরচই বহন করে রাজ্য সরকার সবুজসাথী প্রকল্পে এক কোটিরও বেশি মানুষকে সাইকেল দেওয়া হবে। এছাড়া বিনামূল্যে রেশনে পরিবারের সদস্য পিছু পাঁচ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। প্রকল্পের পরিসংখ্যান অনুযায়ী পাড়ায় পাড়ায় সমাধান কর্মসুচিতেও ১০ হাজার মানুষের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধে পাইয়ে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। তার মধ্যে এক হাজারটি প্রকল্পের কাজ শেষ।

একুশের নির্বাচনের আগে বিভিন্ন প্রকল্পের মধ্যে আরও বেশি করে মানুষকে এনে ভােটব্যাঙ্কের ভিত গড়ার একটা চেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে। যে ভিতকে আরও মজবুত করল বিদেশি প্রতিনিধিদের প্রশস্তি।