উত্তরবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি বিপন্ন বন্যপ্রাণী, তোর্সার জলে ভাসছে গন্ডার-হাতি

শনিবার রাতভর বৃষ্টিতে উত্তরবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি। তিস্তা-তোর্সা সহ উত্তরবঙ্গের একাধিক নদী ফুঁসছে। জলে তলিয়েছে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান। তোর্সার প্রবল জলস্রোতে ভাসতে থাকে একটি গন্ডার। প্রাণপণে বাঁচার চেষ্টা চালিয়ে অবশেষে কোচবিহারের দিকে ভেসে চলে যায়। শীলবাড়ি হাটের কাছে ২৭ নম্বর জাতীয় সড়কের শীল তোর্সা সেতু থেকে তোলা ছবিতে এই দৃশ্য ফুটে উঠেছে।

প্রবল বৃষ্টিতে উত্তরবঙ্গের একাধিক নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগে বহু মানুষ। জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে লেপার্ড, অসংখ্য হরিণ এবং বাইসন। গোঁদের উপর বিষফোঁড়ার মত বন্যপ্রাণীদের বিপদ বাড়িয়েছে জলে ভেসে আসা বড় কাঠের গুঁড়ির আঘাত। শীল তোর্সা নদীর জলে ভেসে আসা আরও দুটি গন্ডার কোনওমতে ঠাঁই নিয়ে আলিপুরদুয়ারের শালকুমার হাটের সুঁড়িপাতা ও শিমলাবাড়িতে। ভেসে যাওয়া বন্যপ্রাণীগুলিকে উদ্ধারের জন্য আপ্রাণ  চেষ্টা চালাচ্ছেন জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের বনকর্মীরা।

বিপন্ন গরুমারার বন্যপ্রাণীরাও। জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ির রামসাই এলাকায় শাবক-সহ প্রায় ১২টি হাতিকে গ্রামের কাছে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। জলঢাকার নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় হাতিগুলি আর ফিরতে পারেনি। পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছে প্রশাসন। জেলাশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, ডিএফও পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছেন। এলাকায় ১০০০-এর বেশি পরিবার জলবন্দি।


অন্যদিকে, মাদারিহাটের কাছে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হলং নদীর  জলস্ফীতিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মাদারিহাট থেকে জলদাপাড়া ট্যুরিজম লজে যাওয়ার কাঠের সেতু।  রবিবার সকালে বন্ধ হয়ে যায় জিপসি সাফারি ও হাতি সাফারি। আপাতত লজে আটকে পড়েছেন অসংখ্য পর্যটক।  জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান লাগোয়া শালকুমার হাটের শিশামারা নদীর ফুলে উঠে্ছে।

এর ফলে নদীর ধারের তিনটি বেসরকারি পর্যটক আবাস জলমগ্ন হওয়ায় আটকে পড়েছেন বহু পর্যটক। সব মিলিয়ে শনিবার থেকে রবিবার দুপুর পর্যন্ত হওয়া অতি ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে গোটা জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান ও আলিপুরদুয়ার এক ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা। পাশাপাশি ভুটানের টালা হাইড্রোল প্রজেক্টের স্লুইস গেট অতিরিক্ত জলের কারণে খুলছে না।  যে কোনও মুহূর্তে তা ভেঙে যেতে পারে বলে রাজ্য সরকারকে সতর্ক করেছে ভুটান প্রশাসন।