নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে আসছে, খড়্গপুরে বাড়ছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব

তৃণমূল থেকে বিজেপিতে নেতাদের যাওয়ার হিড়িক বাড়ছে। দলীয় কর্মীদের এক হয়ে লড়াইয়ে নামার ডাক দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমাে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Written by SNS February 3, 2021 5:39 pm

খড়্গপুরে বাড়ছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব (Photo: SNS)

বিধানসভা নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে । তৃণমূল থেকে বিজেপিতে নেতাদের যাওয়ার হিড়িক বাড়ছে। দলীয় কর্মীদের এক হয়ে লড়াইয়ে নামার ডাক দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমাে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুরে দেখা যাচ্ছে অন্য ছবি।

খড়গপুরের আইআইসি ক্যাম্পাসে ছাত্রাবাস কর্মী ছাঁটাইয়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্বীকৃত শ্রমিক সংগঠনগুলি। আন্দোলনে নামে তৈরি হয় জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি। এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয় আইএনটিটিইউসি নেতা জহরলাল পালকে। স্বীকৃত শ্রমিক সংগঠনগুলি সিদ্ধান্ত নেয় আগামী দিনে আইআইটি ক্যাম্পাসে কর্মীদের সঙ্গে কোনও অন্যায় হলে জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির ছাতার তলায়। থেকে স্বীকৃত শ্রমিক সংগঠনগুলি লড়াই করবে।

সম্প্রতি ৩০ নং ওয়ার্ডের কোঅর্ডিনেটর রীতা সেনগুপ্তের একটি চিঠি ফাস হয়ে যাওয়ার পর জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটিকে ঘিরে তৃণমূলের গােষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা সামনে এসেছে। হায়দরাবাদের ঠিকাদার সংস্থা এইচআর স্কোয়াব এলএলপি’কে দেওয়া চিঠিতে কো-অর্ডিনেটর রীতা সেনগুপ্ত লিখেছেন, জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির সদস্য হিসেবে কিছু লােক পরিচয় দিচ্ছেন।

স্থানীয় বা জেল প্রশাসন স্বীকৃত এই ধরনের কোনও কমিটির অস্তিত্ব নেই। রীতা লিখছেন, খড়গপুর পুরসভার বাের্ড অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের একজন সদস্য হিসেবে আমি নির্দেশ দিচ্ছি জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির সদস্যদের কথায় গুরুত্ব না দেওয়ার জন্য। মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেস কমিটি, জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটিকে কোনও স্বীকৃতি দেয়নি।

রীতার এই চিঠিকে ‘ফরওয়ার্ড’ করেছেন খড়গপুর সদরের তৃণমূল বিধায়ক প্রদীপ সরকার। তিনি লিখেছেন, চিঠির প্রতিটি অক্ষর সত্যি।

রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই চিঠির পিছনে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের গােষ্ঠীদ্বন্দ্ব। জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটিতে আইএনটিটিইউসি স্বীকৃত দু’টি শ্রমিক সংগঠন আছে। একটি সংগঠনের নেতৃত্ব দেন জহর পাল, দ্বিতীয় সংগঠনের নেতৃত্ব দেন দেবাশিস চৌধুরি, অপূর্ব ঘােষরা। বিধায়ক জেলা আইএনটিটিইউসি’র নবনিযুক্ত সাধারণ সম্পাদক শৈলেন্দ্র সিংকে সামনে রেখে আইআইটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন নির্মাণ কাজে লােক নিয়ােগে খবরদারি করতে চাইছেন। এর ফলে তৃণমূলের গােষ্ঠীদ্বন্দ্ব সাধারণ মানুষের সামনে আরও পরিষ্কার হচ্ছে। এর বিরূপ প্রভাব ভােটে পড়তে পারে।

এআইটিইউসি নেতা আয়ুব আলি বলেন, শ্রমিক স্বার্থে লড়াই আমাদের এক ছাতার তলায় এনেছিল। এখন যারা কাজের পরিবেশ নষ্ট করতে চাইছেন, তাদের বিরুদ্ধে শ্রমিকরা একজোট হবে। প্রায় নব্বই শতাংশ শ্রমিক জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটিকে সমর্থন জানিয়েছিল। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নভেনশন ডেকে ভবিষ্যৎ কর্মসুচি ঠিক করবে জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি।

আইএনটিটিইউসি নেতা অপূর্ব ঘােষ বলেন, ‘আমি চিঠি দেখিনি। যদি ঠিকাদার সংস্থা আমাদের কিছু জানায়, তাহলেই কোনও মন্তব্য করব।

শহর তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি রবিশংকর পাণ্ডেও বলেন, আমার জানা নেই। না জেনে কোনও মন্তব্য করা ঠিক নয়।

তৃণমূলের এই আভ্যন্তরীণ কোন্দলের ছাপ পড়েছে পুরসভায়। পুরসভার সাফাই কর্মী ও জলের পাম্প অপারেটররা যাতে ভালােভাবে কাজ করেন, তার জন্য একটি সভার আয়ােজন করা হয়েছিল। পুরভবনে অনুষ্ঠান এড়িয়ে যান জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র দেবাশিস চৌধুরি, শহর তৃণমূল সভাপতি রবিশংকর পাণ্ডে। পাণ্ডে বলেন, পারিবারিক কাজে ব্যস্ত ছিলাম। যেতে পারিনি।’