নির্বাচন কমিশন ‘বিজেপির ক্রীতদাস’: মমতা

নিজস্ব চিত্র

ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) নিয়ে ফের কমিশন এবং কেন্দ্রকে তোপ দাগলেন মমতা। ঝাড়গ্রামে ভাষা আন্দোলনের মঞ্চ থেকে বিজেপির প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে মমতা বলেন, ‘নাম বাদ দিতে আমার দেহ পেরিয়ে যেতে হবে।’ বাংলাকে বাঁচাতে সব রাজনৈতিক দলের রং ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছেন তিনি। ভোটার সংশোধনের তালিকার আড়ালে এনআরসি চালু করার পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্র সরকার। এই অভিযোগ তিনি আগেই তুলেছিলেন। এবার ঝাড়গ্রামের পথে নেমে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ‘এনআরসি মানছি না, মানব না’।

ইদানিং অসম সরকারের পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদেরও এনআরসি নোটিস পাঠানো হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, অসম সরকার এই নোটিস পাঠাতে পারে না। এটা বেআইনি, গণতন্ত্রবিরোধী এবং অসাংবিধানিক। ভবিষ্যতে এনআরসি-র নোটিস পেলে পশ্চিমবঙ্গ থেকে কেউ যেন না যান, সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি। এই মঞ্চ থেকে তিনি সরাসরি আক্রমণ শানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের প্রতি– ‘অমিত শাহ আগে তাঁর জন্মের শংসাপত্র দেখান।’ তিনি উল্লেখ করেন, এনআরসি-র ভয়ে মানুষ আত্মহত্যা করছে। তিনি রাজ্যের মানুষকে সাহস জুগিয়ে বলেছেন, ‘কেউ ভয় পাবেন না। মানুষের অধিকার কাড়তে দেব না। বিজেপির চালাকি মানুষ বুঝে গিয়েছে। এনআরসি হবে না।’

২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে ভাষা আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন মমতা। সেই অনুসারে ঝাড়গ্রামে তিনি দ্বিতীয় সভাটি করলেন। এদিন সিধু-কানহুর মাটিতে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বাংলার আত্মমর্যাদাকেই যে আগামী নির্বাচনের অস্ত্র করতে চলেছেন, তা তাঁর কথাতেই স্পষ্ট। তিনি প্রকৃত জননেত্রীর মতোই সমস্ত রাজনৈতিক মতভেদের ঊর্ধ্বে উঠে সবাইকে বাংলার স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আপনার ঠিকানা আপনাকেই রক্ষা করতে হবে। একটিও নাম যেন বাদ না যায়।’ বাঙালি ও বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার স্বার্থে অন্য রাজনৈতিক দলের প্রতিও তাঁর আহবান, ‘ভুলে যান পার্টি, ভুলে যান রাজনৈতিক দল’। ঐক্যবদ্ধ হয়েই বাঙালি জাতিসত্তার প্রতি এই আক্রমণকে প্রতিহত করার জন্যই তাঁর এই আহবান।


কেন্দ্রের প্রতি তাঁর প্রশ্ন, রবীন্দ্রনাথ, নেতাজি, স্বামী বিবেকানন্দ, বিদ্যাসাগর কোন ভাষায় কথা বলতেন? তিনি বলেন, ‘নবজাগরণ থেকে স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু করেছিল এই বাংলাই। বাংলা ছাড়া ভারতবর্ষ হয় না, পৃথিবী হয় না।’ ইদানিং দেখা যাচ্ছে, দেশের অন্যান্য রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে নির্যাতিত হচ্ছেন বাংলার শ্রমিকরা। তাঁদের ‘বাংলাদেশি’ বা ‘রোহিঙ্গা’ বলে হেনস্থা করা হচ্ছে। এর বিরুদ্ধেও সরব হয়ে তিনি বাংলার শ্রমিকদের রাজ্যে ফিরে আসার আহবান জানিয়েছেন।