ভোটার তালিকা পুনর্মূল্যায়নের মধ্যেই নির্বাচনী ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কঠোর অবস্থান নিল নির্বাচন কমিশন। এনুমারেশন পর্যায়ে কোনওরকম অনিয়ম, পক্ষপাত বা ফর্ম–সংক্রান্ত গাফিলতি এবার সরাসরি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। শনিবার এমনই বার্তা দিল নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যেই অনিয়মের কারণে পাঁচজন বিএলএ–র বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে এবং আটজন বিএলও’কে শোকজ নোটিস পাঠানো হয়েছে।
কমিশনের দাবি, ভোটার তালিকা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা বা প্রক্রিয়া ব্যাহত করার কোনও সুযোগ রাখা হবে না। এনুমারেশনকে ত্রুটিমুক্ত করতে হবে— এটাই মূল নির্দেশ। নির্বাচন কমিশনের কঠোর অবস্থানকে ভবিষ্যৎ ভোটগ্রহণের প্রস্তুতির গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে বিশেষজ্ঞ মহল। কমিশনের দাবি, এবার এনুমারেশন প্রক্রিয়ায় ফর্ম নষ্ট, ঘুষ, পক্ষপাত— কোনও কিছুই বরদাস্ত করা হবে না।
Advertisement
কমিশনের তরফে আরও জানানো হয়েছে, যদি কেউ অফলাইন ও অনলাইন দুটো এনিউমারেশন ফর্মেই অ্যাপ্লাই করেন, তাহলে সেক্ষেত্রে একটি অ্যাপ্লিকেশনকেই গ্রহণ করা হবে। দুটো অ্যাপ্লিকেশনে অ্যাপ্লাই করে থাকলেও ফর্ম বাতিল হবে না। কমিশন ম্যাপ করে একটিকেই গ্রহণ করবে।
Advertisement
বিএলও-রা যদি ইচ্ছাকৃতভাবে এনিউমারেশন ফর্ম নষ্ট করেন বা রাজনৈতিক দলের এজেন্টদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করেন, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধেও এফআইআর দায়ের করা হতে পারে। কন্ট্রোল রুমে বিএলও-দের বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে, সরাসরি জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বিএলও-কে। পরে বিভাগীয় তদন্ত হবে।
বিএলও সম্পর্কিত অভিযোগ জানাতে হেল্পলাইন নম্বর- ০৩৩-২২৩১০৮৫০। ৮ নভেম্বর, শনিবার থেকে চালু করা হলো এই নম্বর। সেই সঙ্গে আগামী সোমবার থেকে এসআইআর নিয়ে সমস্ত বিভ্রান্তি দূর করতে ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সচেতনতামূলক প্রচার করবে নির্বাচন কমিশন। বিএলও’দের বিরুদ্ধে অভিযোগ শোনার জন্য রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কার্যালয়ে শনিবার থেকে বিশেষ সেল চালু করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গ সফরে এসে দিল্লির জাতীয় নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি দলের তরফে বিএলও’দের স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, বিএলও’রা বাড়ি বাড়ি গিয়েই এনুমারেশন ফর্ম দেবেন। কোনও ভাবেই বিএলএ’র হাতে এনুমারেশন ফর্ম দেওয়া যাবে না। যাঁদের ২০২৫ সালের ভোটার তালিকায় নাম আছে, তাঁরাই এনুমারেশন ফর্ম পাবে বলে জানিয়েছে কমিশন। কিন্তু ২০০২’এর ভোটার তালিকায় নাম আছে, কিন্তু ২০২৫ সালের ভোটার তালিকায় নাম না থাকলে এনুমারেশন ফর্ম পাবেন না। এক্ষেত্রে খসড়া তালিকা বেরনোর পর তিনি আবেদন করতে পারবেন।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় বাবা, মা বা ঠাকুর্দা–ঠাকুমা সহ পরিবারের কারও নাম না থাকলে কাকা, দাদা, ভাই বা বোনের নথিও জমা দেওয়া যেতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই শুনানি হবে এবং প্রার্থীকে ব্যাখ্যা দিতে হবে কেন পরিবারের মূল সদস্যদের নাম তালিকায় ছিল না এবং কেন আত্মীয়ের নথি দাখিল করতে হচ্ছে।
Advertisement



