দুর্গাপুজোর অনুদান এবার ১ লাখ ১০ হাজার

নিজস্ব চিত্র

এবছর দুর্গাপুজোর অনুদান এক ধাক্কায় ২৫ হাজার টাকা বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থাৎ পুজো কমিটিগুলি এবছর সরকারের তরফ থেকে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা করে পাবে। পাশাপাশি বিদ্যুতের বিলেও ৮০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় খুশি পুজো উদ্যোক্তারা।

বৃহস্পতিবার কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্যের বিভিন্ন পুজো কমিটির উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে অনুদান বাড়ানোর ঘোষণা করেন তিনি। ২০২৪ সালে পুজো কমিটিগুলিকে ৮৫ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছিল রাজ্য সরকার। তখনই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, এ বছর এক লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার অনুদান ঘোষণার সময় আরও ১০ হাজার টাকা বেশি অর্থাৎ ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মমতা। পাশাপাশি তিনি সিইএসই ও রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন পর্ষদকে বিদ্যুতের মাসুলেও পুজো কমিটিগুলিকে ৮০ শতাংশ ছাড় দেওয়ার জন্য বলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী আরও ঘোষণা করেছেন, আগামী ৫ অক্টোবর কলকাতায় পুজো কার্নিভাল হবে। তার আগে ২, ৩ এবং ৪ অক্টোবর হবে প্রতিমা বিসর্জন।

এদিনের বৈঠকে পুজো কমিটির উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন রাজ্য প্রশাসন, কলকাতা পুরসভা, দমকল বিভাগ, সিইএসসি, পুলিশ প্রশাসন, পরিবহণ ও স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রতিনিধিরা। তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, দর্শনার্থীদের নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দিতে হবে। এই বৈঠক থেকে পুজোর সময় মহিলাদের জন্য পিঙ্ক পুলিশ, ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্য পরিষেবা ইত্যাদি ক্ষেত্রে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি পুজোর সময় মণ্ডপগুলিতে যেন কড়া নজরদারি রাখা হয় সেই নির্দেশও দিয়েছেন। পদপিষ্টের মতো কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ড্রোন, সিসিটিভি, ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে নজরদারির চালাতে বলেছেন মমতা। মণ্ডপে আগত মহিলা ও প্রবীণদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয় সেই দিকটাও দেখার জন্য পুজো কমিটিগুলিকে তিনি অনুরোধ করেছেন। দর্শনার্থীদের সুবিধার জন্য পুজোর সময় সারাক্ষণ মেট্রো চালানো যায় কি না তা দেখতে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার নির্দেশ দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি পুজোর দিনগুলোয় লোকাল ট্রেন ও রাস্তায় যেন পর্যাপ্ত বাসের ব্যবস্থা থাকে তা–ও দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। এই বিষয়ে পরিবহণ দপ্তরকে বাড়তি নজর রাখতে বলেছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।


দুর্গাপুজোর অনুদানে বিরোধীদের আপত্তি নিয়ে এদিন মুখ খোলেন মমতা। তাঁর কথায়, ”আমি যে পুজোয় টাকা দিই, তা নিয়েও তাঁদের (বিরোধী) আপত্তি। এটা নিয়ে মামলা করেছিল। পুজোয় আমরা সবাই আনন্দ করি। একটু টাকা দিলে যদি পুজোটা আর একটু ভালো হয়, তাহলে ক্ষতিটা কী? একদিকে বলবে, আমি নাকি বাংলায় দুর্গাপুজো, কালীপুজো, সরস্বতী পুজো করতে দিই না। আবার আমি পুজোয় অনুদান দিলেও আপত্তি করবে।”

উল্লেখ্য, ২০১৮ সাল থেকে রাজ্যের পুজো উদ্যোক্তাদের অনুদান দেওয়া শুরু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই বছর ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছিল। সেই বছর বিদ্যুতের বিলে ছাড় মিলেছিল ২৫ শতাংশ। ২০১৯ সালে অনুদানের পরিমাণ হয় ২৫ হাজার টাকা। অনুদানের টাকা প্রতি বছর বাড়তে থাকে। ২০২২ সালে টাকার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৬০ হাজার। ২০২৩ সালে ৭০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয় উদ্যোক্তাদের। ২০২৪ সালে দেওয়া হয় ৮৫ হাজার টাকা। এবার এক লাফে ২৫ হাজার টাকা বেড়ে অনুদানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা।