যাত্রীবাহী বিমান পরিষেবা চালু হল

লকডাউনের জন্য প্রায় নয় সপ্তাহ যাত্রীবাহী উড়ান বন্ধ ছিল। বৃহস্পতিবার কলকাতা বিমানবন্দর এবং বাগডােগরা থেকে উড়ল অন্তর্দেশীয় যাত্রীবাহী বিমান।

Written by SNS Kolkata | May 30, 2020 11:29 pm

চালু হয়েছে অন্তর্দেশীয় বিমান পরিষেবা। (File Photo by Arun SANKAR / AFP)

লকডাউনের জন্য প্রায় নয় সপ্তাহ যাত্রীবাহী বিমান বন্ধ ছিল। বৃহস্পতিবার কলকাতা বিমানবন্দর এবং বাগডােগরা থেকে উড়ল অন্তর্দেশীয় যাত্রীবাহী বিমান। কড়া নজর রাখা হয়েছে সুরক্ষাবিধিতে। 

গত ২২ মার্চের পর থেকে এই রাজ্যে অন্তর্দেশীয় যাত্রীবাহী উড়ান বন্ধ ছিল। গত ২৫ মে তা চালু হওয়ার কথা থাকলেও আম্ফানের জন্য সতর্কতা হিসেবে তা বন্ধ রাখার আবেদন জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক এবং অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের নির্দেশিকা মেনে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এই রাজ্যে শুরু হয়েছে যাত্রীবাহী বিমানের ওঠানামা। বিমানবন্দর সুত্রে জানা গিয়েছে, এদিন ১১ জোড়া অন্তর্দেশীয় বিমান ওঠানামা করে। 

বৃহস্পতিবার সকাল ৬:১৯ মিনিট নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দর থেকে প্রথম বিমান উড়ে যায় গুয়াহাটির উদ্দেশ্যে। আর এদিন সকালে দিল্লি থেকে আসা প্রথম বিমানে কলকাতায় পৌছন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী। তিনি যে বিমানে ছিলেন, এয়ার এশিয়ার সেই বিমানে আসা ১২২ জন যাত্রীর মধ্যে একজনের থার্মাল স্ক্রিনিং-এ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা পাওয়া যায়। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয় ওই যাত্রীকে। সেখান থেকে ওই ব্যক্তিকে রাজারহাটের কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় শারীরিক পরীক্ষার জন্য। 

প্রসঙ্গত এদিন বিমানবন্দরে পা রেখেই অধীর চৌধুরী মমতাকে নিশানা করে বলেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে রাজনীতি করছেন মুখ্যমন্ত্রী। কোটি কোটি টাকা আপনাকে দিচ্ছে পরিযায়ী শ্রমিকরা আর এখন তারা ঘরে ফিরতে পারবে না। রাজ্যের মানুষের সামনে ভালাে থাকতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে রাজনীতি করছেন বলে তােপ দাগেন অধীর। 

এদিন যাত্রীদের সুরক্ষা বজায় রাখতে যাবতীয় কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা মানা হয়েছে বিমানবন্দর থেকেই। দূরত্ব বজায় রেখেই লাইন দিয়ে বিমানবন্দরে প্রবেশ করেন যাত্রীরা। লাউঞ্জে ঢােকার মুখেই বিমানবন্দরের কর্মীরা সমস্ত মালপত্রে জীবাণুনাশক স্প্রে করেন। লাউঞ্জে ঢােকার মুখেই রাখা হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা হয় যাত্রীদের ব্যবহারের জন্য। মালপত্র জীবাণুমুক্ত করার পর লাউঞ্জে ঢােকার মুখে যাত্রীদের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হয়। তারপর তারা ভেতরে প্রবেশ করতে পারেন। 

সংক্রমণ এড়াতে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের মাধ্যমে বাের্ডিং পাস ও টিকিট চেকিং করা হয়। চেকিং-এর পর যাত্রীদের সিআইএসএফ কিয়স্কে যেতে বলা হয়। কাঁচে ঢাকা সেই কিয়স্কে কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মীরা যাত্রীদের পরিচয়পত্র এবং টিকিট পরীক্ষা করে দেখেন। যাত্রীদের মােবাইলে আরােগ্য সেতু অ্যাপ থাকা আগেই বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। 

কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা মেনে প্রথম দফায় বিমানবন্দরে কর্মীর সংখ্যা কম রাখা হয়েছিল। সিকিউরিটি চেকিং-এর সময়েও শারীরিক সংস্পর্শ যথাসম্ভব এড়িয়ে চলেছেন নিরাপত্তা কর্মীরা। যাত্রীদের মাস্ক পরা তাে বাধ্যতামূলক ছিলই। চেকড ইন জোনে যাত্রীদের অপেক্ষার সময়েও দুরত্ববিধি মেনে চলা হয়েছে। বিমানে চাকফি ইত্যাদি কিছুই দেওয়া হচ্ছে না। বন্ধ রাখা হয়েছে ম্যাগাজিন এবং সংবাদপত্র ইত্যাদি দেওয়া। নিজেদের সুরক্ষার জন্য বিমানসেবিকা এবং স্টুয়ার্ডরা পিপিই পরে বিমান যাত্রীদের পরিষেবা দিয়েছেন। 

কলকাতা ছাড়াও এদিন বাগডােগরা থেকেও ছ’টি যাত্রীবাহী বিমানের উড়ান শুরু হয়। লকডাউনের সময় দিল্লিতে আটকে পড়েছিলেন দার্জিলিং-এর সাংসদ রাজু বিস্ত। তিনিও বৃহস্পতিবার বাগডােগরা বিমান পরিষেবা চালু হওয়ার পর ফেরেন। বৃহস্পতিবার রাজ্য পরিবহণ নিগমের তরফে বাসের বন্দোবস্ত করা হয়েছিল, যাতে যাত্রীরা বিমানবন্দরে যেতে পারেন কিংবা কলকাতায় নেমে তাদের গন্তব্যে পৌঁছতে পারেন। পাশাপাশি ট্যাক্সি এবং অ্যাপ ক্যাবে‌রও ব্যবস্থা ছিল।