• facebook
  • twitter
Thursday, 20 March, 2025

বাংলার বঞ্চনা নিয়ে রাজ্যসভায় ডেরেক-নির্মলা বাদানুবাদ

ক্ষুব্ধ জেপি নাড্ডা

রাজ্যসভায় নির্মলাকে থামিয়ে দিলেন ডেরেক, ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামলেন জেপি নড্ডা।

বাজেট নিয়ে জবাবি ভাষণের সময় পরস্পর তীব্র বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়লেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামান ও তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন। মূলত বাংলার বঞ্চনা নিয়ে সরব হন রাজ্যের শাসক দলের এই প্রতিনিধি ডেরেক। তাঁর জবাবে নির্মলা বলতে শুরু করলেই প্রতিবাদ করেন ডেরেক। এরপরই দু’জনের মধ্যে যখন উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়, তখন ক্ষুব্ধ হন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি তথা সাংসদ জেপি নাড্ডা। রাজ্যসভায় মন্ত্রী ও সাংসদের চিৎকারের পাল্টা প্রতিবাদে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘এটা কি মাছের বাজার নাকি?’

প্রসঙ্গত কেন্দ্রীয় বাজেট পেশের পর তৃণমূলের অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের মতো প্রতিবাদ করেন সাংসদ সাকেত গোখলে। তৃণমূলের এই সাংসদের প্রশ্নের জবাবে নির্মলা বলেন, ‘আমাকে বলা হয়েছে, কেন বাজেটে পশ্চিমবঙ্গের জন্য একটি টাকাও বরাদ্দ করা হয়নি। বাজেটের তালিকায় রাখা হয়নি ওই রাজ্যের কোনও পর্যটনকেন্দ্রকেও। আমি এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াতের উত্তর উল্লেখ করতে চাই। আমাদের কিছু সদস্য ভাবছেন, বাংলাকে কিছুই দেওয়া হচ্ছে না। এই উত্তরে সেটা নিয়েই বলা হয়েছে।’

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘গজেন্দ্র বলেছেন, আমরা চার বার পশ্চিমবঙ্গের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাদের প্রতিনিধির সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেছি। লিখিতও দিয়েছি। কিন্তু আমাদের বারংবার চেষ্টা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার কোনও প্রস্তাব পাঠায়নি।’

অর্থমন্ত্রীর এই বক্তব্যের মাঝপথে তৃণমূল সাংসদরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। সভা পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিংহ। ডেরেক কিছু বলতে চাইলে তিনি নির্মলাকে থামিয়ে তাঁকে বলার সুযোগ করে দেন। এতে ক্ষুব্ধ হন নির্মলা। তখন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর কথার মাঝেই ডেরেক চিৎকার করে বলে ওঠেন, ‘আমি তিন মিনিট ধরে বলার চেষ্টা করছি। নিয়ম অনুযায়ী, যে কোনো বিষয়ে রাজ্যসভার কোনও সদস্য যদি অপর সদস্যকে প্রশ্ন করতে চান, তাঁকে চেয়ারম্যানের মাধ্যমে প্রশ্নটি করতে হয়। এটা নিয়ম। আগে থেকে নোটিস না দিয়ে সভায় কোনও রাজ্য সরকার সম্বন্ধে অসম্মানজনক কিছু বলা যায় না। অর্থমন্ত্রীর কাছে আমার প্রশ্ন, বাংলার ১০০ দিনের কাজের সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা কোথায়?’

ডেরেকের এই বক্তব্যের পরই ডেপুটি চেয়ারম্যান তাঁকে বসিয়ে দেন। ঠিক তখনই জেপি নাড্ডা উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘কোনও রাজ্য সরকারকে নিয়ে অসম্মানজনক কিছু বলা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে অযথা রাজনীতি করা হচ্ছে। আপনারা একটা করে বিষয় তোলেন এবং এমন হাবভাব করেন, যেন মনে হয় রাজ্যের সঙ্গে অবিচার করা হয়েছে।’

এরপর নাড্ডার এই বক্তব্য শুনে তৃণমূল সাংসদরা একসঙ্গে প্রতিবাদ করতে শুরু করেন। তখনই তৃণমূল সাংসদদের আচরণে ক্ষুব্ধ হন বিজেপি সভাপতি। ‘এটা কি মাছের বাজার নাকি? কথা শোনার মতো ভদ্রতাটুকু নেই আপনাদের! এখানে বাজেট নিয়ে সকলে নিজেদের অভিযোগ জানিয়েছেন। অর্থমন্ত্রী একে একে তার উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করছেন। মোদী সরকার কী করেছে, সেটা বলার চেষ্টা করছেন। পশ্চিমবঙ্গের দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার আসলে কোনও সাড়া দিচ্ছে না। আমার অনুরোধ, আপনারা অর্থমন্ত্রীকে বলতে দিন।’ এরপর বসে পড়লেও কিছুক্ষণ পর নাড্ডা ফের উঠে দাঁড়ান। তৃণমূল সাংসদদের কটাক্ষ করে বলেন, ‘ওঁদের তো বাংলার মানুষকে জবাব দিতে হবে না, জবাব দিতে হবে নিজেদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাই ওঁরা এই আচরণ করছেন।’