ভাঙড়ে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ছে, উদ্বিগ্ন জেলা প্রশাসন

ভাঙড়ে ডেঙ্গির সংক্রমণ উদ্বেগজনক মাত্রায় পৌঁছেছে। এ বছর ভাঙড়-১ ও ভাঙড়-২ ব্লকের মোট ১৯টি এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধ্যেই তিনশো ছাড়িয়েছে। ভাঙড়-২ ব্লকের দুটি পঞ্চায়েতে গত শনিবার এক দিনেই আট জন নতুন ডেঙ্গি রোগী শনাক্ত হওয়ার পর পরিস্থিতি আরও চিন্তার বাড়িয়েছে। ভগবানপুর, পোলেরহাট-১, চালতাবেড়িয়া, নারায়ণপুর, প্রাণগঞ্জ ও জাগুলগাচি অঞ্চলে দ্রুত হারে রোগ ছড়াচ্ছে। স্বস্ত্যয়নগাছি ও খয়েরপুর গ্রামে তিন জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। এই পরিস্থিতিতে ব্লক ও জেলা প্রশাসনের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ায় আলিপুরে জেলা পরিষদ ভবনে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়।

জেলা প্রশাসনের দাবি, শীত পুরোপুরি না নামায় এখনও মশার উৎপাত বেশি। নিচু জমি, অপর্যাপ্ত নিকাশি, কচু ও কলাগাছের আধিক্য এবং প্লাস্টিক-থার্মোকলের জঞ্জাল ডেঙ্গিবাহী মশার লার্ভা বৃদ্ধির জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছে। নিউটাউন লাগোয়া সাতুলিয়া, জিরানগাছা, খয়েরপুর ও স্বস্ত্যয়নগাছি এলাকায় ঘরে ঘরে জ্বর ছড়াচ্ছে। গত কয়েক দিনে মানোয়ারা বিবি, বদরুদ্দিন মোল্লা, সারুফ মোল্লা, মমতাজ বিবি, আলিনুর মোল্লা এবং ১৪ বছরের মাজিবুল হক-সহ কয়েকজন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। কেউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও বেশিরভাগই বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, পরিস্থিতি খারাপ হলেও প্রশাসনের উদ্যোগ যথেষ্ট নয়। দুই ব্লকের গ্রামীণ হাসপাতালের আউটডোরে প্রতিদিন চার থেকে পাঁচশো রোগীর ভিড় দেখা যাচ্ছে, যাদের অধিকাংশই জ্বর ও সর্দি-কাশিতে ভুগছেন। খয়েরপুর গ্রামে জ্বরে আক্রান্ত ফরিদা বিবির জানিয়েছেন, ‘প্রায় প্রতিটি বাড়িতে জ্বর দেখা দিচ্ছে, সবাই আতঙ্কে আছি।’ সোনা কর্মকার অভিযোগ করেন, ‘মশা নিয়ন্ত্রণে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ বা কীটনাশক স্প্রে প্রায় হয়ই না।’ যদিও জিরানগাছা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিএমওএইচ সৌম্যশঙ্খ ঘাঁটি বলেন, ‘ভাঙড়ের কিছু কিছু এলাকায় জ্বরের প্রাদুর্ভাব ঘটছে এবং কয়েকজনের রক্তের নমুনায় ডেঙ্গির উপসর্গ ধরা পড়েছে ঠিকই, তবে পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আছে।’