• facebook
  • twitter
Friday, 12 December, 2025

‘মানবিক দিক থেকে বিবেচনা করুন’, সোনালি প্রসঙ্গে কেন্দ্র ও রাজ্যকে সুপ্রিম কোর্ট

প্রধান বিচারপতি এ প্রসঙ্গে বলেন, 'আমরা সংবাদপত্র পড়ার সময় পাই না। তবে বিচারাধীন কোনও বিষয়ে রানিং কমেন্ট্রি করা উচিত নয়। অর্ধসত্য লেখা জটিলতা বাড়িয়ে তোলে।'

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

অন্তঃসত্ত্বা সোনালি বিবি দেশে ফিরতে পারলেও বাংলাদেশে আটকে রয়েছেন সোনালি বিবির স্বামী-সহ ৪ জন। এঁদের ফিরিয়ে আনতে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ চাইলেন সোনালির বাবা ভদু শেখের আইনজীবী সঞ্জয় হেগড়ে। শুক্রবার প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত সোনালি বিবির ভারতে প্রত্যাবর্তন সংক্রান্ত খবরাখবর নেন। এরপর তিনি প্রশ্ন করেন, ‘সোনালি বিবিকে দেশে ফেরানো হয়েছে?’ তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে? তাঁর কোনও আর্থিক সাহায্য লাগবে?’ এরপর প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘যদি সোনালি বিবির কোনও আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন হয়, তবে রাজ্য ও কেন্দ্র যেন মানবিক দিক থেকে বিবেচনা করে।’ এতে সম্মতি জানান রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল এবং কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। আগামী ৬ জানুয়ারি মামলার সম্ভাব্য শুনানির দিন।

ছয় মাস পর দেশে ফিরেছেন বীরভূমের সোনালি বিবি এবং তাঁর ৮ বছরের সন্তান। কিন্তু বাংলাদেশে এখনও আটকে রয়েছেন তাঁর স্বামী দানিশ, পাইকরের তরুণী সুইটি এবং সুইটির ২ সন্তান। তাঁদের দেশে ফেরানোর দাবিতে শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে সোনালিদের পুশব্যাক মামলাটি ওঠে। মামলার শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত, বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি ভিএম পাঞ্চোলি নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন। এরপর রাজ্য, কেন্দ্র এবং আবেদনকারী – তিন পক্ষের কাছে সমস্ত নথি পেশ করার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এই সমস্ত নথি পাঠানো হবে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে।

Advertisement

ভদু শেখের আইনজীবী সঞ্জয় হেগড়ের তরফে আদালতে বলা হয়. বাংলাদেশের সীমান্তপার ভারতীয় নাগরিকদের জন্য সুরক্ষিত নয়। তিনি বলেন, ‘একজন মহিলা এবং তাঁর শিশু এখনও বাংলাদেশে আটকে। তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন আরও ২ জন। দ্রুত ব্যবস্থা নিক কেন্দ্রীয় সরকার।’

Advertisement

এদিন শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল আদালতে জানান, রাজ্যের কাছে প্রত্যেকের বৈধতা প্রমাণের নথি রয়েছে। তখন সলিসিটর জেনারেল তীর্যক মন্তব্য করলে সিব্বল বলেন, ‘সোনালি, সুইটিদের বাংলাদেশে পাঠানোর আগে আপনাদের বৈধ নথিপত্র খতিয়ে দেখার প্রয়োজন ছিল। ৩০ দিন কোনও ভেরিফিকেশন করেননি।’

এদিন আদালতে সোনালি বিবির সাক্ষাতকার একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত হওয়ার বিষয়টি উত্থাপন করেন সলিসিটর জেনারেল। তিনি অভিযোগ করেন, ‘একটি সংবাদমাধ্যম বিরূপ মতাদর্শ তৈরির চেষ্টা করছে। ঘটনাটিকে প্রভাবিত করা হচ্ছে।’

প্রধান বিচারপতি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা সংবাদপত্র পড়ার সময় পাই না। তবে বিচারাধীন কোনও বিষয়ে রানিং কমেন্ট্রি করা উচিত নয়। অর্ধসত্য লেখা জটিলতা বাড়িয়ে তোলে।’ জবাবে কপিল সিব্বল বলেন, ‘সারা বিশ্বেই সংবাদমাধ্যম মতপ্রকাশ করে থাকে। পাল্টা মতাদর্শ থাকতেই পারে।’

প্রসঙ্গত, গত মে মাসে প্রশাসনের নির্দেশে বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হয়েছিল সোনালি বিবিদের। এরপরেই শুরু হয় চাপানউতোর। সোনালির বাবা অভিযোগ করেন, তাঁরা বাংলার বাসিন্দা, মেয়ের জন্মও বাংলায়, তবু কেন তাঁদের বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই বিষয়টি গড়ায় আদালত পর্যন্ত। সন্তান দেশে ফিরলেও, স্বামী-সহ বাকিদের ফেরার অপেক্ষায় এখন দিন গুনছেন সোনালি বিবি ও তাঁর ৮ বছরের সন্তান।

Advertisement