বহুতল আবাসনগুলিতে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র তৈরিতে আরও একধাপ এগোল কমিশন

ভোট শতাংশ বাড়ানোর জন্য পশ্চিমবঙ্গে আরও বেশি সংখ্যক ভোটগ্রহণ কেন্দ্র বা পোলিং স্টেশন তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কমিশন। রাজ্যে এখন আছে প্রায় ৮১ হাজার বুথ। তা বেড়ে হতে চলেছে পঁচানব্বই হাজারের কাছাকাছি। কমিশন জানিয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গের বস্তি এলাকা, বহুতল আবাসন, গেটেড কমপ্লেক্সের মতো জায়গায় ভোটগ্রহণ কেন্দ্র তৈরি করতে হবে।

এবার নিজের সেই সিদ্ধান্তে আরও একধাপ এগিয়ে রাজ্যের বহুতল আবাসনগুলিতে পৃথক ভোটকেন্দ্র তৈরি করা নিয়ে এ বার জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক (ডিইও)-দের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিল নির্বাচন কমিশন।কমিশন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতা উত্তর ও দক্ষিণ, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা নির্বাচনী আধিকারিক (ডিইও)-দের নিয়ে বৈঠক হওয়ার কথা।  পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) মনোজকুমার আগরওয়ালের দপ্তরে এই বৈঠক হওয়ার কথা। রাজ্যের  ডিইও-দের সঙ্গে বৈঠক করতে এদিনই কলকাতায় আসছেন ডেপুটি কমিশনার জ্ঞানেশ ভারতী।

বহুতল আবাসনে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র নিয়ে কমিশনের সিদ্ধান্তকে বিজেপি স্বাগত জানালেও আগেই আপত্তি জানিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। গত মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে জোড়া চিঠি লিখে প্রশ্ন তুলেছিলেন, বুথ সরকারি বা আধা-সরকারি জায়গায় হওয়াই দস্তুর, আবাসনে কী ভাবে ভোটকেন্দ্র হতে পারে? কিন্তু এ বিষয়ে কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই আলোচনা না-করার সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। কমিশনের তরফে আগেই বহুতলে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র তৈরি করা নিয়ে জেলাশাসকদের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।


তবে বর্তমানে নতুন ভোটগ্রহণ কেন্দ্র তৈরিতে মাত্র দু’টি আবেদন জমা পড়ে প্রশ্নের মুখে জেলাসক থেকে শুরু করে ডিইও-রা। কমিশন অবশ্য ডিইওদের উদাসীনতাকে দায়ী করেছে নতুন ভোটগ্রহণ কেন্দ্র তৈরি করা নিয়ে। কমিশন সরাসরি জানিয়েছে, এই কাজে তাঁদের সমীক্ষার অভাব রয়েছে। রাজ্যের সিইও-কে চিঠি পাঠিয়ে বলা হয়, ডিইও-দের নতুন করে সমীক্ষা করে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রস্তাবিত বুথের তালিকা জমা দিতে হবে। অন্যথায় কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়। বুধবার সেই সময়সীমা শেষ হচ্ছে। তার আগেই চার ডিআরও-কে নিয়ে বৈঠকে বসবেন নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি।

প্রসঙ্গত, গত দু’দশকে কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার বেশ কিছু বিধানসভা কেন্দ্রে বহুতল আবাসনের সংখ্যা মাত্রাতিরিক্ত হারে বেড়েছে। রাজনৈতিক দলগুলির হিসাব বলছে, কলকাতার ক্ষেত্রে এই বহুতলবাসীরা মোট ভোটারের ৮-১০ শতাংশ। কিন্তু এই ৮-১০ শতাংশের বেশিভাগ বাসিন্দাই ভোটের দিনে নিরাপত্তার অভাব বোধে ভোটকেন্দ্রে যান না বলে প্রশ্ন তোলা হয় কমিশনের তরফেই। তাই কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের ভাবনা ছিল, কোনও আবাসনে ৩০০-র বেশি ভোটার থাকলে সেই আবাসন চত্বরের ভিতর পৃথক ভোটকেন্দ্র তৈরি করে দেওয়া হবে। ২৫০টি পরিবার অথবা ৫০০ জন ভোটার রয়েছেন, এমন গ্রুপ হাউজিং সোসাইটি, কলোনি, বস্তি এলাকাতেও ভোটকেন্দ্র তৈরির বিষয়ে সমীক্ষা করতে হবে ডিইও-দের।