বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক, দিল্লি যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও নরেন্দ্র মােদি (File Photo: Twitter/PIB)

কেন্দ্রে বিজেপি সরকার গঠনের পর এই প্রথম প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে দিল্লি যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিকালে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেবেন তিনি। বুধবার বিকাল সাড়ে চারটে নাগাদ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসার সম্ভাবনা রয়েছে তাঁর। মুখ্যমন্ত্রীর এই আচমকা দিল্লি সফরের পিছনে রাজনৈতিক না প্রশাসনিক কোন উদ্দেশ্য কাজ করছে, সেটা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে।

দিল্লিতে তিনি ২০ তারিখ পর্যন্ত থাকতে পারেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পাশাপাশি একাধিক রাজনৈতিক কর্মসূচিও রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর বলে জানা গিয়েছে। নবান্নসূত্রে খবর, সপ্তাহখানেক আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই প্রেক্ষিতে এই বৈঠকের কথা জানানাে হয় প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে।

২০১৮ সালের ২৫ মে শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে। দুজনের সাক্ষাৎ ঘটেছিল। এর প্রায় দেড় বছর বাদে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর এই বৈঠক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বৈঠকে দুজনের মধ্যে আলােচনায় একাধিক বিষয় উঠে আসতে পারে। পাশাপাশি রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতির বিষয়টিও উঠে আসার সম্ভাবনা প্রবল।


রাজ্যে একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে। কথা দিয়েও কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দের কথা বলা হয়েছিল, সেটা না দেওয়ার রাজ্যকেই এই পরিকল্পনাগুলির জন্য অতিরিক্ত ব্যয়ভার বহন করতে হচ্ছে।

নবান্নসূত্রে আরও খবর, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে একশােদিনের কাজের বিষয়টিও গুরুত্বপেতে পারে। বর্তমানে একশাে দিনের কাজের টাকা ঠিক সময়ে না পাওয়ায় অনেকেই আর এই নিয়ে খুব একটা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। দু থেকে তিনমাস পরে টাকা আসছে। আর যে কারণে সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে একশাে দিনের কাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের।

অন্যদিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে শুরু করে স্মৃতি ইরানি রাজ্যে এনআরসি চালু করার কথা বলেছে। আর এই নিয়ে তুমুল বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়েছেন, কোনও অবস্থাতেই রাজ্যে এনআরসি চালু করা যাবে না।

বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীদের মন্তব্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নালিশ জানাতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী বলে জানা গিয়েছে। এছাড়া এনআরসি এবং ব্যাঙ্কগুলির সংযুক্তিকরণের বিষয়টি নিয়েও আলােচনা হবার সম্ভাবনা প্রবল। একইসঙ্গে রাজ্যের আর্থিক প্যাকেজ নিয়ে বেশ কিছু দাবি জানাতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্র যাতে রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতির হালহকিকতের কথা ভেবে রাজ্যের জন্য বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের ব্যবস্থা করে সেই দাবিও জানাতে পারেন তিনি।

সারদা মামলা নিয়ে কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে খুঁজছে সিবিআই। তদুপরি সামনেই বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে সম্মুখ সমরে নামছে তৃণমূল। এমতাবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর একান্ত বৈঠক বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে।