চন্দননগরে কর্মক্ষেত্রে হেনস্থার অভিযোগে যুবতীর গঙ্গায় ঝাঁপ, গয়নার দোকানের মালিক দম্পতি আটক

কর্মক্ষেত্রে মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে গঙ্গায় ঝাঁপ দিলেন মানালি ঘোষ (২৫) নামে এক যুবতী। সোমবার সকালে ঘটে এই মর্মান্তিক ঘটনা। এখনও পর্যন্ত তাঁর সন্ধান মেলেনি। পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী গঙ্গায় বোট ও ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মানালি ঘোষ চন্দননগরের বৌবাজার বটতলার বাসিন্দা। তিনি গত তিন বছর ধরে বাগবাজার জিটি রোডের ধারে একটি গয়নার দোকানে ‘সেলস গার্ল’ হিসেবে কাজ করতেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ওই কর্মস্থলেই তাঁকে হেনস্থার মুখে পড়তে হয়। ঘটনার পরেই দোকানের মালিক সঞ্জয় দাস ও তাঁর স্ত্রী মমতা দাসকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার সকালে বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে মানালি জানিয়েছিলেন, তিনি চাকরি ছেড়ে দিচ্ছেন। কিছুক্ষণ দোকানে থাকার পর স্বামী সত্যজিৎ রায়কে ফোন করেন। তারপর চন্দননগর বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে বসেন। অনুমান করা হচ্ছে, সেখানেই তিনি একটি চিঠি লেখেন এবং পরে চন্দননগর জোসেফ স্কুলের উল্টো দিকে গঙ্গায় ঝাঁপ দেন। নদীর পারে তাঁর মোবাইল ফোন এবং একটি চিঠি পাওয়া গেছে। পুলিশ চিঠিটিকে আত্মহত্যাপত্র বলে মনে করছে, যেখানে তিনি কর্মক্ষেত্রে অপমান ও হেনস্থার অভিযোগ তুলেছেন।
মানালির বাবা মানস ঘোষ বলেন, ‘আমার মেয়েকে কর্মক্ষেত্রে মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। সেই অপমানই ওকে এই চরম পদক্ষেপে ঠেলে দিয়েছে।’ তবে দোকানের মালিক দম্পতি দাবি করেছেন, মানালি দীর্ঘদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন বছর আগে মানালির রেজিস্ট্রি বিয়ে হয়েছিল। আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি ছিল তাঁদের সামাজিক বিয়ের নির্ধারিত তারিখ। পরিবারের সদস্যদের কথায়, ‘বিয়ের প্রস্তুতি চলছিল, কেউ ভাবতেই পারেনি এমনটা ঘটবে।’ তাঁর স্বামীর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘দোকানে কিছু সমস্যা চলছিল। আজ সকালে সেখানে ঝামেলাও হয়।
তারপর ও ফোনে বলেছিল, এই দোকানে আর কাজ করব না।’ কিন্তু তাঁর স্বামী পৌঁছনোর আগেই সব শেষ হয়ে যায়।
চন্দননগর থানার পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার নেপথ্যের কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দোকানের অন্যান্য কর্মচারীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। গঙ্গায় তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে।