বাংলার সিইও দপ্তর পাহারায় কেন্দ্রীয় বাহিনী

প্রায় এক মাস আগে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তরের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল নির্বাচন কমিশন। সেই উদ্বেগের ভিত্তিতেই কলকাতায় সিইও দপ্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বদলের নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। নির্দেশ মেনে শনিবার থেকে দপ্তরের নিরাপত্তার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। এতদিন এই দায়িত্ব ছিল রাজ্য পুলিশের হাতে।

সূত্রের খবর, সিইও দপ্তরকে ওয়াই ক্যাটাগরির নিরাপত্তার আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে। প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ জন জওয়ানের একাধিক দল পালা করে দায়িত্ব পালন করবে। সব মিলিয়ে এক সেকশন বাহিনী মোতায়েন থাকতে পারে। মূলত সিআইএসএফের জওয়ানরাই নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। সাধারণত ওয়াই ক্যাটাগরি নিরাপত্তায় ৮ থেকে ১১ জন জওয়ান এবং ১–২ জন কমান্ডো থাকেন।

মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক, দপ্তরের আধিকারিক ও কর্মীদের সুরক্ষার বিষয়টি তুলে ধরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে চিঠি পাঠায় নির্বাচন কমিশন। গত ১৮ ডিসেম্বর পাঠানো সেই চিঠিতে কমিশনের তরফে জানানো হয়, এসআইআর চলাকালীন ২৪ ও ২৫ নভেম্বর সিইও দপ্তরের সামনে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে। একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত কিছু বুথ লেভেল অফিসার ও কর্মীদের ভিড় দপ্তরের সামনে জড়ো হয়, যার ফলে আধিকারিক ও কর্মীদের নিরাপত্তা গুরুতর ঝুঁকির মুখে পড়ে।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এসআইআর প্রক্রিয়ার সংবেদনশীলতা এবং ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিতে ভবিষ্যতেও এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বর্তমানে সিইও দপ্তরটি কলকাতার নেতাজি সুভাষ রোডে বামার লরি ভবনের ভাড়া নেওয়া অংশে অবস্থিত। তবে নিরাপত্তাজনিত দুর্বলতা, পরিকাঠামোর অভাব ও প্রশাসনিক সমস্যার কারণে খুব শীঘ্রই দপ্তরটি বিবাদী বাগ এলাকার স্ট্র্যান্ড রোডে শিপিং হাউসে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বর্তমান ও নতুন—উভয় দপ্তরেই সারাক্ষণের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা চেয়েছে নির্বাচন কমিশন।


এদিকে নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষকদের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন এসআইআর অবজার্ভার সি মুরুগান। তাঁর অনুরোধের পরেই কমিশন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের আবেদন জানায় বলে মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতায় এসআইআর প্রক্রিয়া পরিদর্শনে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন সি মুরুগান। স্থানীয় তৃণমূল সমর্থক মহিলাদের নেতৃত্বে তাঁকে ঘিরে ধরে প্রতিবাদ জানানো হয়।

এই ঘটনার পর নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি বাংলার সমস্ত রোল অবজার্ভারদের নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠি পাঠান সি মুরুগান। সেই চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয় রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তরেও।