ধর্ষণ, জোর করে গর্ভপাত করানোর অভিযোগে মঙ্গলবার থানায় তলব করা হয়েছিল স্বামী প্রদীপ্তানন্দ মহারাজ ওরফে কার্তিক মহারাজকে। কিন্তু থানায় হাজিরা না দিয়ে সেদিনই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে এফআইআর খারিজের আবেদন জানিয়েছেন তিনি। বুধবার এই মামলার শুনানির কথা ছিল। কিন্তু রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল এই মামলায় সময় চেয়ে আবেদন করেন। তাঁর আবেদন মঞ্জুর করেছেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। বৃহস্পতিবার সকালে মামলাকারীর আইনজীবীকে ফের বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বলেন বিচারপতি। বৃহস্পতিবারই এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে কার্তিক মহারাজের আইনজীবী কৌস্তুভ বাগচী আদালতে জানান, তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। এরপরই মামলা করার অনুমতি দেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। কার্তিক মহারাজকে রক্ষাকবচ দেওয়ার আর্জি জানান তাঁর আইনজীবী। রাজ্যের বক্তব্য, বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন, তাই এখনই কোনও পদক্ষেপ করা হবে না। রাজ্যের এই কথা শুনে বিচারপতি জানান, এখন তিনি এই বিষয়ে কিছু জানাচ্ছেন না। পাশাপাশি সব পক্ষের বক্তব্য জানতে চেয়ে হলফনামা জমা দিতে বলেছেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত।
প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস, প্রতারণা ও জোর করে গর্ভপাত করানোর অভিযোগে গত ২৮ জুন কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে নবগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন এক মহিলা। তিনি জানিয়েছেন, ২০১৩ সালে কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কার্তিক মহারাজ তাঁকে মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানার চাণক্য এলাকায় এক আশ্রমের প্রাইমারি স্কুলে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে শিক্ষিকার পদে চাকরি দেওয়া হয়। স্কুলেই তাঁর থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। একদিন রাতে সেখানে হঠাৎ হাজির হয়ে মহিলাকে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন কার্তিক মহারাজ। সেই সময় বাধ্য হয়ে সেই প্রস্তাব মেনে নেন অভিযোগকারিণী। এরপর থেকে দিনের পর দিন তাঁর উপর শারীরিক নির্যাতন চালাতেন অভিযুক্ত। লাগাতার এরকম চলতে থাকায় এক সময় তিনি সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়েন। এরপর বহরমপুরের একটি নার্সিংহোমে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ও আর এক মহিলার উপস্থিতিতে তাঁর গর্ভপাত করানো হয়। ওই বেসরকারি হাসপাতালের মালিকও ঘটনাটি জানতেন বলে অভিযোগ।
নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার নবগ্রাম থানার পুলিশ বেলডাঙার ভারত সেবাশ্রম সংঘের অফিসে গিয়ে মহারাজকে হাজিরার নোটিশ পাঠায়। মঙ্গলবার সকালে তাঁকে থানায় আসতে বলা হয়েছিল। কিন্তু হাজিরা না দিয়ে এ দিনই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি।