দিলীপ ঘোষের সফর ঘিরে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে রণক্ষেত্র সোদপুর

বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘােষের সফর ঘিরে শনিবার দুই ফুল শিবিরের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল সােদপুর।

Written by SNS Barrackpore | December 1, 2019 3:39 pm

দিলীপ ঘােষ (File Photo: IANS)

বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘােষের সফর ঘিরে শনিবার দুই ফুল শিবিরের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল সােদপুর। অভিযােগ, বিজেপির রাজ্য সভাপতি পৌঁছনাের আগেই কালাে পতাকা নিয়ে পথ আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে নামানাে হয় র‍্যাফ। দীর্ঘক্ষণ পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। যার জেরে এদিনের মত সফর বাতিল করেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাতে নিউবারাকপুর থানার বিলকান্দা ১ পঞ্চায়েতের বােদাই গ্রামের ঘােষপাড়া এলাকায় বিজেপির দলীয় কার্যালয় ভাংচুর ও কর্মীদের মারধরের অভিযােগ উঠেছিল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। এদিন সকালে ভাংচুর হওয়া পার্টি অফিস ও জখম দলীয় কর্মীদের দেখতে আসার কথা ছিল রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘােষের। অভিযােগ, দিলীপ ঘােষ আসার আগেই ওই স্থানে কালাে পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তৃরমূল কর্মীরা। কালাে পতাকা হাতে বিজেপি রাজ্য সভাপতির নামে গাে ব্যাক স্লোগান দিতে থাকেন তারা।

পাল্টা এলাকায় মিছিল করেন বিজেপি কর্মীরা। বিক্ষোভ তুলতে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। আর এরপরেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দুই দলের সমর্থকরা সংঘের্ষে জড়িয়ে পড়ে। অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে সড়ক। ব্যাহত হয় যান চলাচল।

পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে ঘটনাস্থলে যায় বারাকপুর সিটি পুলিশ। পুলিশের সামনেও চলে সংঘর্ষ। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়ে তৃরমূলের কর্মীরা। এরপর নামানাে হয় র‍্যাফ। দীর্ঘক্ষণের চেষ্টায় আয়ত্তে আসে পরস্থিতি। অভিযােগ, দুই দলের সমর্থকরা বেশ কয়েকটি দোকান লক্ষ করে ইট বৃষ্টি শুরু করে। এমনকি বেশ কয়েকটি বাইকে ভাংচুর চালানাে হয়। ঘটনাস্থলে ওঠে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। আর এই ঘটনার পরেই বাগযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে দুই দলের নেতৃত্ব।

বিজেপি জেলা সভাপতি কিশাের করের দাবি, উপনির্বাচনে তৃরমূল জয় পেতেই রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ৩০-৪০ জনের দল বাইকে করে এসে আমাদের দলীয় কার্যালয়ের হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে। আমাদের কর্মী বাদল ঘােষের বাড়িতে চড়াও হয়ে তাঁকে মারধাের করেছে। এদিন দলীয় কমেিদর সাথে দেখা করতে আসার কথা ছিল রাজ্য সভাপতির। কিন্তু তার আগেই তৃণমূল নেতারা সমাজবিরােধীরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা এরপরে তাদের সমর্থকদের বাইক ও দোকান ভাজুর করে পুলিশের উপস্থিতিতে। যদিও তৃণমূল জেলা পর্যবেক্ষক নির্মল ঘােষ জানান গতকাল তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে আক্রমণ চালায় বিজেপি। এর প্রতিরােধ তারা করে। তবে এদিনের ঘটনায় তাদের দল যুক্ত নয়। ওটা বিজেপির গােষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেড়ে ঘটেছে। বিজেপির এক দল চায়নি উপনির্বাচনে দিলীপ ঘােষের নেতৃত্বে প্রাজয়ের পরে তিনি আসুক। তাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে।

এদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি জানান, বারবার বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূল বাহিনী বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের উপর আক্রমণ করছে। বারবার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে অশান্তি ছড়াচ্ছে তৃণমূল। এদিন তার সােদপুরে যাওয়ার কথা ছিল, তা জেনে তৃণমূল এলাকায় অশান্তির পরিবেশ তৈরি করে। যার ফলে সফর বাতিল করতে বাধ্য হয়েছি। যদিও দিলীপ ঘােষের অভিযােগে ভিত্তিহীন বলেই দাবি উত্তর ২৪ পরগণার তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। তাঁর কথায়, তৃণমূল কোনওভাবেই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। গেরুয়া শিবিরের গােষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই ঘটনা। বিজেপি ইচ্ছাকৃত তৃণমূলের নামে অপপ্রচার করছে। ঘটনার পর বেশ কিছুক্ষণ কেটে গেলেও এখনও থমথমে এলাকা। এই ঘটনায় তিনজনকে পুলিশ আটক করেছে বলে জানা গিয়েছে।