চোখের সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় এসেছিলেন চিকিৎসার জন্য কিন্তু আর ফেরা হল না দেশে। মহম্মদ মইনুল আলম, তাঁর বন্ধু ফারহানা ইসলাম তানিয়া এবং জিয়াদ এসেছিলেন। শুক্রবার মধ্যরাতে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল মইনুল এবং তানিয়ার। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছেন জিয়াদ।
পুলিশ সূত্রে খবর, রাত্রে খাওয়া দাওয়া সেরে তাঁরা তিনজন ফুটপাত ধরে হাঁটছিলেন মির্জা গালিব স্ট্রিটের হােটেলে ফেরার জন্য। সেসময় দ্রুতগতিতে আসা একটি গাড়ি এসে ধাক্কা মারে তাঁদের। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় মইনুল এবং তানিয়ার।
ঘটনার পরই তদন্তে নামে পুলিশ। জানা যায় গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন কলকাতার একটি নামি রেস্তোরাঁ মালিকের। পরে জানা যায় ঘাতক জাগুয়ার গাড়িটি সেসময় চালাচ্ছিলেন ওই রেস্তোরাঁর মালিকের ছেলে আরসালান পারভেজ।
এঘটনার পরই শেক্সপিয়র থানার পুলিশ গ্রেফতার করে তাকে। প্রথমে তার বিরুদ্ধে ৩০৪ ধারায় মামলা সাজানাে হয়েছিল, যেটি অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা হলেও জামিনযােগ্য ছিল। কিন্তু পারভেজকে গ্রেফতারের পর ৩০৪ (পার্ট ২) ধারায় মামমলা করে যেটি জামিন অযােগ্য ধারা।
শনিবার ধৃতকে তােলা হয় আলিপুর আদালতে। জানা গেছে, আরসালান পারভেজরা দুই ভাই। দুজনই বিদেশে পড়াশােনা করতে গিয়েছিল। ২০১৪-১৮ সাল পর্যন্ত পারভেজ এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজনেস ম্যানেজমেন্টের পাঠ নিয়েছেন। আখতার তাঁর সংস্থার সবচেয়ে পুরনাে আউটলেট অর্থাৎ পার্ক সার্কাস মােড়ের ‘আরসালান’ এক মালিকানা তাকেই দিয়েছেন।
বেকবাগানের কাছে পারভেজ আখতারদের পারিবারিক বাড়ি। তবে আরসালান পারভেজ থাকতেন সায়েন্স সিটির সামনে একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে। যদিও সেই রাতে তিনি যে জাগুয়ার গাড়িটি চালাচ্ছিলেন সেটি রাখা থাকত বেকবাগানের বাড়িতে। যদিও এবিষয়ে আরসালান রেস্তোরাঁর মালিকের পরিবারের সঙ্গে যােগাযােগ করা হল কোনও মন্তব্য করতে চাননি তাঁরা।
এদিন বিকেলে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা পৌঁছন ঘটনাস্থলে। খতিয়ে দেখেন দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি দুটি ও তার যন্ত্রাংশ। বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাগ্রস্ত দুটি গাড়িই উচ্চ প্রযুক্তির। গাড়ি দুটির মধ্যে ডেটা রেকর্ডরও রয়েছে। সেখান থেকেই গতিবেগ এবং সংঘর্ষের সময় সংক্রান্ত তথ্য উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে। তদন্তের স্বার্থে সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান তদন্তকারীরা।