দূষণের তোয়াক্কা নেই। হাজারো নিষেধাজ্ঞা, কড়া নজরদারির পরেও সোমবারের পর মঙ্গলবারও তিলোত্তমায় ‘উল্লাস’ চলল দেদার বাজি পুড়িয়েই। কালীপুজোর দিন কলকাতার আকাশ ঢেকেছিল কালো ধোঁয়ায়, মঙ্গলেও বিশেষ পরিবর্তন হল না অবস্থার। যার জেরে দীপাবলির আবহে শব্দ ও বায়ু দূষণে আবারও এগিয়ে রইল মহানগর।
একদিকে মণ্ডপে মণ্ডপে তারস্বরে গান, অন্যদিকে শব্দবাজির কান ফাটা আওয়াজ। রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত শব্দমাত্রার যে সীমা বেঁধে দেওয়া আছে, তা বহু জায়গায় অতিক্রম করেছে। মৌন অঞ্চলে শব্দের নির্ধারিত মাত্রা হলো ৪০ ডেসিবেল। কিন্তু বালিগঞ্জ ও লেকটাউনে তা ছিল ৬০ ডেসিবেল। আরও বেশি শব্দ ধরা পড়ল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশেপাশে। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ৬৪ ডেসিবেল, বেথুন কলেজের কাছে প্রায় ৭৩ ডেসিবেল এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রেকর্ড ৭৮ ডেসিবেল পর্যন্ত পৌঁছয় শব্দের মাত্রা। জনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে রাতের বেলা শব্দমাত্রা ৪৫ ডেসিবেল থাকা উচিত। সেখানে ট্যাংরায় তা ছিল ৭৩ ডেসিবেল এবং কালিকাপুরে ৫৮ ডেসিবেল। সবখানেই ‘নিয়ম’ ভাঙা হয়েছে।
Advertisement
শব্দের পাশাপাশি বাতাসও ছিল দূষিত। রাত ১১টার সময়ে বাতাসের গুণমান সূচক (পিএম ২.৫ হিসাবে) ছিল উদ্বেগজনক। বালিগঞ্জে তা ছিল ১৬৯, যা ‘মাঝারি’ দূষণ (১০১-২০০)। যাদবপুরে মাত্রা পৌঁছেছিল ২০৪-এ, যা ‘খারাপ’ গুণমান (২০১-৩০০)। ভিক্টোরিয়াতে তা আরও বেড়ে ২৫৯-এ পৌঁছয়, যা খুবই ক্ষতিকর।
Advertisement
স্বাস্থ্যের জন্য পিএম ২.৫-এর দৈনিক সহনশীল মাত্রা হলো ৬০ মাইক্রোগ্রাম। এই দূষণের একটি বড় কারণ হলো জৈব ও কঠিন বর্জ্য পোড়ানো। বাতাসে ভাসমান এই ধূলিকণা বা পারটিকুলেট ম্যাটার (পিএম)-এর মধ্যে ব্ল্যাক কার্বন ও অন্যান্য দূষক থাকে। এই মাত্রা বৃদ্ধি জনস্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক।
পুলিশের কড়া নজরদারি কে বুড়ো আঙুল দেখিয়েও চলেছে মজা। তবে একাধিক জায়গায় বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বেআইনি বাজি, করা হয়েছে জরিমানাও। আতঙ্কে রাত কেটেছে পথকুকুর-অবলা প্রাণীদের। যদিও, কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মার দাবি, দেশের অন্যান্য বড় শহরের তুলনায় কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কলকাতা।
Advertisement



