• facebook
  • twitter
Friday, 12 December, 2025

মালদায় মিম-এর উত্থান ঘিরে নতুন সমীকরণ, জানুয়ারিতে রাজ্যে আসতে পারেন ওয়াইসি

কেন মালদা মিম-এর প্রাথমিক টার্গেট? বিশেষজ্ঞদের মতে, জেলায় ১২টি বিধানসভা কেন্দ্র। গতবার মিম লড়েছিল শুধু মালতীপুরে।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

রাজ্যে বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। আর সেই ভোটের আগে মালদা জেলাকে পাখির চোখ করছে আসাদউদ্দিন ওয়াইসি-র নেতৃত্বাধীন ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমীন’ বা মিম। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই জেলায় ইতিমধ্যেই ২০টির বেশি কার্যালয় খুলে ফেলেছে দলটি। কার্যত ‘উল্কা উত্থান’ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপির সঙ্গে ‘সেটিং’ করেই মিম-কে বাড়ানো হচ্ছে রাজ্যে। সংখ্যালঘু ভোট কেটে গেরুয়া শিবিরকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার ছক। যদিও বিজেপি দাবি উড়িয়ে দিয়েছে, আর মিম নেতৃত্বের কথায়, ‘সেটিং’ তত্ত্ব নিছক অলীক।

দলীয় সূত্রের খবর, আগামী জানুয়ারির প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহেই মালদা ও মুর্শিদাবাদ সফরে আসতে পারেন ওয়াইসি। জেলায় ইতিমধ্যেই দলীয় কর্মীদের সক্রিয়তা বেড়েছে। ওয়াকফ–সংক্রান্ত ইস্যুতে মালদা জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে বিক্ষোভও দেখিয়েছে মিম। জেলা সভাপতি রেজাউল করিম জানিয়েছেন, ‘মালদায় ২০টি দলীয় কার্যালয় খোলা হয়েছে। এই মাসেই শুরু হচ্ছে আমাদের অধিকার যাত্রা।’ তাঁর দাবি, আসন্ন ভোটে আট থেকে দশটি আসনে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে মিম, যদিও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আলোচনার ভিত্তিতে নেওয়া হবে।

Advertisement

এই প্রেক্ষাপটে তৃণমূল–বিজেপির মধ্যে সংঘাত আরও বেড়েছে। সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর ‘নিজের টাকায় বাবরি মসজিদ তৈরি’ প্রসঙ্গে মন্তব্য করায় দুই শিবিরই তাঁকে skধিকার করেছে। সেখানে মিম নেতৃত্ব প্রকাশ্যে তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে বলে, ‘ব্যক্তিগত অর্থে মসজিদ নির্মাণে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’ রাজনৈতিকভাবে এই অবস্থানও জল্পনা বাড়িয়েছে।

Advertisement

কেন মালদা মিম-এর প্রাথমিক টার্গেট? বিশেষজ্ঞদের মতে, জেলায় ১২টি বিধানসভা কেন্দ্র। গতবার মিম লড়েছিল শুধু মালতীপুরে। হিন্দু অধ্যুষিত গাজল, ইংরেজবাজার, পুরাতন মালদা ও হবিবপুর দখলে রেখেছিল বিজেপি। অন্যদিকে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত হরিশ্চন্দ্রপুর, চাঁচল, মালতিপুর, সুজাপুর ও মোথাবাড়ি ছিল তৃণমূলের দখলে। বৈষ্ণবনগর, মানিকচক ও রতুয়া—এই তিন কেন্দ্রেই হিন্দু–সংখ্যালঘু জনসংখ্যা প্রায় অর্ধেক-অর্ধেক। সেখানে গতবার জয়ী হয়েছিল তৃণমূল।

পুরো জেলায় তৃণমূল পেয়েছিল আটটি আসন, চারটি গিয়েছিল বিজেপির ঝুলিতে। ফলে সংখ্যালঘু ভোটের নতুন হিসেব কষতে মিম-এর আনাগোনা রাজনৈতিক মহলে নতুন সমীকরণ তৈরি করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সংখ্যালঘু ভোটের কিছু অংশ যদি মিম-এর দিকে সরেও যায়, তাতে মালদার বহু কেন্দ্রে লড়াই ত্রিশঙ্কু হয়ে উঠতে পারে। আর তাই এই জেলার রাজনৈতিক ওঠা–নামা এখন সকলের নজরে।

Advertisement