সন্দেশখালিকে শান্ত করতে মানুষের পাশে দাঁড়ালেন দুই মন্ত্রী

Written by SNS February 25, 2024 1:49 pm

সন্দেশখালি, ২৫ ফেব্রুয়ারি: আজ, রবিবার ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল সন্দেশখালি। শেখ শাহজাহানের গ্রেপ্তারের দাবিতে সোচ্চার হন গ্রামের মহিলারা। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এবং মানুষের অভাব অভিযোগ শুনতে বিতর্কিত বেড়মজুর গ্রামে যান রাজ্যের দুই মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক ও সুজিত বসু। সেখানে গ্রামের মানুষের সঙ্গে মিশে যান তাঁরা। একটি হরিনাম যজ্ঞ অনুষ্ঠানেও যোগ দেন তাঁরা। কীর্তন শিল্পীদের সঙ্গে খোল বাজিয়ে কীর্তন করেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। দমকল মন্ত্রী সুজিত বসুও এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মেতে ওঠেন। সেখানে স্থানীয় মানুষ জনের সুবিধা-অসুবিধার খোঁজ খবর নেন তাঁরা। মানুষের পাশে থাকার বার্তা দেন দুই মন্ত্রী। কিন্তু, সেখানে শাহজাহানের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা।

মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করেন। পার্থ বাবু বলেন, মানুষ আনন্দে আছে। পার্থ বলেন, ‘‘আমাদের কাজ মানুষের পাশে থাকা। কোনও ব্যক্তির পাশে দল বা সরকার নেই।’’  সেচমন্ত্রী পার্থের দাবি, মানুষের সমস্ত অভাব, অভিযোগ শুনতেই তাঁদের পাঠিয়েছেন দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সকালে বেড়মজুরে যখন হরিনাম সংকীর্তনের আসর মাতাচ্ছেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী পার্থ এবং সুজিত, তখন একই এলাকায় মহিলারা মন্ত্রীদের কাছে অভাব, অভিযোগের কথা জানাতে ভিড় করেন। সংবাদমাধ্যমের সামনে তাঁরা শাহজাহান বাহিনীর নামে ক্ষোভ উগরে দেন।

এদিকে আজই সন্দেশখালিতে যাওয়ার চেষ্টা করে প্রাক্তন বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দল। মাঝপথে ভোজেরহাটে তাঁদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এলাকায় নতুন করে যাতে অশান্তির সৃষ্টি না হয়, সেজন্য তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে সূত্রের খবর। এদিন ভোজেরহাট হয়ে সন্দেশখালি আসছিল ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম। সেই দলের নেতৃত্বে আছেন পটনা হাই কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এল নরসিংহ রেড্ডি। এদিকে সেই দলকে রুখতে পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা আগে থেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের সদস্যরা সন্দেশখালিতে ঢুকতে চাইলে তাদেরকে প্রথমে বাধা দেয় পুলিশ।  রবিবার ১৪৪ ধারা জারির কারণে সন্দেশখালির ৫২ কিলোমিটার দূরে ভোজেরহাট এলাকাতেই আটকানো হয় ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমকে। এর আগে জাতীয় মহিলা কমিশন, জাতীয় তফশিলি কমিশন, জাতীয় আদিবাসী কমিশন এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সন্দেশখালিতে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এসেছে। একাধিক কমিশন রাষ্ট্রপতি শাসনের সুপারিশও করেছে। তবে এবার সন্দেশখালির পথে বাধা প্রাপ্ত হল কেন্দ্রীয় সত্য সন্ধানী দল। এরপর দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভোজেরহাটে গ্রেপ্তার করা হয় কমিটির সদস্যদের।

অন্যদিকে বেড়মজুরে ফের অজিত মাইতির বাড়িতে হানা দিল গ্রামবাসীরা। কয়েকদিন আগে গ্রামবাসীরা তাঁর বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন অজিত মাইতি। সেজন্য ফের তার ওপর হামলা চালায় গ্রামের মহিলারা। আক্রমণের পর ভয় পেয়ে একটি বাড়িতে ঢুকে পড়ে আত্মরক্ষা করার চেষ্টা করেন তৃণমূল নেতা অজিত মাইতি। জানা গিয়েছে, একজন সিভিক পুলিশের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন অজিত মাইতি। ওই বাড়িতে ঢুকে তিনি আত্মরক্ষার তাগিদে কলাপসিবল গেট আটকে দেন। তিনি বলেন,’আমি আতঙ্কে আছি। আমার পরিবার আতঙ্কে আছে। সেজন্য আমি অনুমতি নিয়ে এই বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি।’