‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’-তে মুশকিল আসান, স্বাস্থ্য পরিষেবার ৭২ শতাংশ সমস্যা সমাধান

২০২৩ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে শুরু হওয়া টেলিফোনে জনসংযোগ কর্মসূচি ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’-তে রাজ্য জুড়ে ব্যাপক সাড়া মেলে। মাত্র দু’বছরে উপকৃত হয়েছেন অগণিত মানুষ। কেবল একটা ফোন কলেই হয়েছে মুশকিল আসান। নবান্ন থেকে প্রকাশিত ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’ শীর্ষক ত্রৈমাসিক পত্রিকা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কর্মসূচির মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরিষেবা সংক্রান্ত ৭২% সমস্যা সমাধান হয়েছে। তাছাড়াও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত ২০% ও বিপর্যয় মোকাবিলা সংক্রান্ত ৫% সমস্যার সমাধান হয়েছে। সুন্দরবনের নিখোঁজ ছাত্রী উদ্ধার থেকে জীবনদায়ী চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’। এই প্রকল্পে মুখ্যমন্ত্রী মমতার বার্তা, ‘আপনার অভিযোগ বা মতামত সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আমাদের জানান, আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করব আপনাদের সমস্যা সমাধান করার।’ এই প্রকল্পে উপকৃত হয়েছেন, এমন কিছু ঘটনা এবার ব্যাখ্যা করা যাক।

২০২৪ সালে পূর্ব বর্ধমানের বাসিন্দা পূর্ণেন্দু মন্ডলের সেরিব্রাল স্ট্রোক হওয়ায় তাঁর দিশেহারা দাদা সুব্রত মন্ডল নিজে সমস্যা জানান ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’র হেল্পলাইনে। প্রশাসনের তৎপরতায় তাঁকে আরজি কর হাসপাতালে এনে চিকিৎসা শুরু হয়। বর্তমানে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে অপহরণ হওয়া এক ছাত্রীর মা যোগাযোগ করেছিলেন সংশ্লিষ্ট হেল্পলাইনে। মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরের গ্রিভ্যান্স সেলের তৎপরতায় সুন্দরবন জেলা পুলিশের তরফ থেকে ছাত্রীকে উদ্ধার এবং অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। রায়গঞ্জের চোদ্দ বছরের বিশেষ ভাবে সক্ষম শাহেদের জন্য হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা করে দিয়েছে ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’। চলতি বছরেই পথ দুর্ঘটনায় আহত সোনারপুরের দিপু সরকার এই হেল্পলাইনে যোগাযোগ করতেই পেয়েছেন জীবনদায়ী চিকিৎসা। ঠিক একই ভাবে এসএসকেএম হাসপাতালে পর্যাপ্ত বেডের ব্যবস্থা করে দিয়ে দশ মাসের শিশু নায়েক আনসারির প্রাণ বাঁচাল ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’।

এছাড়াও ব্লাড ক্যান্সারের রোগী মুর্শিদাবাদের কুরসিমা বিবি এবং নিউমোনিয়ার রোগী উত্তর ২৪ পরগনার সুব্রত মন্ডল উপকৃত হয়েছেন হেল্পলাইনে যোগাযোগ করতেই। বীরভূমের কুসুলিয়ার বড় রাস্তার কাছের ট্রান্সফরমারে সমস্যা দেখা দিতেই সকালে যোগাযোগ করা হয় ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’তে। বিকেলের মধ্যেই মুশকিল আসান। এখানেই শেষ নয়, উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ থেকে অভিযোগ আসতেই মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরের গ্রিভ্যান্স সেলের তৎপরতায় স্তব্ধ হল নাবালিকার বাল্যবিবাহও। সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়া থেকে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সমস্যার সমাধানে খুশি হয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন মুর্শিদাবাদের মনোয়ারা বিবি, পূর্ব বর্ধমানের কার্তিক মন্ডল, পশ্চিম মেদিনীপুরের শ্রাবন্তী মজুমদার-সহ অনেকেই। সংশ্লিষ্ট কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, ‘পিছিয়ে পড়বে না কেউ, কেউ যাবে না বাদ।’


২০২৩-এ এই প্রকল্পের সূচনা করে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ‘সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সময় দেব। ফোন করে আপনারা অভিযোগ জানাতে পারবেন। আমরা সেই সমস্যার সমাধান করব যথাসাধ্য।’ তার বাস্তব রূপায়ণ দেখছে আজ গোটা বাংলা।