মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে ৩১তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধন করলেন অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা। বৃহস্পতিবার ধনধান্য স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে প্রদীপ জ্বালিয়েছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। শত্রুঘ্ন সিনহা এবং আরতি মুখোপাধ্যায়কে বঙ্গবিভূষণ সম্মানে সম্মানিত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। উপস্থিত ছিলেন রমেশ সিপ্পী, সুজয় ঘোষ, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, দেব, রাজ চক্রবর্তী প্রমুখ। সঞ্চালনা করেছেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় ও জুন মালিয়া। দেশ-বিদেশের অতিথিরাও উপস্থিত ছিলেন।
ষাটের দশকের শেষভাগে মাধবী মুখোপাধ্যায়, শর্মিলা ঠাকুর, অপর্ণা সেন, দেবশ্রী রায়, তনুজাদের মতো তাবড় অভিনেত্রীদের নেপথ্য কণ্ঠে শোনা গিয়েছে আরতি মুখোপাধ্যায়ের গান। সেই শিল্পীকে সম্মানিত করলেন মমতা। প্রবীণ গায়িকাকে বঙ্গভূষণে ভূষিত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আরতিদি একের পর এক গান উপহার দিয়েছেন। কিন্তু আমরা কোনও সম্মান তুলে দিতে পারিনি।
আজ তাঁর হাতে বঙ্গবিভূষণ তুলে দিলাম। এই ‘মাটির দান’ তুলে দিতে পেরে আমরা খুব খুশি। আমরা কৃতজ্ঞ আরতিদি আমাদের দেওয়া এই সম্মান গ্রহণ করেছেন। সুস্থ থাকুন, গানে থাকুক।’ মঞ্চে পালটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়ে আরতি মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘আমি খুব ভালোবেসে নিয়েছি। মমতা তুমি যেভাবে সকলের পাশে থাকো, সেটা সত্যিই অনুপ্রেরণা জোগায়। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তোমার এই পদক্ষেপও কুর্নিশযোগ্য।’ প্রবীণ গায়িকা আরও বলেন, ‘আমি যখন মমতার হাত থেকে সম্মান নিলাম, কেঁদে ফেলেছি। তুমি ভালো থেকো।’
পাশাপাশি ফিল্মোৎসবের মঞ্চে বঙ্গবিভূষণ সম্মান পেয়ে আপ্লুত ‘বিহারীবাবু’ খ্যাত বলিউড অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা। তিনি বলেন, ‘৫ বছর ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে আসছি। বঙ্গবিভূষণ পেয়ে আমি আপ্লুত। আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ধন্যবাদ। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। তাঁর আমন্ত্রণে তো আসতেই হয়। কলকাতায় এত বড় উৎসবের অংশ হতে পেরে আমি আপ্লুত।’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, সিনেমা একটি সর্বজনীন ভাষা, যা সীমানা পেরিয়ে মানুষকে একত্রিত করে। এই ভাবনাকে সঙ্গী করে প্রতি বছর পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন করে। এই উৎসব সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের এক বিশাল সমাবেশ। ধনধান্য অডিটোরিয়ামে ৩১তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনের করতে পেরে পেয়ে আমি সম্মানিত বোধ করছি। বিশ্বের বিশিষ্ট অতিথি, বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা, অভিনেতা এবং শিল্পীরা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এবারের উৎসবে ৩৯টি দেশের ২১৫টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। যার মধ্যে ১৮৫টি পূর্ণদৈর্ঘ্য এবং ৩০টি স্বল্পদৈর্ঘ্য ও তথ্যচিত্র রয়েছে। ২০টি প্রেক্ষাগৃহে চলচ্চিত্রগুলো দেখানো হবে।