করোনায় আক্রান্ত ১২৫৯, মৃতের সংখ্যা ৬১, রিপোর্টিং সিস্টেম ঠিক ছিল না, মানল নবান্ন

প্রতিকি ছবি (File Photo: iStock)

রাজ্যে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে প্রথম থেকেই বিতর্ক এবং জটিলতা তৈরি হয়েছিল। সোমবার সেকথাই পরোক্ষে স্বীকার করে নিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিন্হা। সেই সঙ্গে জানালেন এখনও পর্যন্ত রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১২৫৯ জন, করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ৬১ জন। এছাড়া ৭২ জন করোনা আক্রান্ত মারা গিয়েছেন কো-মরবিডিটি কারণে।

গত চব্বিশ ঘন্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৬১ জন এবং কোভিড ১৯-এ মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। এখনও পর্যন্ত ১০৮ জন করোনা রোগি চিকিৎসাধীন এবং রোগমুক্ত হয়ে ছাড়া পেয়েছেন ২১৮ জন।

এদিন মুখ্যসচিবের এই পরিসংখ্যান থেকে রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা একটা সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যসচিব তথ্য সম্পর্কিত ধোঁয়াশা একপ্রকার স্বীকার করে নিয়ে বলেন, কোভিড সংক্রান্ত তথ্য রিপোর্টিং-এর যে পদ্ধতি ছিল, তাতে খুব জটিল ছিল। ফলে বেশ কিছু পরিসংখ্যান ঠিকমতো নথিভুক্ত হত না। যেটা অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি ছিল।


তবে এখন বোঝা গিয়েছে কোথায় সমস্যাটি হয়েছিল। সেই কারণে এখন থেকে অ্যাক্টিভ করোনা রোগির সংখ্যা প্রকাশ না করে প্রথম থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও প্রকাশ করা হবে। মুখ্যসচিব জানান, অ্যাক্টিভ করোনা কেস অর্থাৎ সুস্থ হওয়ার ১৭.৩২ শতাংশ। প্রতি দশ লক্ষে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩.৯৮ এবং মৃতের সংখ্যা ১.৪৭।

মুখ্যসচিব সোমবার জানিয়ে দেন, রাজ্যে যথেষ্ট পরীক্ষাগার ছিল না বলে নমুনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে এই রাজ্য পিছিয়ে ছিল। এছাড়া কেন্দ্র ত্রুটিযুক্ত কিট পাঠিয়েছিল। এখনও কিট নিয়ে সমস্যা চলছে। যে বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতর খুঁটিয়ে দেখছে। এখনও পর্যন্ত ২৫,১১৬’টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে বলে জানিয়ে দেন মুখ্যসচিব।

রাজ্যের শিল্পগুলিকে খোলার জন্য রাজ্য সরকার চেষ্টা করছে। কোন কোন শিল্প খোলা হবে, তার একটি তালিকা প্রকাশ করা হয় নবান্ন থেকে। তবে শপিং মল, মার্কেট কমপ্লেক্স এবং স্ট্রিট হকারদের এখনই ব্যবসায়ে অনুমতি দেওয়া যাবে না। যদিও এইসব ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের যথেষ্ট সহমর্মিতা রয়েছে। পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে পরবর্তীকালে এইসব ব্যবসা ক্ষেত্র খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেন মুখ্যসচিব।

প্রাইভেট অফিসগুলিতে ২৫ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ চলতে পারে। তবে সেটাও অনুমতি সাপেক্ষে। কেন্দ্রীয় সকারের নির্দেশিকা মেনে কোন কোন দোকান, শিল্পক্ষেত্র খোলা হবে তার একটি তালিকা প্রকাশ করা হয় নবান্ন থেকে। আন্তঃজেলা পরিবহনের ক্ষেত্রে কুড়ি জনের বেশি যাত্রী নিয়ে এবং স্যানিটাইজিং এবং সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং-এর সব শর্ত মেনে তা চালাতে হব। ক্যাব ট্যাক্সির ক্ষেত্রে দু’জনের বেশি যাত্রী নেওয়া যাবেনা।

তবে একই সঙ্গে মুখ্যসচিব এদিন এও জানিয়ে দেন, ওইসব চালু হলে লকডাউনের শর্ত বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভান্না থেকেই যাচ্ছে। সেইসঙ্গে কনটেইনমেন্ট জোনে লকডাউনের শর্ত মানা না হলে বিপর্যয় মোকাবিলা আইন প্রয়োগ করে শাস্তিবিধান করা হবে বলেও জানিয়ে দেন রাজীব সিনহা। পরিযায়ী শ্রমিক, তীর্থযাত্রী, পর্যটকদের ঘরে ফেরাতে আজ রাজস্থান থেকে একটি ট্রেন আসছে। সোমবার কেরলের কোচি থেকেও একটি ট্রেন রওনা দিয়েছে রাজ্যের উদ্দেশে।