হাওড়ার নিহত তপন দত্ত খুনের মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার এর এজলাসে সিবিআই তদন্ত নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এই নির্দেশিকার বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে এবং সুপ্রিম কোর্টে আপিল পিটিশন দাখিল করেছেন অভিযুক্তদের একজন।
ইতিমধ্যে সিবিআইয়ের তরফে নুতন করে এফআইআর দাখিল করেছে। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিল , ‘ বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে যে আপিল করা হয়েছে , সেই মামলার শুনানি গ্রহণ করা হবে ৩১ অগস্ট , সুপ্রিম কোর্টে মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার পর।
Advertisement
প্রসঙ্গত হাওড়ার জলাভুমি বাঁচাও আন্দোলনের নেতা তপন দত্ত খুনের ঘটনায় নিম্ন আদালতে চার্জশিট পেশের পরও সম্প্রতি হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। এমনকী এই মামলার বিচার প্রক্রিয়াও সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
Advertisement
এই নির্দেশের বিরুদ্ধে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা ষষ্ঠী গায়েন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টেও মামলা করেছেন। একই সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে তদন্তের পর দু’দফায় চার্জশিট পেশ করেছিল সিআইডি।
সেই তদন্ত খারিজ করে সিবিআইয়ের হাতে ফের তদন্তভার দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারও হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করেছে । এই দুটি মামলারই আপাতত শুনানি ৩১ অগস্ট পর্যন্ত স্থগিত রাখার নির্দেশ দিল হাইকোর্ট এর প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। গত ২০১১ সালের ৬ মে আততায়ীদের গুলিতে খুন হন হাওড়ার জলাভূমি বাঁচাও কমিটির নেতা তপন দত্ত।
ওইবছর ৩০ অগস্ট সিআইডি মামলার চার্জশিট পেশ করে। চার্জশিটে একাধিক তৃণমূল নেতার নাম থাকলেও ওই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর ফের একটি সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করে সিআইডি । সেখানে কোনও কারণ না দেখিয়ে অরূপ রায় , ষষ্ঠী গায়েন – সহ ৯ জন তৃণমূল নেতার নাম বাদ দেওয়া হয় চার্জশিট থেকে। নিম্ন আদালত বেশ কয়েকজন অভিযুক্তকে খালাস করার নির্দেশ দিলেও , ২০১৭ সালে কলকাতা হাইকোর্টের দুই সদস্যের বেঞ্চ এই নির্দেশ খারিজ করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দেয়। এদিন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে ষষ্ঠী গায়েনের তরফে আইনজীবী বলেন , নিম্ন আদালতে বিচারপর্ব শেষ হয়ে গিয়েছে।
অভিযুক্তকে মামলা থেকে নিষ্কৃতিও দেওয়া হয়। তাছাড়া মক্কেলকে মামলায় পার্টি পর্যন্ত না করেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে সিঙ্গল বেঞ্চ। ২০১১ সাল থেকে তিনি এই মামলায় তদন্তের সামনাসামনি হয়েছেন। এর বিরোধিতা করে তপন দত্তর পরিবারের তরফে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন , নিম্ন আদালত পর্যন্ত নির্দেশে জানিয়েছিল তদন্ত যথাযথ হয়নি। তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই তৃণমূলের নেতাকর্মীদেরকেই অভিযুক্ত করেছেন নিহত তপন দত্তের স্ত্রী প্রতিমা দত্ত। এফআইআর – এ নাম ছিল রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায় সহ ১৩ জন তৃণমূল নেতাকর্মীর। কিন্তু এই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের করা হয়েছে ।
যদিও ডিভিশন বেঞ্চে কোন নির্দেশ জারি করা হয়নি। সুপ্রিম কোর্ট কি নির্দেশ দেয় ? তার দিকে তাকিয়ে রাজ্যবাসী।
Advertisement



