• facebook
  • twitter
Saturday, 6 December, 2025

শিক্ষক খুনের দায় নিতে হবে প্রশাসনকে, দাবি দিলীপের

জিয়াগঞ্জে সপরিবারে প্রাথমিক শিক্ষক খুনের দায় নিতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকেই, দাবি বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘােষের।

দিলীপ ঘােষ (File Photo: IANS)

জিয়াগঞ্জে সপরিবারে প্রাথমিক শিক্ষক খুনের দায় নিতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকেই, দাবি বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘােষের। এমনকি একমাসের মধ্যে দোষীদের শাস্তি না হলে এবং রাজ্যে আইন শৃঙ্খলার হাল না ফিরলে নবান্ন অভিযান করবে বিজেপি, এমন হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। শনিবার গান্ধিমূর্তির পাদদেশে ধর্নায় বসেন রাজ্য বিজেপির নেতারা। উপস্থিত ছিলেন মুকুল রায়, রাহুল সিনহা, সায়ন্তন বসু, অগ্নিমিত্রা পল প্রমুখ।

সুত্রের খবর, প্রথমে গান্ধিমূর্তির পাদদেশে ধর্নার অনুমতি দিতে চায়নি পুলিশ। কিন্তু শেষমেশ শনিবার অনুমতি দেওয়া হয়। এদিন দিলীপ ঘােষ বলেন, জিয়াগঞ্জে আরএসএস কর্মী তথা প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক, তার অন্তঃস্বত্তা স্ত্রী এবং সন্তানের খুনের দায় রাজ্য প্রশাসনকেই নিতে হবে। তাঁর দাবি, সাধারণ মানুষ পরিবর্তন চেয়েছিল। কিন্তু যেভাবে রাজ্যের মানুষ প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছে এরপর এই সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোনও অধিকার নেই। দিলীপবাবুর কথায়, বলরামপুরে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ৩ জন যুবককে খুন হতে হয়েছে। কিন্তু কোনও ঘটনারই সঠিকভাবে তদন্ত হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

Advertisement

এদিন পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে তােপ দেগে দিলীপ ঘােষ জানান, পুলিশ প্রশাসনের কোমর ভেঙে গেছে। তারা তৃণমূল নেতাদের কথা মতাে কাজ করছে। যে সমস্ত পুলিশ নেতাদের কথামতাে কাজ করেন তাদের নেতাদের ডান বামদিকে দেখা যায় বলেও কটাক্ষ করেন তিনি। শনিবারের সভাকে ট্রেলার বলে অভিহিত করে জিয়াগঞ্জের ঘটনায় দোষীদের শাস্তি না হলে একমাসের মধ্যে নবান্ন অভিযান করবে গেরুয়া শিবির এমনটাও জানান দিলীপবাবু।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রীকে তােপ দেগে দিলীপের দাবি, মৃতদেহ নিয়ে রাজনীতি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জিয়াগঞ্জ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিজেপি নেতা মুকুল রায় জানান, প্রাথমিক শিক্ষক হত্যার ঘটনাটি সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণােদিত। তিনি আরও বলেন, রাজ্য পুলিশের তদন্ত লােক দেখানাে। এমনকি তদন্তের শেষে নিহত বন্ধুগােপাল পাল আরএসএসের কর্মী ছিল না এমনটাও দাবি করা হবে তদন্তকারীদের পক্ষ থেকে, বলে জানিয়েছেন মুকুলবাবু।

এদিন বুদ্ধিজীবীদের বিরুদ্ধে তােপ দাগেন বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু। তিনি বলেন, জিয়াগঞ্জের ঘটনায় কোনও বুদ্ধিজীবী এগিয়ে আসেননি। অন্যদিকে জনরােষ এবং জনচাপের মুখে পড়েই অপর্ণা সেন এই ঘটনায় মুখ খুলেছেন বলে দাবি করেন বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা।

এদিনের ধর্না মঞ্চে এনআরসি নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে দিলীপ ঘােষ বলেন, নাগরিকত্ব সংশােধনী বিল পাশ করা হবে শীঘ্রই। সমস্ত হিন্দু উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দেওয়া হবে এবং বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ করা মুসলিমদের বহিষ্কৃত করা হবে বলেও জানান তিনি। এই বিল পাস করার সময় কোনও সাংসদ বিরােধিতা করলে তাদের পিঠে পায়ের ছাপ পাওয়া যাবে, শনিবার এই ধরনের মন্তব্যও করেন দিলীপ ঘােষ।

জিয়াগঞ্জ কান্ডে রাজ্যের আইশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। বিজেপির করা এই অভিযােগের পাল্টা উত্তর দিয়েছেন তৃণমূল মহাসচিব তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, বিজেপি বলছে ওনারা আরএসএসএর লােক। নিজেরা বসে আগে ঠিক করুন কি বলবেন। মৃতের পরিবারের সদস্যরা বলছেন তারা কোনও রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে। তদন্তের টিম গঠন করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বিজেপিকে কটাক্ষ করে তৃণমূল মহাসচিব বলেন, যে মেঘ যতটা গর্জায়, তত বর্ষায় না। এরাজ্যে বিজেপি কোনও মাটি পাচ্ছে না। তাই তারা নানান জিনিস করছেন। যদিও তাতে কোনও কাজ হবে না, কারণ বাংলার মানুষ তাদের ঠাই দেবেন না।

অপরদিকে, মেঘালয়ের রাজ্যপাল তথাগত রায় জিয়াগঞ্জ কান্ড নিয়ে বলেন, এ রাজ্যের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় এবং অপর্ণা সেন যা বলেছেন তা একদম ঠিক। অন্তঃসত্ত্বা মহিলা, আটবছরের শিশু সহ মহিলার স্বামীকে যেভাবে খুন করা হয়েছে তাতে শেখ মুজিবুর রহমানের ছােট শিশুকে যেভাবে খুঁজে খুঁজে বাথরুমে ঢুকে খুন করা হয়েছিল সেকথা মনে পড়ছে। পুলিশ-প্রশাসনের উচিৎ দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে দোষিদের গ্রেফতার করা। মেঘালয়ের রাজ্যপাল হিসেবে বলছি, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় আইনশৃঙ্খলা নিয়ে যা মন্তব্য করেছেন তা একদম ঠিক।

Advertisement