• facebook
  • twitter
Wednesday, 17 December, 2025

সংসদ ভবনে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা , দর্শকদের জন্য আপাতত বন্ধ সংসদ ভবন

দিল্লি, ১৮ ডিসেম্বর – সংসদে গত ১৩ ডিসেম্বরের ঘটনার জেরে সংসদ ভবনের নিরাপত্তা আরও কঠোর করার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। সংসদ সচিবালয়ের তরফে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে চিঠি পাঠিয়ে সংসদ ভবনের নিরাপত্তা কঠোর করতে একগুচ্ছ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সংসদে যাঁরা প্রবেশ করবেন,  তাঁদের তল্লাশির জন্য বডি স্ক্যানার বসানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে। সাংসদ, সংসদের কর্মী, সাংবাদিক এবং দর্শকদের জন্য

দিল্লি, ১৮ ডিসেম্বর – সংসদে গত ১৩ ডিসেম্বরের ঘটনার জেরে সংসদ ভবনের নিরাপত্তা আরও কঠোর করার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। সংসদ সচিবালয়ের তরফে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে চিঠি পাঠিয়ে সংসদ ভবনের নিরাপত্তা কঠোর করতে একগুচ্ছ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সংসদে যাঁরা প্রবেশ করবেন,  তাঁদের তল্লাশির জন্য বডি স্ক্যানার বসানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে। সাংসদ, সংসদের কর্মী, সাংবাদিক এবং দর্শকদের জন্য আলাদা আলাদা প্রবেশপথ নির্দিষ্ট করে দেওয়ার প্রস্তাবও রয়েছে এই তালিকায়।

সংসদের সমস্ত নজরদারি এড়িয়ে দুই যুবক বিনা বাধায় কিভাবে প্রবেশ করলেন, কিভাবেই বা  লোকসভার অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করলেন তা নিয়ে চলছে কাটাছেঁড়া বিশ্লেষণ। কিভাবেই বা দর্শক আসন থেকে ফ্লোরে ঝাঁপ দিয়ে গ্যাস ভরা রং বোমা নিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে অধিবেশন কক্ষে ঢুকতে পারলেন, উঠে এসেছে সে প্রশ্নও। সংসদে এইভাবে নিরাপত্তা লঙ্ঘিত হওয়ার পর বিরোধী শিবির জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলেছে।

Advertisement

সংসদে দর্শক আসন থেকে যাতে কেউ আর লোকসভা বা রাজ্যসভার অন্দরে ঝাঁপ না মারতে পারেন, সে জন্য অভিনব ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে। মূল অধিবেশন কক্ষ ও দর্শক আসনের মধ্যে বসবে কাচের দেওয়াল। অধিবেশন চলাকালীন কোনোরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এবং সেখানে উপস্থিত দর্শকরা যাতে কোনরকম বেপরোয়া আচরণ না করেন , সেজন্য  নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যাও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে লোকসভা সচিবালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছেন। নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু না হওয়া পর্যন্ত দর্শকদের জন্য আপাতত বন্ধ থাকবে সংসদ ভবন। পাশাপাশি, সাংসদদের প্রবেশের জন্য দ্রুত স্মার্ট কার্ড চালুর কথা জানানো হয়েছে প্রস্তাবে।

Advertisement

এদিকে দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল সূত্রে জানা গিয়েছে , গত ১৩ ডিসেম্বরের হানাদার দুই যুবক মুচিকে দিয়ে জুতোর মধ্যে গর্ত তৈরী করে।  জুতোগুলির নীচের দিকে সোলে গর্ত করা হয়েছিল।  তার মধ্যে ভরে রাখা হয়েছিল রং-বোমা। রংবোমা ভরে আবার গর্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়।  সেই জুতো পরেই গত সেদিন সংসদে যান সাগর শর্মা এবং মনোরঞ্জন ডি। জুতোগুলিতে যে  মুচির সাহায্যে গর্ত তৈরী করা হয়, তাকে খুঁজতে সাগরের বাড়িতে পৌঁছয় দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল। সোমবার সকালেই লখনউয়ে পৌঁছন তাঁরা।

পুলিশ সূত্রে খবর, সাগর এবং মনোরঞ্জন যে রং-বোমা ভরা জুতো পরে সংসদে ঢোকেন, সেগুলি পরে হাঁটতে যাতে কোনও সমস্যা না হয় এবং হাঁটার সময় বাইরে থেকে যাতে বোঝা না যায় জুতোর ভিতরে কিছু আছে, সে দিকেও বিশেষ নজর রাখা হয়। পুলিশ ধৃতদের জেরা করে আগেই জানতে পারে যে জুতোগুলি লখনউ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল। সোমবার আবার তারা সরেজমিনে তদন্ত করতে যায়। তদন্তকারীরা লখনউয়ে সাগরের বাড়িতে গিয়ে বেশ কিছু সময় তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। সাগরের বাড়িতে গেলেও ধৃতকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়নি। প্রথম দিকে দিল্লি পুলিশের পরিকল্পনা ছিল, সাগরকেও নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু পরে নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়। 

সোমবার লখনউ ছাড়াও দেশের মোট ৬ রাজ্যে পৌঁছয় দিল্লি পুলিশের তদন্তকারী দল। কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, হরিয়ানা, পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তরপ্রদেশে যান তদন্তকারী দলের প্রতিনিধিরা। 

গত বুধবার লোকসভার অধিবেশন চলাকালীন সাগর এবং মনোরঞ্জন গ্যালারি থেকে চেম্বারে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁদের কাছে থাকা  রংবোমা চারদিকে ছড়িয়ে দেন। চারিদিক ভোরে যায় হলুদ ধোঁয়ায়। কয়েক মিনিটের মধ্যেই অবশ্য তাঁদের ধরে নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সংসদের বাইরে থেকেও একই সময়ে গ্রেফতার হন নীলম আজাদ এবং অমল শিন্ডে। এ ছাড়াও সংসদের নিরাপত্তা  বিঘ্নিত হওয়ার ঘটনায় আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দিল্লির থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন ললিত ঝা এবং মহেশ কুনাওয়াত। এঁদের সবাইকে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

Advertisement