কাশী বিশ্বনাথ করিডরের উদ্বোধন নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হল: মোদি

নিজের লোকসভা কেন্দ্র এই পবিত্র ভূমিতে আজ প্রধানমন্ত্রীর মেগা ইভেন্ট। বারাণসী পৌছে আজ সকালে প্রথমে কাল ভৈরব মন্দিরে পুজো করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।

Written by SNS Varanasi | December 14, 2021 1:33 pm

কাশী বিশ্বনাথ করিডরের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। পাশাপাশি নিজের লোকসভা কেন্দ্র এই পবিত্র ভূমিতে আজ প্রধানমন্ত্রীর মেগা ইভেন্ট। বারাণসী পৌছে আজ সকালে প্রথমে কাল ভৈরব মন্দিরে পুজো করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।

তারপর খিরকিয় ঘাটে গঙ্গা স্নান সেরে কোমরজলে দাড়িয়ে গঙ্গা পূজো কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের সঙ্গে গঙ্গার ধারে দুটো ঘাটকে জুড়ে দিয়েছে কাশী বিশ্বনাথ করিডর। ৩৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫ হাজার বর্গফুটের করিডর তৈরি করা হয়েছে।

৫০ ফুট চওড়া এই করিডরকে পরিবেশ বান্ধব হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে কাশী বিশ্বনাথ করিডর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছাড়াও মঠ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মানুষজন মিলিয়ে ৩০০০ অতিথি উপস্থিত ছিলেন।

মুখ্যমন্ত্রী যোগী প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে, কাশী বিশ্বনাথ করিডর উদ্বোধনের পর এখন আর পুণ্যার্থীদের কোনও অসুবিধায় পড়তে হবে না উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে বিশ্বনাথ ধাম সংস্কার প্রকল্পের জন্য মন্দির চত্বরের প্রায় তিনশটি সম্পত্তি গ্রহণ করা হয়েছে ১৪০০ মানুষকে পুর্নবাসন দেওয়া হয়েছে।

করিডরের ধারে সার দিয়ে পারিজাত, বেল, রুদ্রাক্ষ আমলা, অশোক গাছ লাগিয়ে একদিকে পরিবেশ রক্ষা নিয়ে যেমন বার্তা দেওয়া হয়েছে ঠিক তেমনই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে তুলে ধরা হয়েছে।গোটা মন্দির চত্বরে গাছ লাগানো হয়েছে।

পাশাপাশি, ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের জন্য বিভিন্ন বিল্ডিং তৈরি করা হয়েছে। সব মিলিয়ে চট বিল্ডিং তৈরি করা হয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখ্য, যাত্রী সুবিধা কেন্দ্র বৈদিক কেন্দ্র, রুদ্রাক্ষ ভন, সিটি মিউজিয়াম, গ্যালারি সেন্টার, ফুড কোর্ট ইত্যাদি।

বিশ্বনাথ ধামে তিনটি ফেসিলেশন সেন্টারও বানানো হয়েছে। ওই জায়গাগুলো থেকে কাশী বিশ্বনাথের দর্শন পাওয়া যাবে। পুণ্যার্থীদের জন্য লকার ও টিকিট কাউন্টারের ব্যবস্থা রয়েছে। পূজা সামগ্রীর দোকানও তৈরি করা হয়েছে।

কাশী বিশ্বনাথ করিডর প্রকল্প নির্মাণের সম্পূর্ণ খরচ হবে ৮০০ কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রী মোদি ২০১৯ সালে কাশী বিশ্বনাথ করিডর প্রকল্পের সূচনা করেছিলেন।

দিও সপা’র তরফে দাবি করা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব সরকারের আমলে এই প্রকল্পের অনুমোদন করেছিল। অতীতের কাশী বিশ্বনাথ মন্দির চত্বরটি ছিল ৩০০০ বর্গফুট চত্বরের ওপর, যা মূলত ঘিঞ্জি ও অপরিষ্কার ছিল। গঙ্গায় স্নান সেরে পুণ্যার্থীদের গঙ্গা জল নিয়ে সরু রাস্তা পেরিয়ে মন্দিরে যেতে হত।

ফলে অসুবিধাও হত। এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে গঙ্গার পাশেই কাশী বিশ্বনাথ মন্দির ছিল। বাবা বিশ্বনাথকে যখন প্রণাম করা হত, একইসঙ্গে মা গঙ্গার দর্শনও হয়ে যেত।

কিন্তু সময়ের প্রবাহে সেই পথের মাঝে অনেক প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এবার ঐতিহ্য ও আধুনিকীকরণের মিশেলে নতুন করিডর তৈরি করা হয়েছে। এদিন বক্তব্যের শুরুতেই কাশীবাসীকে প্রণাম জানান প্রধানমন্ত্রী।

এরপর বলেন, কাশীতে একটাই সরকার রয়েছে। যার হাতে মেরু রয়েছে, সেই মহাদেবের সরকারই এখানে চলে। এই করিডরও মহাদেবের কৃপাতেই হয়েছে। আমরা কেবল তা বাস্তবে রূপান্তর করেছি।

কাশী নিয়ে বলতে গিয়ে আবেগঘন হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, কাশী যুগ যুগ ধরে নানা পরিবর্তন দেখেছে। বিভিন্ন সময়ে ঔরঙ্গজেব থেকে ব্রিটিশ শাসক, সন্ত্রাসবাদীদের আক্রমণের মুখেও পড়েছে।

তবুও কাশীর উন্নয়ন থেমে থাকেনি। আজ উন্নয়ন, উৎকর্ষের পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল শশী। করোনাকালে যে শ্রমিকরা করিডর তৈরির কাজ চালিয়ে গিয়েছে, তাঁদের ধন্যবাদ জানান মোদি।

বলেন, কাশীতে মহাদেবের ইচ্ছে ছাড়া কিছুই হয় না মোদির দাবি, ২০০-২৫০ বছর আগে কাশীর সংস্কারের কাজ হয়েছিল। তারপর এই প্রথম বিশ্বনাথ ধামের সংস্কারে এত কাজ হল।

উল্লেখ্য, কাশী বিশ্বনাথ ধাম করিডরে ৪০টি মন্দিরের সংস্কার ও ২৩টি নতুন ভবন তৈরি করা হয়েছে কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের আশেপাশে। সোমবার গঙ্গাতীরে ছিল কাতারে কাতারে দর্শনার্থীর ভিড়। শিবের মেরু বাজিয়েই ললিতা ঘাটে স্বাগত জানানো হয় প্রধানমন্ত্রীকে।