• facebook
  • twitter
Saturday, 6 December, 2025

মিছিলটা করতে বাধ্য হয়েছি, মন পড়ে আছে উত্তরপ্রদেশের গ্রামে: মমতা

শনিবার হাথরাস কাণ্ডের প্রতিবাদে পথ হাঁটলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টর্চ হাতে উঠলেন মঞ্চে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Photo: IANS)

শনিবার হাথরাস কাণ্ডের প্রতিবাদে পথ হাঁটলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টর্চ হাতে উঠলেন মঞ্চে। করােনা পরিস্থিতির মধ্যে ছয়-সাত মাসেরও বেশি সময় কোনও বিক্ষোভ সমাবেশে সামিল হননি তৃণমূল নেত্রী।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বললেন, কোভিডে অনেকেই মারা গিয়েছেন। তাদের জন্য আমার কষ্ট হয়। আমরা সাবধানতার জন্য মিটিং মিছিল করছি না। কিন্তু আজ মিছিলটা করতে বাধ্য হয়েছি। তবে মন পড়ে রয়েছে উত্তরপ্রদেশের সেই গ্রামে, মনে হচ্ছে ছুটে যাই। 

Advertisement

শনিবার বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়াম থেকে পদযাত্রা শুরু করে মেয়েরােডের বিক্ষোভ মঞ্চে উঠলেন মমতা। বক্তৃতার মধ্যেই শ্রোতাদের তিনি নিজের হাতের টর্চ দেখালেন। এদিন ক্রোধ আর আবেগের দ্বৈত অভিব্যক্তি খেলে গেল মমতার মুখে। 

Advertisement

কিন্তু দিনের বেলায় হাতে টর্চ কেন? রহস্য ভাঙলেন নেত্রী নিজেই। বললেন, আজ দেশে অন্ধকার। আঁধার হয়ে আছে সব জায়গা। আজ আমাদের আলাে চাই। তাই এই আলাে নিয়ে এসেছি। 

কোন আঁধারের কথা বললেন তৃণমূল নেত্রী? মমতার নিজের কথায় যে নিপীড়িত, দলিতদের ওপর অত্যাচার হয়েছে, তাঁদের আলােয় নিয়ে আসতে হবে। এই হাথরাস কাণ্ড নিয়ে এদিন বিজেপিকে নিশানা করেন নেত্রী। 

মমতা স্বীকার করেন, সােশ্যাল ক্রাইম হয়। কিন্তু ঘটনার পরে প্রশাসনকে নড়েচড়ে বসতে হয়। কিন্তু হাথরাসে রাতের অন্ধকারে ডেডবডি পুড়িয়ে ফেলা হল। বাড়ির কাউকে ঘেঁষতে দেওয়া হল না। আজ বিজেপি শাসিত যােগীরাজ্যে এরকম হলে, কাল সারা দেশে কী হবে?

মমতা এদিন স্পষ্ট করে উচ্চারণ করলেন, সংখ্যালঘু, নমশূদ্র, দলিত– সবাই আজ ভয়ে ভয়ে। সকলের ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে। মমতা বলেন, আমাকে মুসলিম তােষক হিসেবে তকমা দিয়ে দিয়েছে বিজেপি। কিন্তু যে যখন বিপদে পড়ে আমি পাশে গিয়ে দাঁড়াই। কখনও মুসলিম তাে কখনও আদিবাসী। তবে আজ আমি দলিত।

কৃষকের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। কৃষকদের মুখের গ্রাস কেড়ে নেওয়া হয়েছে। চাল, ডাল, নুন, তেল এসব এসেন্সিয়াল কমােডিটির মধ্যে নয়। বিজেপি দেশকে বেচে দিচ্ছে। দেশে এবার দুর্ভিক্ষ আসবে। আসলে দেশে এখন সুপার অটোক্রেস চলছে। দেশে কোনও গণতন্ত্র নেই। ওয়ান নেশন, ওয়ান গভর্নমেন্ট। দেশে প্যান্ডেমিক পরিস্থিতি চলছে ঠিকই। তবে কোভিডের জন্য নয়। আসলে বিজেপির প্যান্ডেমিক চলছে। 

মমতার এদিনের বক্তব্যে ছিল তীব্র কটাক্ষ। তিনি এদিন বলেন, দেশে আর কোনও মহাপুরুষ পাওয়া যাচ্ছে না। সব চেয়ে বড় মহাপুরুষ বিজেপি। এই বিজেপি দেশের লজ্জা। হাথরাস কাণ্ডে বিজেপির লজ্জা পাওয়া উচিত। এই বিজেপিকে চাই না।

শনিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য জুড়ে ছিল বিজেপির সমালােচনা। তিনি পুরনাে প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, উত্তরপ্রদেশের এনকাউন্টারে কত লােক, কত তাজা প্রাণ বিনষ্ট হয়ে গেল। দিল্লিতে কত লােক মারা গেল। কেউ বিচার পেয়েছে? বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদছে। সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে। আমি কিছু বলতে গেলে ওরা বলবে, ও তাে মুসলিম তােষণ করে। হিন্দুরা বিপদে পড়লে, তাদের পাশে দাঁড়ালে, তখন তাে জিজ্ঞেস করে না, মমতা তােমার টাইটেল কী? 

নেত্রী এদিন সরাসরি হুংকার দিয়ে বলেন, মমতা তােমার বন্দুককে ভয় পায় না। তােমাদের গুণ্ডা পার্টিকে ভয় পাই না। হাথরাস কাণ্ডে পথে নেমে এদিন প্রায় একুশের নির্বাচনের জন্যই পথ প্রস্তুত করলেন মমতা।

Advertisement