ভারতের ইতিহাসে অন্যতম নৃশংস সন্ত্রাসবাদী হামলার স্মৃতি আজও তরতাজা। সেই ক্ষতচিহ্ন কেবল স্মৃতির গভীরে নয়, ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী নীতিতেও আজও তার ছাপ স্পষ্ট। ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর মুম্বই জুড়ে পাক জঙ্গিদের হামলায় নিহত হন দেশের বহু নিরপরাধ মানুষ, শহিদ হন নিরাপত্তারক্ষীরা।
সেদিনের ভয়াবহতা— তাজ হোটেল, ওবেরয়, নরিমন হাউস, ছত্রপতি শিবাজী টার্মিনাস, লিওপোল্ড— একের পর এক জায়গায় গুলিবর্ষণ, বিস্ফোরণ, জিম্মি নাটক— ভারতের নিরাপত্তা-পরিকাঠামোর কাছে এক দুর্বিপাকের মতো দাঁড়িয়ে ছিল। সেই রাতগুলি দেশের গোটা নিরাপত্তা-ব্যবস্থাকে ভিতর থেকে যেন নাড়িয়ে দিয়েছিল।
Advertisement
পাকিস্তান থেকে পাঠানো জঙ্গিরা যে পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছিল, তা ভারতকে বাধ্য করেছিল গোয়েন্দা ও সন্ত্রাসদমন ব্যবস্থায় বড়সড় বদল আনতে। এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নেওয়ার পর তৈরি হয় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা বা এনআইএ। উপকূলবর্তী রাজ্যগুলিতে নজরদারি আরও শক্তিশালী করা হয়। আধুনিক অস্ত্র, দ্রুত প্রতিরোধ বাহিনী, বিশেষ প্রশিক্ষণ— সবকিছুর মধ্যেই রয়েছে ২৬/১১–র শিক্ষার প্রতিফলন।
Advertisement
তবে কেবল পরিকাঠামোগত নয়, রাজনৈতিক বার্তা থেকেও স্পষ্ট, ভারত আর পিছিয়ে থাকা দেশ নয়। সন্ত্রাসবাদকে রাষ্ট্রীয় নীতির হাতিয়ার করা যে কোনও দেশের বিরুদ্ধেই কঠোর অবস্থান নিয়েছে দিল্লি। আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের কূটনীতি বারবার তুলে ধরেছে, সন্ত্রাসবাদ নিয়ে দ্বৈত নীতি নয়, বিশ্বব্যাপী একই মানদণ্ডে লড়াই চাই।
সুতরাং, ২৬/১১–র শহিদদের স্মরণ আজ শুধুই আনুষ্ঠানিকতা নয়— এটি দেশের বিবর্তিত প্রতিরক্ষানীতির এক নিরবচ্ছিন্ন ভিত্তি। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই এখনও শেষ হয়নি। কিন্তু সেই লড়াই কেমন হওয়া উচিত, ১৭ বছর আগের সেই কালরাত্রিই আজও দেশকে পথ দেখায়।
Advertisement



