সংসদে শীতকালীন অধিবেশন শুরু হতে চলেছে আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে। আর এবারের অধিবেশনে মোদী সরকার চণ্ডীগড়ে বড়সড় প্রশাসনিক রদবদলের জন্য পদক্ষেপ করবে বলে খবর। পেশ হতে চলেছে ভারতীয় সংবিধানের ১৩১তম সংশোধনী বিল। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই আম আদমি পার্টি, কংগ্রেস ও অকালি দল সমালোচনার ঝড় তুলেছে। তাঁদের দাবি, এই সিদ্ধান্ত পাঞ্জাব বিরোধী পদক্ষেপ।
এই বিল অনুযায়ী চণ্ডীগড়কে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৪০-এর অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এর ফলে দাদরা ও নগর হাভেলি, লাক্ষাদ্বীপ, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, দমন ও দিউ এবং পুদুচেরির মতো কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত হবে চণ্ডীগড়। সেই মতো চণ্ডীগড়ের জন্য নিয়মকানুন তৈরির ক্ষমতা পাবেন রাষ্ট্রপতি। এমন রাজ্যপালই চণ্ডীগড়ের শাসক। পাঞ্জাব ও হরিয়ানা দুই রাজ্যেরই রাজধানী চণ্ডীগড়।
Advertisement
সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৪০-এ কী আছে? এই অনুচ্ছেদে বলা আছে রাষ্ট্রপতিশান্তি, অগ্রগতি এবং সুশাসনের জন্য বিধিমালা তৈরি করতে পারবেন (ক) আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, (খ) লাক্ষাদ্বীপ, (গ) দাদরা ও নগর হাভেলি, (ঘ) দমন ও দিউ এবং (ঙ) পুদুচেরির কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জন্য। সেই তালিকায় চণ্ডীগড়কেও জুড়ে দিতে চলেছে মোদী সরকার। প্রসঙ্গত, ১৯৬৬ সালের ১ নভেম্বর হরিয়ানা রাজ্যের জন্ম হয়েছিল।
Advertisement
ওই বছর পাঞ্জাব থেকে হরিয়ানা আলাদা হয়ে যাওয়ার পরই চণ্ডীগড়কে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবে তৈরি করা হয়। তবে চণ্ডীগড় এখনও পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার যৌথ রাজধানী। বর্তমানে পঞ্জাবের রাজ্যপালই চণ্ডীগড়ের প্রশাসক। পাঞ্জাবের রাজনীতিবিদরা বহুদিন থেকে দাবি করে আসছেন চণ্ডীগড়কে পাঞ্জাবের অন্তর্ভুক্ত করা হোক। হরিয়ানাকে দেওয়া হোক আলাদা রাজধানী। এই অবস্থায় এবার কেন্দ্রের পদক্ষেপের কথা জানতে পেরে তাই ক্ষুব্ধ রাজনৈতিক মহল।
পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিংহ মান চণ্ডীগড় নিয়ে কেন্দ্রের প্রস্তাবের নিন্দা করেন। তাঁর অভিযোগ, বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রের এনডিএ সরকার পঞ্জাবের রাজধানী চণ্ডীগড়কে ছিনিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। তিনি আরও বলেন, ‘চণ্ডীগড় সবসময় পাঞ্জাবের অংশ ছিল, আছে আর থকবে। মূল রাজ্য হিসাবে পঞ্জাবেরই একমাত্র অধিকার রয়েছে তার রাজধানীর উপর।’ মানের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় সরকার।
মানের সুরেই সুর মিলিয়েছেন আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তাঁর মতে, ‘ইতিহাস সাক্ষী, পাঞ্জাবিরা কখনও স্বৈরশাসনের কাছে মাথা নত করেনি। এবারও তা করবে না। চণ্ডীগড় পাঞ্জাবের ছিল, আছে এবং থাকবে। পাঞ্জাব সর্বদা দেশের নিরাপত্তা, শস্য এবং জলের জন্য আত্মত্যাগ করেছে। অথচ তাকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।’ চণ্ডীগড়ের বিষয়ে বিরোধীদের সঙ্গে কিছুটা সহমত পোষণ করেছেন পাঞ্জাবের বিজেপির প্রধান সুনীল জাখর। তাঁর দাবি, ‘রাজ্যের স্বার্থের সঙ্গে সবসময় দৃঢ় ভাবে রয়েছি, তা চণ্ডীগড় সমস্যা হোক বা জলের সমস্যা।’
Advertisement



