দিল্লির লাল কেল্লা মেট্রো স্টেশনের কাছে ভয়াবহ বিস্ফোরণের তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই সামনে আসছে নতুন নতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য। হরিয়ানার ফরিদাবাদের আল ফালাহ্ বিশ্ববিদ্যলয়ের নাম এই বিস্ফোরণে প্রথম উঠে আসতেই রহস্যজনকভাবে অন্তত ১৫ জন চিকিৎসকের হদিশ মিলছে না, তদন্তকারী গোয়েন্দা সূত্রের এমনটাই দাবি। গত দু’দিন ধরে টানা তল্লাশি চালিয়ে এই তথ্য হাতে পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলি।
সূত্রের বয়ান অনুযায়ী, নিখোঁজ চিকিৎসকদের নিয়ে দুই রকম সন্দেহ তৈরি হয়েছে। প্রথমত, তাঁরা ‘ডক্টর টেরর মডিউল’-এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে যুক্ত থাকতে পারেন। দ্বিতীয়ত, বিস্ফোরণকাণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম জড়ানো মাত্রই তাঁরা আতঙ্কে ক্যাম্পাস ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারেন।
Advertisement
এদিকে মুজাম্মিলের ডায়েরি থেকে উঠে এল আরও এক রহস্যজনক নাম। তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকেই ধৃত মুজাম্মিল, যিনি বিস্ফোরণকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত। তাঁর ডায়েরি থেকে ২৫–৩০ জনের নাম পাওয়া গিয়েছে। প্রাথমিক ধারণা, এই নামগুলোর বড় অংশই নিখোঁজ চিকিৎসকদের তালিকার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে।
Advertisement
প্রসঙ্গত, বিস্ফোরণের পরই এক হাজারেরও বেশি পুলিশ ও তদন্তকারী আল ফালাহ্ ক্যাম্পাসে বিশেষ অভিযান চালিয়েছিল। ওই সূত্রেরই দাবি, অন্তত ২০ জন চিকিৎসা-শিক্ষার্থীর পরিচয় নিশ্চিত করা গিয়েছে, যাঁদের উপর ‘ডক্টর টেরর মডিউল’-এ যুক্ত থাকা নিয়ে সন্দেহ দানা বেঁধেছে।
ফরিদাবাদের পাশাপাশি হরিয়ানার নুহ জেলার সুনহেড়া গ্রামের এক যুবকও তদন্তকারীদের নজরে রয়েছেন। তিনি সম্প্রতি চিন থেকে এমবিবিএস করে দেশে ফিরে আল ফালাহ্তে এক বছর ইন্টার্নশিপ করেছিলেন। তাঁর ইন্টার্নশিপ শেষ হয়েছে গত ২ নভেম্বর। পরিবারের দাবি, তিনি ওই দিনই বাড়ি ফিরে এসেছিলেন।
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ৯ নভেম্বর তিনি দিল্লির এইমসে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন। এর পরের দিনই দিল্লিতে বিস্ফোরণ ঘটে। সূত্রের দাবি, যুবকের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে তাঁর মোবাইল ফোন থেকে জঙ্গি সংগঠনের ফোন নম্বর ও কথোপকথন উদ্ধার করা হয়েছে।
অন্যদিকে, সোমবার রাজধানীর ভয়াবহ বিস্ফোরণে আল ফালাহ্র নাম তদন্তে উঠে আসতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা আমূল বদলে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকেই হস্টেল ছেড়ে চলে যেতে শুরু করেছেন পড়ুয়ারা। অনেক ছাত্র-ছাত্রীর পরিবার তাঁদের সন্তানদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয় সূত্রের দাবি, শুক্রবার প্রায় ২৫ শতাংশ হস্টেল খালি হয়ে গিয়েছে। পড়ুয়ারা জানিয়েছেন, তারা আতঙ্কিত এবং পরিবারও চরম উদ্বেগে রয়েছে।
তদন্তকারীরা নিখোঁজ চিকিৎসকদের অবস্থান, ভূমিকা এবং বিস্ফোরণকাণ্ডে তাঁদের যোগাযোগ সম্পর্কে অনেক তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছেন। মোটের ওপর দিল্লি বিস্ফোরণ রহস্যের গুরুত্বপূর্ণ এক অধ্যায় হয়ে উঠেছে এই ফরিদাবাদ–নুহ সংযোগ।
Advertisement



