• facebook
  • twitter
Sunday, 7 December, 2025

এসআইআর ফর্ম প্রত্যাখ্যান করে ছিটমহলের

‘যা নেই, তা দেব কোথা থেকে?’

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

রাজ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন শুরু হতেই নতুন করে বিতর্ক তৈরি হল কোচবিহারের দিনহাটার সাবেক ছিটমহল এলাকায়। মঙ্গলবার দুপুরে এখানকার বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও)-রা ১২৮ এবং ১২৯ নম্বর বুথে বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমারেশন ফর্ম দিতে গেলে ফেরত দিয়ে দেন পোয়াতুর কুঠির বাসিন্দারা। তাঁদের সোজাসাপটা প্রশ্ন— ‘যা নেই, তা দেব কোথা থেকে?’

জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে ভারত–বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর ওই বাসিন্দারা ভারতের নাগরিকত্ব পান। কিন্তু নির্বাচনী দপ্তরের এনুমারেশন ফর্মে ২০০২ সালের ভোটার তালিকা অনুযায়ী পরিবারের তথ্য দিতে বলা হয়েছে। এখানেই তৈরি হয়েছে সমস্যা। কারণ, বিনিময়ের আগে তাঁরা বাংলাদেশের নাগরিক ছিলেন। ফলে ২০০২ সালের ভারতীয় ভোটার তালিকায় তাঁদের বা তাঁদের পূর্বপুরুষদের নাম থাকার প্রশ্নই ওঠে না।

Advertisement

মঙ্গলবার বিএলও-রা যখন বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম দিতে চান, তখন বাসিন্দারা স্পষ্ট জানান, নির্বাচন কমিশন যতক্ষণ না ছিটমহলবাসীদের জন্য আলাদা নির্দেশিকা দেয়, ততক্ষণ তাঁরা কোনও ফর্ম নেবেন না। সাদ্দাম মিঞাঁ নামের এক বাসিন্দা বলেন, ‘২০১৫ সালের ৩১ জুলাই আমরা ভারতের নাগরিকত্ব পেয়েছি। আমাদের কাছে ২০০২ সালের কোনও ভারতীয় নথিই নেই। বাবা-মা বা ঠাকুর্দা–ঠাকুমারও নাম ২০০২ সালের ভারতীয় ভোটার তালিকায় নেই। তাহলে আমরা কী লিখব?’ তিনি আরও জানান, যদি কমিশন সুরাহা না করে, তবে তাঁরা আন্দোলনে নামবেন।

Advertisement

বিএলও বিপুল মণ্ডল জানান, ‘ফর্ম পূরণের উদ্দেশ্যে গিয়েছিলাম। কিন্তু বাসিন্দারা জানান, তাঁরা ছিটমহলের বাসিন্দা হওয়ায় এই ফর্ম তাঁদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। অনেক অনুরোধের পরেও তাঁরা ফর্ম নেননি। আমরা তাঁদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছি।’

দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, ‘কমিশন যে নথিকে প্রামাণ্য মানছে, তা সাবেক ছিটমহলবাসীদের কাছে নেই। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে তাঁদের নাম তালিকায় থাকবে, তা নিয়ে দ্রুত সমাধান বের করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে কোনও ভোটার যেন বাদ না পড়েন।’

রাজ্যের এসআইআর প্রক্রিয়া চলাকালীন ছিটমহলের এই বাসিন্দাদের নাগরিকত্ব নিয়ে জটিলতা নতুন করে প্রশাসনের মাথাব্যথা বাড়িয়েছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান না হলে তাঁদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ে যাওয়ার ভয় থেকেই যাচ্ছে।

Advertisement