• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

‘বিশ্বাসে মিলায় যা, তা তর্কে বহুদূর’; ছবি নয়, চাপ মুক্তির শুক্রবার

ফেডারেশনের বিজয় সম্মিলনী হয়ে উঠল মিলনমেলা

অতনু রায়: শুক্রবারের সন্ধে, টেকনিশিয়ানস্ স্টুডিও জনাকীর্ণ। তার মধ্যেই হঠাৎ একেকবার একেক রকম ফিসফিসানি…’আবীর আছে’, ‘দেব নামছে’, ‘জিৎ পাঁচ মিনিটে ঢুকে যাবে’! একসঙ্গে একই ফ্লোরে এই নামগুলো উঠলে মনে হয় কোনো মাল্টি-স্টারার ছবি ফ্লোরে আছে। স্টুডিও চত্বর বলেই হয়ত! দেখতে দেখতেই শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, হরনাথ চক্রবর্তী, অভিজিৎ সেনের মতো পরিচালকরা ‘অন-ফ্লোর’।

তাহলে বোধহয় অ্যান্থোলজি! ইতিমধ্যে ফ্লোরে ঢুকলেন কুণাল ঘোষ আর তারপরে শ্রীকান্ত মোহতা। সত্যিই একটা সিনেমা হলে মন্দ হত না। এতজন পরিচালকের ভিড়েও অক্টোবরের শেষ সন্ধেয়, কাকতালীয়ভাবে সেটা শুক্রবার, পরিচালকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন সম্পূর্ণ অন্য একজন…স্বরূপ বিশ্বাস। আর ছবির নাম যেন, ‘বিশ্বাসে মিলায় যা, তা তর্কে বহুদূর’। ভাবনা ও প্রয়োগে সিনে ফেডারেশন (Federation of Cine Technicians & Workers of Eastern India)।

Advertisement

ফেডারেশনের বিজয় সম্মিলনী হয়ে উঠল মিলনমেলা। যেমনটা হওয়া উচিত, ঠিক তেমন। আসলে অনেক সময় একসঙ্গে সময় কাটানো, কাটিয়ে দিতে পারে ভুল বোঝাবুঝি। যেমন দিল এই শুক্র সন্ধে। সাম্প্রতিক অতীতে কিছু অনভিপ্রেত ঘটনা যে বাংলা ছবির ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে একটা নেগেটিভ অ্যাপ্রোচ এনে দিয়েছিল তা অস্বীকার করার জায়গা নেই। কিন্তু অন্ধকারের পর্দা চিরে আলোর পথ দেখানোই তো পরিবারের কাজ!

Advertisement

স্বরূপ বিশ্বাসের নেতৃত্বে এই বিজয়া সম্মিলনী অনেকটাই যেন একই পরিবারের আলাদা থাকতে শুরু করা ভাই-বোনেদের এক জায়গায় নিয়ে এল। পুরোনো কথা তুলে পরিবেশ তিক্ত করার কোনও সুযোগ না দিয়ে মুহূর্তের উদযাপনে মিলিয়ে দিল। তাই সম্প্রতি সম্পূর্ণ ভুল কারণে বারবার খবরের শিরোনামে উঠে আসা মানুষগুলো সব ভুলে আবার একে অপরের হাত ধরলেন এবং অনুষ্ঠানের পারিবারিক সুরের একবারও তাল কাটল না।

সংগঠন তো পরিবার হয়ে ওঠাই দাবি করে। ফেডারেশন এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ পরিবারের কাজ করল বলাই বাহুল্য। এতে যেটা হয়, সৌহার্দ্য বাড়ে। তাই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়ত। পরিবারে যা যা হয়, সব হল। নিজেদের মধ্যে হালকা খুনসুটি, অভিমানী মুখ ফিরিয়ে নেওয়া আবার পরক্ষণেই জড়িয়ে ধরা, আর অবশ্যই সঙ্গে উপহার। কীসের?

পুজোয় মুক্তি পাওয়া ছবি ‘রঘু ডাকাত’-এর ট্রেলার লঞ্চের সময় প্রবেশমূল্য রেখেছিলেন প্রযোজক দেব এবং এসভিএফ। নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়াম সেই অনুষ্ঠানে কানায় কানায় ভরেছিল দেবের জন্য। দেব ঘোষণা করেছিলেন টিকিট বিক্রির পুরো টাকাই টেকনিশিয়ানদের উন্নতিকল্পে তুলে দেবেন সিনে ফেডারেশনের হাতে।

এদিনের অনুষ্ঠানে সেই কথার বৃত্ত সম্পূর্ণ করলেন দেব এবং প্রযোজনা সংস্থা এসভিএফের তরফে শ্রীকান্ত মোহতা। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের উপস্থিতিতে টিকিট বিক্রির ৪,০০,১৭৭ টাকা চেকের মাধ্যমে ফেডারেশন সভাপতির হাতে তুলে দিলেন দেব এবং শ্রীকান্ত মোহতা। সব মিলিয়ে জমজমাট সন্ধের পর বলতেই হয়, ফেডারেশন সভাপতি এক সন্ধেয় বুঝিয়ে দিলেন যে তিনি কোনো মহাকাব্যের প্রতিনায়ক হতে আসেননি, এসেছেন আখ্যান-কাব্যের মহানায়ক হতে।

Advertisement