শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকেই ঢাকা এবং ইসলামাবাদের মধ্যে নৈকট্য বেড়েছে। বাণিজ্যিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও মজবুত করতে চাইছে দুই দেশ। সেই লক্ষ্যে প্রায় ২০ বছর পর বৈঠকে বসল বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন। এর আগে ঢাকা এবং ইসলামাবাদের মধ্যে জেইসি স্তরের শেষ বৈঠক হয়েছিল ২০০৫ সালে। সেই সময় বাংলাদেশের মসনদে ছিলেন বিএনপির খালেদা জিয়া। ২০০৯ সালে বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসেন মুজিব কন্যা শেখ হাসিনা। সেই সময় থেকে ঢাকা এবং ইসলামাবাদের মধ্যে সম্পর্কের শীতলতা শুরু হয়।
হাসিনার জমানার দীর্ঘ দেড় দশকে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি বাণিজ্য প্রায় বন্ধই ছিল। চব্বিশে ছাত্রজনতার বিক্ষোভের জেরে ক্ষমতাচ্যুত হন হাসিনা। ৫ আগস্ট দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন তিনি। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হন মুহাম্মদ ইউনূস। এরপর থেকেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে বদল ঘটে। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের শীতলতা কাটতে শুরু করে।
Advertisement
কূটনৈতিক সম্পর্ক মজবুত করতে উদ্যোগ নেয় দুই দেশ। সরাসরি বাণিজ্যও শুরু হয় দু’দেশের মধ্যে। এই পরিস্থিতিতে গত সোমবার ঢাকায় দুই দেশের যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠক হয়। এই বৈঠকের জন্য পাকিস্তান থেকে এসেছেন পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী আলি পারভেজ মালিক। বাংলাদেশের তরফে বৈঠকে ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
Advertisement
সোমবার পাকিস্তানের তরফে বাংলাদেশকে করাচি বন্দর ব্যবহার করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। পাটজাত ও অন্যান্য পণ্য রপ্তানির জন্য করাচি বন্দর ব্যবহার করতে পারবে বাংলাদেশ। শুধু তাই নয়, এই সব পণ্য রপ্তানিতে পাকিস্তান বাংলাদেশের উপর কর কমানোরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে খবর। চলতি বছরের শুরুতেই পাকিস্তান বাংলাদেশ থেকে পাট আমদানির উপর ২ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার করেছিল।
হাসিনা বিদায়ের পর থেকেই পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশ শুধু ঘনিষ্ঠতাই বাড়ায়নি আইএসআই-এর মদতে বাংলাদেশে ইসলামি সেনাও গঠন করা হয়েছে বলে খবর। সেই সঙ্গে শীর্ষ পাক সেনা আধিকারিকদের আনাগোনাও বেড়েছে। মৌলবাদকে উসকানি দিতে ঢাকা সফরে যাচ্ছে কট্টর মৌলবাদী নেতা জাকির নায়েক। তাঁর উপর থেকে ৯ বছরের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে ইউনূস সরকার। সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে পাকিস্তানের দিকে ঝুঁকেছে বাংলাদেশ। যা মোটেই ভালো চোখে দেখছে না ভারত।
সরাসরি ভারতের সঙ্গে এঁটে উঠতে না পেরেই বাংলাদেশকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে পাকিস্তান মত কূটনৈতিক মহলের। মৌলবাদকে অস্ত্র করে উত্তর-পূর্ব ভারতে অস্থিরতা ছড়াতে চাইছে বলেও মনে করা হচ্ছে। গত শনিবার জেনারেল সাহির শামশাদকে একটি বিতর্কিত মানচিত্র উপহার দিয়েছেন মুহাম্মদ ইউনূস। সেই মানচিত্রে ভারতের অসম এবং অন্যান্য উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিকে বাংলাদেশের অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে।
Advertisement



