এক কৃষককে পেটানোর পর তাঁর গায়ের উপর দিয়ে জিপ চালালেন বিজেপি নেতা। ঘটনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ওই কৃষকের। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি মধ্যপ্রদেশের গণেশপুরার। মৃতের নাম রামস্বরূপ ধাকাড, বয়স ৪০। এখানেই শেষ নয়, মৃত কৃষকের স্ত্রী এবং কন্যাকে হেনস্থা করারও অভিযোগ উঠেছে বিজেপি বুথ কমিটির সভাপতি এবং গুনা কিষাণ মোর্চার প্রাক্তন পদাধিকারী মহেন্দ্র নাগারের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপাল থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গণেশপুরা। সেখানকার ছ’বিঘা জমির মালিকানা নিয়ে রামস্বরূপের সঙ্গে বিবাদ ছিল বিজেপি নেতা মহেন্দ্র নাগারের। রবিবার জমিতে চাষ করার সময় রামস্বরূপের উপর হামলা চালায় বেশ কয়েক জন দুষ্কৃতী। ঘটনাস্থলে ছিলেন তাঁর স্ত্রীও। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ১৩ থেকে ১৪ জনের দল রামস্বরূপকে লাঠি ও রড দিয়ে নির্মমভাবে আক্রমণ করে। তারপর তাঁর উপর দিয়ে একটি গাড়ি চালিয়ে দেয়।
Advertisement
রামস্বরূপের স্ত্রী-মেয়েরা তাঁকে বাঁচাতে ছুটে গেলে, তাঁদেরও হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। ওই কৃষকের মেয়েদের গ্রামবাসীদের সামনে টেনে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়। তাঁদের জামাকাপড় ছিঁড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। স্ত্রী, কন্যা সহ রামস্বরূপের পরিবারের চার সদস্য অল্পবিস্তর চোট পান। তাঁরা জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনার কথা জানতে পেরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রামস্বরূপের মৃত্যু হয়।
Advertisement
রামস্বরূপের পরিবারের অভিযোগ, অভিযুক্ত বিজেপি নেতা মহেন্দ্র কম দামে জমি কিনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিজেপি নেতার চাপ সত্ত্বেও তাঁকে জমি বিক্রি করতে রাজি হননি রামস্বরূপ। সেই রাগ থেকেই ওই কৃষককে খুন করা হয়েছে বলে দাবি পরিবারের। মহেন্দ্র নাগার সহ ১৪ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় খুন ও হামলার মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। পুলিশের তরফে আরও জানানো হয়েছে, অভিযুক্ত বিজেপি নেতা আদতে রাজস্থানের বাসিন্দা। মহেন্দ্র এবং তাঁর দলবলের সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
এলাকার এসডিপিও বিবেক আস্থানা সংবাদ সংস্থাকে বলেন, ‘লাঠি, রড, ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয়েছিল। তার পর ওই কৃষকের শরীরের উপর দিয়ে জিপ চালিয়ে দেওয়া হয়।’ প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৩ অক্টোবর লখিমপুর খেরিতে তৎকালীন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির ছেলে আশিস মিশ্রের বিরুদ্ধে গাড়ি চাপা দিয়ে চার কৃষক এবং এক সাংবাদিককে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল।
Advertisement



